জ্বালাও-পোড়াও বন্ধে নৌকায় ভোট দিন: জয়

অনলাইন ডেস্ক
০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:৫৩
শেয়ার :
জ্বালাও-পোড়াও বন্ধে নৌকায় ভোট দিন: জয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও আওয়ামী লীগের গবেষণা শাখা সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) প্রধান সজীব ওয়াজদ জয় বলেছেন, ‘জামায়াত-বিএনপির ভোটার যত কমতে থাকবে, আমাদের জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস তত কমতে থাকবে। আপনারা যদি প্রতি নির্বাচনে নৌকাকে ভোট দেন, তাহলে এখন যেমন জামায়াত বলে কিছু নাই, ভবিষ্যতে বিএনপি বলেও কিছু থাকবে না। আর সেইদিন বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে।

গতকাল শুক্রবার রাতে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ‘লেটস টক’ অনুষ্ঠানের ৫১তম পর্বে তরুণদের মুখোমুখি হয়ে নিজের ভাবনা তুলে ধরার পাশাপাশি তরুণদের নানা জিজ্ঞাসার উত্তর দেন  জয়।

নির্বাচনের আগে সহিংসতা ভবিষ্যতে ‘স্বাভাবিক ঘটনা’ হয়ে উঠবে কিনা, তা সজীব ওয়াজেদের কাছে জানতে চান এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক।

জবাবে বিএনপি-জামায়াতকে ‘সন্ত্রাসী দল’অ্যাখ্যা দিয়ে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ ধরনের সহিংসতা ও সন্ত্রাস বন্ধে আসন্ন নির্বাচনে তরুণদের নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান সজীব ওয়াজেদ।

তিনি বলেন, ‘গত তিন নির্বাচনে পর্যালোচনা করে দেখেছি। এদেরকে এভাবে যানবাহনে আগুন দিতে একটি শ্রেণি উৎসাহ দিচ্ছে। বিদেশি, বিশেষত ওয়েস্টার্ন কিছু রাষ্ট্রদূত। ঠিক নির্বাচনের আগে তারা অতিরিক্ত কথা বলা শুরু করে। এই যে জামায়াত একটি যুদ্ধাপরাধীদের দল, জঙ্গি দল। তাদেরকে জঙ্গি সন্ত্রাসী বলবে না। এ ক্ষেত্রে মানবাধিকারের কোনো চিহ্ন নেই। বিএনপি আগুন জ্বালাচ্ছে, মানুষ পোড়াচ্ছে। কিন্তু বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল তারা বলবে না। উল্টো আরও স্পেস দিতে হবে, জায়গা দিতে হবে- আরও মানুষ পোড়াও, আরও মানুষ মারো। আমি তরুণদের বলব, তারা যেন বিদেশিদের থেকে সাবধান থাকে। তারা চায় বাংলাদেশ যেন গরিব দেশ হয়ে থাকে। তাদের হুকুম মত চলে।’

 জ্বালাও-পোড়াও বন্ধ করতে হলে তরুণদের ভূমিকা রাখতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে যদি আমরা জ্বালাও-পোড়াও বন্ধ করতে চাই, তাহলে সহজ সমাধান হল বিএনপি-জামায়াতকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করে দেন। সেটা যেহেতু সম্ভব নয়, তাই আরেকটা উপায় আছে। সেটা হল- নৌকাকে ভোট দিন।’

লেটস টক অনুষ্ঠানে এক করুণ প্রশ্ন রাখেন, ১৯৭৭ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিনা বিচারে গণ ফাঁসি দিয়ে তার চাচা এক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে। এর বিচার কি কখনো পাওয়া যাবে না?

উত্তরে দুঃখ প্রকাশ করে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘এটা জিয়াউর রহমানের আমল আমাদের দেশের বিরাট একটা কালো দাগ ছিল। আজকে যারা মানবাধিকারের কথা বলে, তারা এটা বলে না জিয়াউর রহমান এবং বিএনপি তখন কত হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে বিচার ছাড়া। তাদের লাশ পর্যন্ত পাওয়া যায় না আজ পর্যন্ত। এই হল বিএনপি। এটা কী গণতান্ত্রিক দল? না, এটা একটা সন্ত্রাসী দল। এটা একটি খুনিদের দল। জিয়াউর রহমান স্বৈরাচার ছিল, জিয়াউর রহমান খুনি ছিল। আমরা বিচার করার চেষ্টা করছি। এটা একটা কঠিন বিষয়। কারণ, তখন থেকে অনেক রেকর্ডস নাই, তথ্য নেই। তারা তো সব মুছে ফেলেছে। যেভাবেই হোক, তাদের আমরা বিচার করার চেষ্টা করেই যাচ্ছি।’

সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘এখন দেখেন বিএনপি জামায়াতের জঙ্গিবাদ আর দুর্নীতির বিচার করতে গেলেও এখন বিদেশিরা বলছে মানবাধিকার লঙ্ঘন। তাদের বাঁচাতে ব্যস্ত বিদেশিরা। আমি তরুণদেরকে বলব, যারা বিএনপি-জামায়াতকে বাঁচাতে চেষ্টা করছে, তাদের কথা যখনই শুনবেন, প্রতিবাদ করবেন।’

বর্তমানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও টলারেন্স লেভেল কমে যাচ্ছে কিনা, এমন এক প্রশ্নের উত্তরে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় আসার পর টলারেন্স লেভেল বাড়াতে পেরেছি। এর আগে রিলিজিয়াস টলারেন্স বলে কিছু ছিল না। বাংলাদেশ উল্টো পথে যাচ্ছিল। সেক্যুলারিজম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। মৌলবাদী দেশ হবার পথে হাঁটছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি।’

দেশের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে তরুণদের সেতুবন্ধন গড়ে দিতে ২০১৪ সাল থেকে ইয়াংবাংলা ‘লেটস টক’ শিরোনামে এ আয়োজন করে আসছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়েও আয়োজন করা হয় এ অনুষ্ঠান, যেখানে তরুণদের ভাবনার কথা শোনেন সরকারপ্রধান। সেই সঙ্গে তরুণদের নিয়ে নিজের ভাবনার কথাও জানান এ অনুষ্ঠানে।