গাড়িতে আগুন ও রেলে নাশকতা প্রসঙ্গে যা বলল যুক্তরাষ্ট্র
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে দেশটির মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বাংলাদেশের নির্বাচন বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছে, বাংলাদেশে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় যুক্তরাষ্ট্র। এর অন্যতম একটি শর্ত বা উপাদান হলো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে কোনো ধরনের সহিংসতা ছাড়াই।
স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি পূর্বের মত আবারও এ কথাই জানান।
প্রেস ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক ম্যাথু মিলারকে বলেন, বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনকে ভন্ডুল করতে অবরোধের মধ্যে যাত্রীবাহী বাস-ট্রাকে অগ্নিসংযোগ, প্রত্যক্ষদর্শী বাস হেলপারদের জীবন্ত পুড়িয়ে মারা, রেললাইন উপড়ে ফেলা এবং ট্রেনের বগিতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের মতো নাশকতা সৃষ্টিকারী ঘটনা ঘটছে। যুক্তরাষ্ট্র কি এ ধরনের পদক্ষেপকে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে বলে মনে করে?
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা ধারাবাহিকভাবে বলছি যে, আমরা বাংলাদেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চাই। একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অন্যতম উপাদান বা শর্ত হলো—সহিংসতা ছাড়াই সেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে।’
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
এর আগে, স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারকে জিজ্ঞেস করা হয়, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কোনো খবর আছে কিনা। জবাবে তিনি বলেন, ‘নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞার খবর তার কাছে নেই। তা ছাড়া আরোপ করার আগে নিষেধাজ্ঞার বিষয় প্রকাশ না করা যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের চর্চা।’
এদিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে দাবি করা হয়, বাংলাদেশে আসন্ন ‘ডামি’ নির্বাচন সামনে রেখে শেখ হাসিনার সরকার যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলোর বিরুদ্ধে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে ভুয়া খবর ও ভুয়া ভিডিওসহ সুপরিকল্পিত প্রোপাগান্ডা বা প্রচারণা চালাচ্ছে। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়।
জবাবে পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রচারণায় ডিপ ফেক প্রযুক্তির ব্যবহারের উদ্বেগজনক খবর আমাদের নজরে এসেছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাবিত করতে বিশ্বজুড়ে এআই ব্যবহারের উদ্বেগজনক প্রবণতার অংশ এটি।’
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
অপর এক প্রশ্নে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রের কাছে জানতে চাওয়া হয়, বাংলাদেশে মৌলিক অধিকার রক্ষায় একযোগে কাজ করতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছে ছয়টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। অন্যদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও তার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী দাবি করছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রকেও ‘ম্যানেজ’ করতে পারবেন। সরকার গঠনের পর যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে সমর্থন করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি (পররাষ্ট্রমন্ত্রী)। সে বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?
জবাবে ম্যাথু মিলার বলেন, ‘হাজার হাজার বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার ও কারাগারে নির্যাতনের প্রতিবেদনে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা সব পক্ষকে সংযম প্রদর্শন ও সহিংসতা এড়াতে আহ্বান জানাই। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে সব অংশীদারের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাই, যাতে সবাই সহিংসতা বা প্রতিশোধের ভয় ছাড়াই প্রাক-নির্বাচন এবং নির্বাচনী পরিবেশে অবাধে অংশগ্রহণ করতে পারে।’
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস