পূজা-ইমরান জুটির গান শ্রোতারা পছন্দ করে

তারেক আনন্দ
০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
শেয়ার :
পূজা-ইমরান জুটির গান শ্রোতারা পছন্দ করে

জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী বাঁধন সরকার পূজা। সম্প্রতি প্রকাশ হয়েছে তার কণ্ঠে নতুন গান। গান ও সাম্প্রতিক ব্যস্ততা নিয়ে কথা হয় এই শিল্পীর সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- তারেক আনন্দ

ইমরানের সঙ্গে গানের জুটি হিসেবে বেশ কয়েকটি গান উপহার দিয়েছেন শ্রোতাদের। এই জুটিটা কীভাবে গড়ে উঠল?

ইমরানের সঙ্গে আমার পরিচয় সেই ছোটবেলা থেকে। নতুন কুঁড়িতে ছিলাম একসাথে। এরপর ২০০৮ সালে সেরাকণ্ঠে। গান করার আগে থেকেই আমাদের সম্পর্ক। আমাদের প্রথম গান ‘দূরে দূরে’ প্রকাশ হয় ২০১২ সালে। এটিই আমাদের প্রথম মিউজিক ভিডিও। অডিও প্রকাশ হয়েছিল একটি মিক্সড অ্যালবামে।

প্রথম গানই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। এ জন্যই কি পরে একসঙ্গে আপনাদের অনেক কাজ?

এটা ঠিক। প্রথমটা যখন হিট হয়, তখন শ্রোতা, প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সবারই আগ্রহ বেড়ে যায় আমাদের নিয়ে গান করার। এরপর প্রকাশ হয় ‘কেন বারে বারে’, ‘মানে না মন’। এই দুটি গানও জনপ্রিয়। আমাদের দুজনের প্রায় ১৫টি গান প্রকাশ হয়েছে। একেকটা গান ইউটিউবে ৩০-৪০ মিলিয়ন বা তারও বেশি ভিউ।

অডিওতে আপনার জনপ্রিয় গান আছে। সিনেমায় সে সংখ্যায় খুবই কম। কেন?

২০০৮ সালে অডিওতে শুরু হলেও সিনেমায় প্রথম গাই ২০১৪ সালে ‘তারকাঁটা’য়। ‘তারকাঁটা, ‘সত্ত্বা’, ‘কিস্তিমাত’ সিনেমায় গান ছিল। তারকাঁটার মেইন ডুয়েট গান গেয়েছি আরফিন রুমি ভাইয়ের সঙ্গে। ‘আমি তুমি মিলেমিশে হবো একাকার’। কাজ কম অনুযায়ী যে কয়টি গেয়েছি সবগুলোই ভালো গান।

কমের কারণ কী?

যে কোনো শিল্পীই তো সিনেমায় গান করতে চায়। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে যদি সিনেমায় গাইতাম তা হলে সংখ্যায় বাড়ত। ১৪-১৫ সাল থেকে সিনেমায় গান করছি। সিনেমার গানের তো কোনো নিশ্চয়তা নাই। যতখন পর্যন্ত না রিলিজ হচ্ছে তার আগে বলা যায় না। সিনেমাতে গানটা আদৌ যাচ্ছে কিনা। এ রকমও হয়েছে, মুভির জন্য গানটা গেয়ে আসছি, পরে শিল্পী চেঞ্জ হয়েছে। রিলিজ হতেও সময় লাগে।

ফিমেল আর্টিস্ট বেশির কারণে আপনার গান কম বিষয়টা কি এমন?

অডিওর চেয়ে সিনেমার গান তো গুটি কয়েকজন গাচ্ছে। মুভিতেই তো আর্টিস্ট কম।

এই গুটি কয়েকজনই ডাক পাচ্ছে কেন? মেধাবী আরও যারা আছে তারা পাচ্ছে না কেন?

সেটা ডিরেক্টর, প্রডিউসাররা জানে। আমি তো বলতে পারি না। গত বছর ‘সাইকো’, ‘বীরত্ব’ ‘অমানুষ’ সিনেমায় আমার গান ছিল। ‘সাইকো’র টাইটেল ট্র্যাক আমার গাওয়া।

তার মানে গান করছেন। সিনেমার গানে পূজার আলোচনা একটু কম। তাই তো?

