আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে মাহিকে তলব

রাজশাহী ব্যুরো
১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৫:৫০
শেয়ার :
আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে মাহিকে তলব

নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে তলব করা হয়েছে চিত্রনায়িকা শারমিন আক্তার নিপা ওরফে মাহিয়া মাহিকে। আজ শুক্রবার রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আবু সাঈদ তাকে তলব করেন। আগামী রবিবার বেলা ১১টায় নিজ কার্যালয়ে মাহিকে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

আদেশে বলা হয়েছে, প্রতীক বরাদ্দের আগেই আচরণবিধি লঙ্ঘন করে রাজশাহী-১ (গাদাগাড়ী-তানোর) আসনের প্রার্থী মাহিয়া মাহি গতকাল বৃহস্পতিবার গোদাগাড়ী উপজেলার চরআষাঢ়িয়াদহ ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক জনসমাগম করে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন এবং ভোট চান। নিজের ফেসবুকেও এই ছবি প্রকাশ করেন তিনি। এই আচরণের মাধ্যমে মাহিয়া মাহি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালা ২০০৮এর বিধি (ঘ) ও বিধি ১২ লঙ্ঘন করেছেন। এ অবস্থায় তার বিরুদ্ধে কেন নির্বাচন কমিশনে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে না- তার ব্যাখা প্রদানের জন্য মাহিকে সশরীরে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চিত্রনায়িকা মাহির গণসংযোগ ও নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে তা আমলে নেন নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। এরপরই তাকে তলব করে ব্যাখা চাওয়া হয়েছে। 

এ আদেশ জারি হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে জানতে মাহিয়া মাহির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে জানান।


এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মাহিয়া মাহি তার সমর্থকদের নিয়ে পদ্মা পাড়ি দিয়ে ওপারে চরআষাঢ়িয়াদহ ইউনিয়নে যান। সেখানে তিনি কয়েক গ্রাম ঘুরে ঘুরে পরিচিত হন ও দোয়া চান। এসময় নারীরা তার মাথায় দিয়ে আর্শিবাদও করেন। জবাবে মাহি চরের মানুষের নানা সমস্যার কথা শোনেন ও সমাধানের আশ্বাস দেন। এর আগের দিন রাতেও মাহি বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে গণসংযোগ করেন। এসময় বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। তাকে বিজয়ী করারও আহ্বান জানান।

তবে এ অভিযোগের বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবারই চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি বলেছিলেন, ‘আমি চরআষাড়িয়াদহ ইউনিয়নে গিয়েছিলাম এটা সত্য। আমাকে এই ইউনিয়নের মানুষ কোনদিন দেখেনি তাই তাদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ ও দোয়া নিতে গিয়েছিলাম। তবে কোনো আচরণবিধি লঙ্ঘন করিনি। আমার তো প্রতীক নাই; তাহলে ভোট চাইবো কীভাবে! আমি এই এলাকার সন্তান সবাই আমাকে দেখবে চিনতে এবং আমি দোয়া চাইবো এটাইতো স্বাভাবিক ব্যাপার।’

উল্লেখ্য, গত সোমবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্রের বৈধতা ফিরে পান ঢাকাই চলচ্চিত্রের অগ্নিকন্যা খ্যাত জনপ্রিয় নায়িকা মাহিয়া মাহি। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এ নায়িকা আপিল করলে শুনানি শেষে তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। 

এর আগে, গত ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীম আহমেদ তার নিজ কার্যালয়ে আসন্ন এ নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করেন। ওই দিন চিত্রনায়িকা মাহির মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে তার মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়। সাধারণত, প্রার্থীদের হলফনামায় প্রদান করা সম্পদের হিসাব, তাদের নামে কোনো মামলা রয়েছে কী না, মামলা থেকে তার সবশেষ অবস্থা, ব্যাংক ঋণ রয়েছে কী না, কর বকেয়া এবং জাতীয় পরিচয়পত্রসহ কয়েকটি বিষয় যাচাই-বাছাই করা হয়। ওই দিন জেলা প্রশাসক মাহির মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণার ব্যাপারে জানিয়েছিলেন, একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে যেসব ভোটারদের নামও স্বাক্ষর দিয়েছেন মাহি, সেগুলো যাচাই-বাছাই করে সঠিক পাওয়া যায়নি। কোনো প্রার্থীর ১০ জনের ভোটার যাচাই করা হয়। কিন্তু তার (মাহি) ক্ষেত্রে তিনজনের তথ্য পাওয়া যায়নি। এরপর মনোনয়নপত্র বৈধতার পক্ষে আপিল করেন মাহি।