সরকার শান্তি বাহিনীর মতো সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে: সেলিমা রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক
০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৫:৪৬
শেয়ার :
সরকার শান্তি বাহিনীর মতো সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে: সেলিমা রহমান

সরকার পরিকল্পিতভাবে সারাদেশে শান্তি বাহিনীর মতো সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান।

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেলিমা রহমান এ অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা কোন দেশে বাস করছি। সরকার পরিকল্পিতভাবে সারাদেশে শান্তি বাহিনীর মতো সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে। আজকে গুম, খুন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার ব্যক্তিরা তাদের কথা বলতে পারে না। মানবাধিকার দিবস সামনে রেখে জাতীয় জাদুঘরের সামনে তাদেরকে (মায়ের ডাক) কর্মসূচি করতে দেয়নি। সরকার এতো ভীতু যে তাদেরকে কর্মসূচি করতে দেয় না।’

তিনি বলেন, ‘আজকে সারাদেশের মানুষ রাজপথে নেমে এসেছেন। একজনের (শাহজাহান ওমর) হ্যাডমের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। জনগণ তাদের হ্যাডম দিয়ে আপনাদেরকে রুখে দিবেন। দেশের মানুষ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমেই তাদের অধিকার পুনরুদ্ধার করবে এবং সরকারের নির্বাচন নির্বাচন নাটক রুখে দিতে হবে। দেশবাসীকে বলব- আসুন আমরা এই সরকারকে না বলে তাদের নাটকের ইতি ঘটাই।’

‘চিকিৎসকদের হয়রানি ও গ্রেপ্তার বন্ধ, বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তি এবং দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিল ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে চিকিৎসকদের এই মানববন্ধনের আয়োজন করে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। মানববন্ধন শেষে প্রেসক্লাব চত্বরে একটি বিক্ষোভ মিছিল করে চিকিৎসকরা।

মানববন্ধনে ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. মেহেদী হাসানের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, জিয়া পরিষদের ডা. আবদুল কুদ্দুস, ড্যাবের সিনিয়র সহসভাপতি ডা. এমএ সেলিম, উপদেষ্টা ডা. রফিকুল কবির লাবু, কোষাধ্যক্ষ ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ -এ্যাবের সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, সিনিয়র সাংবাদিক আমীরুল ইসলাম কাগজী, ডা. শহীদুল আলম, ডা. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল, ডা. মো. শহীদ হাসান, ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন, ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম, ডা. ওবায়দুল কবির খান, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, ডা. শেখ ফরহাদ, ডা. আদনান হাসান মাসুদ, জাহিদুল করিম কচি, নার্সেস এসোসিয়েশনের জাহানারা সিদ্দিকী, ডিইউজের রাশেদুল হক ও সাঈদ খান, ডা. এমএ কামাল, প্রকৌশলী মো. হানিফ, ডা. জাহানারা লাইজু, বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব প্রমুখ।

সেলিমা রহমান বলেন, ‘পুলিশ বেআইনিভাবে দমন পীড়ন ও গ্রেপ্তার করছে। তারা গণতন্ত্রের আন্দোলন রুখে দিতে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিচ্ছে। শান্তি বাহিনীর মতো সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে। আমরা যখনই সমাবেশ দিই তখনই তারা পাল্টা শান্তি সমাবেশ করে। শান্তি বাহিনীর মতো বিএনপি ও বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হানা দিচ্ছে। মনে রাখবেন এটাই শেষ দিন নয়।’

সাইফুল হক বলেন, এই সরকার ২২ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে সারাদেশে গ্রেপ্তার করেছে। সাড়ে ৮ শতাধিক নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছে। এমনকি মৃত ব্যক্তিকেও সাজা দিয়েছে, কী ভয়ংকর পরিস্থিতি! একই মামলায় মির্জা ফখরুলসহ অনেকেই কারাগারেও কিন্তু শাহজাহান ওমরের জামিন মিলে- কী প্রহসন। এতে প্রমাণিত হয় যে, বিরোধী দলকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানির জন্য এসব করা হয়েছে। তবে এবার জনগণের বিজয় সুনিশ্চিত।

জোনায়েদ সাকী বলেন, আজকে মায়েরা রাজপথে নেমে তাদের সন্তান বা স্বামীকে ফিরে পেতে কান্না করছে। এই মায়েদের কান্নার আওয়াজ সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।

অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাবন্দি রেখেছে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অনেক সিনিয়র নেতাকে অন্যায়ভাবে কারাবন্দি করে রেখেছে। আজকে লাখ লাখ মানুষ মানবাধিকার বঞ্চিত। সরকার গুম, খুন করে বন্দুকের নলের মুখে ক্ষমতা জবরদখল করে রেখেছে। আবারও তারা একতরফা নির্বাচনের আয়োজন করেছেন। কিন্তু এবার জনগণ আর ভোটাবিহীন নির্বাচন হতে দিবে না।