গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৩২
শেয়ার :
গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আনা প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৩ সদস্য গাজায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দিয়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাজ্য ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল। 

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের করা খসড়া প্রস্তাবনার ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার এই ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় হামাস ও ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাবাহিনীর মধ্যে চলমান সংঘাত বন্ধে অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতি আহ্বান করে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছিল। ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় মিত্র বলে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্র এই প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে।

নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রস্তাবটি উত্থাপন করে। পরিষদের স্থায়ী ও অস্থায়ী ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৩ সদস্য দেশ প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দেয়। ভেটো দেয় যুক্তরাষ্ট্র এবং ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে যুক্তরাজ্য। 

এর আগে গাজার পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করার জন্য জাতিসংঘ সনদের ৯৯ অনুচ্ছেদ আহ্বান করেন মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এর মাধ্যমে গাজায় চলমান সংকট নিরসনে নিরাপত্তা পরিষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি। তার পরিপ্রেক্ষিতেই নিরাপত্তা পরিষদে বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছিল।

গত ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই সংঘাত বন্ধে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে দেখা গেছে ইসরায়েলের পরম মিত্র যুক্তরাষ্ট্রকে। কিন্তু মুখে সংঘাত বন্ধের কথা বললেও তেল আবিবকে অস্ত্র দিয়ে সহায়তার জেরে বরাবরই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল সেসব তৎপরতা। তবে জাতিসংঘে, ওয়াশিংটনের এমন পদক্ষেপে তুমুল সমালোচনার ঝড় বিশ্বজুড়ে।

জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি রবার্ট উড বলেন, ‌‘৭ অক্টোবর থেকেই শঙ্কটের গঠনমূলক সমাধানের লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমাদের সব সুপারিশ অবজ্ঞা করা হয়েছে। কোনোভাবেই আমরা এগুলো সমর্থন করতে পারি না। এ ছাড়া সন্ত্রাসবাদ থেকে নিজেদের রক্ষার অধিকার ইসরায়েলের রয়েছে। হামাস ৭ অক্টোবর যা ঘটিয়েছে তা কোনো রাষ্ট্র মেনে নিতে পারে না, মানা উচিতও না।’

তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের ফিলিস্তিনের প্রতিনিধি। এর মধ্য দিয়ে লাখ লাখ মানুষের জীবন হুমকির মুখে পরবে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।

গাজা ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদকে অকার্যকর রাখার জন্য কড়া ভাষায় যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করেছে রাশিয়াও। জাতিসংঘে রাশিয়া প্রতিনিধি দিমিত্রি পোলিয়ানস্কি বলেন, দুই মাস ধরে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তারক্ষা এবং ফিলিস্তিনে রক্তপাত বন্ধ করতে পারেনি। এর একমাত্র কারণ যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থান্বেষী-ধ্বংসাত্মক অবস্থান। তারা মিত্রকে রক্ষা করতে যা কিছু করা সম্ভব সবই করছে।