মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের দাবিতে পেশাজীবীদের মানববন্ধন
আগামী ৭ জানুয়ারি এক তরফা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা। তারা বলেন, দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটাধিকার, আইনের শাসন নেই; এসব প্রতিষ্ঠা করতে যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে পেশাজীবী সমাজ প্রস্তুত। তারা আজ রাজপথে নেমেছে। সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা এসব কথা বলেন।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে, শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, কৃষিবিদসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো ভিসি আফম ইউসুফ হায়দার বলেন, ‘দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। দেশে যে নির্বাচন হচ্ছে এটা সমঝোতার নির্বাচন। দেশের অর্থনীতি ধ্বংস প্রায়। চলমান আন্দোলন গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। যারা নতুন ভোটার হয়েছেন ২০১৪ ও ২০১৮ সালে এখন পর্যন্ত ভোট দিতে পারেনি। দেশে অবাধ সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমরের প্রসঙ্গ টেনে পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘দেশের আইনের শাসনের কী অবস্থা। যদি বিরোধী দলে থাকেন তাহলে এক অবস্থা, সরকারি দলে গেলে তখন ভিন্ন অবস্থা। একই মামলায় বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের জামিন পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে না।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘একটি সরকারি ভবন থেকে নির্ধারণ করা হচ্ছে কে কয়টি আসন পাবে-এর নাম নির্বাচন। এখানে জনগণের কোনো মূল্য নেই। কয়েকটি সরকারি ভবন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ছাড়া কারো কোনো মূল্য নেই।’
গণফোরামের (মন্টু) সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের সংজ্ঞা পরিবর্তন করে দিয়েছেন। তার স্থান হিটলারসহ বিশ্বের স্বৈরশাসকদের পাশে হবে।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে জনগণের কোনো আগ্রহ নেই, জনগণ এ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। কী হচ্ছে - এমপি বানিয়ে, বিরোধী দলের নেতা বানিয়ে। এটা তো ফিক্সিং। ক্রিকেট খেলায় ফিক্সিং হয় দেখান না? সাকিব আল হাসান নিষিদ্ধ হয়েছিলেন।’
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদেও মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘আজ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার করে কারাগারে নেওয়া হচ্ছে, নিম্ন আদালত মৃত্যু এবং গুম হওয়া নেতাকর্মীদের সাজা দেওয়া হচ্ছে।’
ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, আইনের শাসন নেই।’
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের অন্যতম নেতা এবং এই মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করা সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীর বলেন, ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্যসচিব কাদের গনি চৌধুরীর পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলী ও সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম সজল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নে (একাংশ) সভাপতি এম আব্দুল্লাহ প্রমুখ।