পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল রেকর্ড পরিমাণ টাকা
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ৯টি লোহার দানবাক্স ৩ মাস ১৮ দিন পর আজ শনিবার সকালে খোলা হয়। দানবাক্স থেকে মেলে ২৩ বস্তা টাকা। দিনভর গণনার পর দানবাক্স থেকে ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা পাওয়া গেছে, যা অতীতের সকল রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে।
আজ রাত ১০টা ২০ মিনিটের দিকে টাকার এ হিসাব নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মহুয়া মমতাজ। এর আগে, চলতি বছরের ১৯ আগস্ট দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছিল। তখন ৩ মাস ১৩ দিনে ওই দানবাক্সগুলোতে জমা পড়েছিল ২৩ বস্তা টাকা। টাকার পরিমাণ ছিল ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৩২৫ টাকা।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে দানবাক্স কমিটির আহ্বায়ক ও কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মহুয়া মমতাজের তত্ত্বাবধানে সকাল পৌনে ৮টায় দানবাক্সগুলো খোলা হয়। দানবাক্সগুলো খুলে ২৩টি বস্তায় ভরে টাকাগুলো মসজিদের দোতলায় নেওয়া হয় গণনার জন্য। সারা দিনে এগুলো গণনা করে ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা পাওয়া গেছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, ‘টাকাগুলো রূপালী ব্যাংকে জমা করা হয়েছে। টাকার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারও পাওয়া গেছে।’
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মহুয়া মমতাজ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) শেখ জাবের আহমেদ, সহকারী কমিশনার রওশন কবীর, মাহমুদুল হাসান, সামিউল ইসলাম, আজিজা বেগম, মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান, রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলামসহ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষকেরা গণনাকাজ তত্ত্বাবধান করেন।
মসজিদ মাদ্রাসার ১৩৮ জন ছাত্র, রূপালী ব্যাংকের ৬০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলিয়ে মোট ১৯৮ জন মানুষ টাকা গণনার কাজ করেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ২০ জন সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের প্রতি সারা দেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের অন্যরকম আবেগ রয়েছে। এই এলাকার মানুষেরা চান এখানে একটা দৃষ্টিনন্দন মসজিদ কমপ্লেক্স হোক। ১১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণ করতে পরামর্শক নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। নিয়োগ চূড়ান্ত হলেই আমরা মসজিদের ডিজাইনের কাজে হাত দেব। ভবিষ্যতে এখানে দৃষ্টিনন্দন মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মিত হবে।’