‘তোর হাত কেটে নিয়ে যাওয়ার হুকুম আছে এমপি সাহেবের’

নাটোর প্রতিনিধি
১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ২১:৫১
শেয়ার :
‘তোর হাত কেটে নিয়ে যাওয়ার হুকুম আছে এমপি সাহেবের’

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রউফের অফিসে হামলা চালিয়ে তাকে মারধর করা হয়েছে। এ সময় তার হাত কেটে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদ চত্বরের চতুর্থ তলায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কক্ষে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু রাসেল।

নাটোর-৪ (গুরুদাসপুর-বড়াইগ্ৰাম) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী গ্রুপের অনুসারীরা এ হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রউফ বলেন, ‘প্রথমে দুজন ঢোকার পরে জিজ্ঞেস করতেই আরও ১০ জন আমার রুমে ঢুকে পড়ে। কী বলবেন জিজ্ঞাসা করতেই, খপ করে আমার হাত ধরে অশ্রাব্য ভাষায় বলে ‘‘তোর হাত কেটে নিয়ে যাওয়ার হুকুম আছে, এমপি সাহেবের হুকুম আছে। তোর এত বড় সাহস, তুই এমপি সাহেবের হুকুম শুনিস না।’’ কয়েকবার বলেছে, ‘‘এই মেশিনটা বের কর, ওকে একদম শেষ করে দেব।’’ আমার টেবিল তছনছ করে কাগজপত্র ছুড়ে ফেলে দেয় তারা। তখন ক্যালেন্ডার ছুড়ে মারলে আমার মাথায় লাগে। দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে দিয়েছিল; বাইরে থেকেও খুলতে দিচ্ছিল না, ওদের আরও লোকজন বাইরে ছিল। একাধিকবার তারা আমার হাত কেটে নিতে চেয়েছে।’

কেন হামলা করেছে—জানতে চাইলে আব্দুর রউফ বলেন, ‘আমি বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি, ইসলামপুর মালিপাড়া ফাজিল মাদ্রাসার নিয়োগের ব্যাপারে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নাই। তারপরও তারা বারবার বলে তোর হুকুম ছাড়া এ কাজ হয়নি, আজ তোকে শেষ করে দেব, ‘এই মেশিনটা বের কর।’’ এ জন্য কয়েকবার করে হাতও ধরছে।’

কাউকে চিনতে পেরেছেন কি না—জবাবে আব্দুর রউফ বলেন, ‘মুখ দেখল চিনব। কিন্তু কারও নাম জানি না। তবে একাধিকবার তাদের দেখেছি।’

এ বিষয়ে এমপি ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারি বলেন, ‘আমি ঢাকাতে আছি। এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।’

ইউএনও আবু রাসেল বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ চত্বরের চতুর্থ তলায় অবস্থিত মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রউফের অফিস। আজ দুপুরে দুর্বৃত্তরা প্রবেশ করে হামলা চালিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করেছে। বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে আমি পরিষদে গিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তার কক্ষ পরিদর্শন করেছি। পরিষদ চত্বরে প্রবেশ করে একজন সরকারি কর্মকর্তাকে আঘাত করা মানে, আমাকে আঘাত করা।’

ইউএনও আরও বলেন, ‘গোটা পরিষদ চত্বর সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে। ফুটেজ দেখে সকল অপরাধীকে শনাক্ত করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যত বড় ক্ষমতাবান হোক তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।’