হ্যাঁ গান করছি। এটা হতে পারে সিনেমার গান হয়তো প্রচারের আড়ালে থাকে। আমি কিন্তু প্রচার করি আমার দিক থেকে। যেমন ‘সাইকো’র প্রত্যেকটা হলে টিমের সঙ্গে গিয়েছি। ‘নাকফুল’ সিনেমার টাইটেল ট্র্যাকও আমার গাওয়া। আগামী বছর ভ্যালেন্টাইনে রিলিজ হওয়ার কথা। রোশান-আঁচলের একটা সিনেমায় আমি দুটি গান গেয়েছি। এরপর ‘লাইফ ইজ বিউটিফুল’ সিনেমায় আমার একটা গান আছে। এগুলো ধারাবাহিকভাবে মুক্তি পাবে। যে টাইমে আমার ক্যারিয়ার শুরু। তখন অডিও বা মিউজিক ভিডিওতে বেশি সময় দিয়েছি।

এখন তো ওটিটির সময়। ওটিটিতে কাজ করা হয়েছে?

না ওটিটিতে কাজ করা হয়নি এখনো। নাটক বা মুভিতে গান করেছি।

নতুন গান ‘চোখে চোখে’র সাড়া কেমন পাচ্ছেন?

খুবই ভালো সাড়া পাচ্ছি। প্রায় দুই মিলিয়ন ভিউ। আমার আর ইমরান জুটির গান শ্রোতারা অনেক পছন্দ করে। মিউজিক ভিডিও আকারে পাঁচ বছর পর প্রকাশ হলো।

ইমরান-পূজার গান প্রকাশ হলে, শ্রোতারা ধরেই নেন এটা ইমরানের গান। পূজার নয় কেন?

এটা এখন যে যেটা মনে করে। আমি তো শুনি, আপনার ওই গানটা আমার ভালো লেগেছে। ইমরান-পূজার ডুয়েট গানে আমি একই সাড়া পাই। যারা ইমরানের ফ্যান হয়ে শুনছে তারা হয়তো ইমরানের গানই বলবে, আবার আমার যারা ফ্যান তারা পূজা আপুর গান বলে। ইমরানের তো অনেক গান। যেহেতু ওর কাজ বেশি। অবশ্যই আমার থেকে বেশি ওর, এটা অস্বীকার করা যাবে না। সিনেমা, অডিও সব জায়গায় তার বেশি বেশি গান। সিনেমায় যেমন ইমরান-কনা আপুর জুটি। অডিওতে আমার আর ইমরান।

আপনি ভীষণ আড্ডাপ্রিয় মানুষ। এই শহুরে সম্পর্কগুলো কীভাবে দেখেন?

এমনি আমি ওভাবে আড্ডা দিই না। কাজ ছাড়া কারোর সাথে সেভাবে দেখা হয় না। রেকর্ডিং থাকলে আড্ডা হয়। সবার সাথে বন্ধুসুলভ সম্পর্ক আছে। মিডিয়ায় যে কয়জনের সঙ্গে কাজ করা হয়েছে তাদের সাথে ফ্রেন্ডলি সম্পর্ক। আমার ছাড়াও অন্যদের যখন নতুন গান প্রকাশ হয় তখন আমি হ্যাপি হই। আর শহুরে বন্ধুত্ব আমার কাছে যান্ত্রিক মনে হয়। মানুষ যান্ত্রিক হয়ে গেছে, অস্থির হয়ে গেছে। ধৈর্য কম। এক মিনিটে সব পেয়ে যাচ্ছি। অস্থিরতার কারণে বন্ধুত্বটাও সে রকম হয়ে গেছে।

অনেক কথা হলো। আগামী দিনের পরিকল্পনা কী?

আমি সব সময় বেছে বেছে ভালো কাজ করি। সময় নিয়ে কাজ করি। আমার পরিকল্পনা একটাই এমন কিছু গান থাকুক, যখন আমি থাকব না তখনো যেন মানুষ শোনে।