অপহরণ-উদ্ধারের পর ফের নিখোঁজ, অতঃপর ব্যবসায়ীর লাশ মিলল গাছে

শিবালয় (মানিকগঞ্জ) সংবাদদাতা
৩০ নভেম্বর ২০২৩, ১৬:২৬
শেয়ার :
অপহরণ-উদ্ধারের পর ফের নিখোঁজ, অতঃপর ব্যবসায়ীর লাশ মিলল গাছে

নিখোঁজের দুই দিন পর মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার নির্জন এলাকা থেকে এক ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার বোয়ালী এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। চলতি মাসের শুরুর দিকে অপহরণের শিকারও হয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। পরে হাত–পা বাঁধা অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। 

নিহত ব্যক্তির নাম ইমান আলী (৬৫)। তিনি জেলার ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের সাইলকাই গ্রামের বাসিন্দা। ঘিওর বাজারের পঞ্চরাস্তা মোড় এলাকায় ইমান আলীর একটি হার্ডওয়্যারের দোকান রয়েছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন ইমান আলী। বিভিন্ন স্থানে এবং আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে খোঁজ নিয়েও তার সন্ধান পাননি পরিবারের লোকজন। ঘটনার পরদিন ইমান আলীর স্ত্রী মমতাজ বেগম ঘিওর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিবালয় উপজেলার বোয়ালীর লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে একটি নির্জন স্থান থেকে গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ইমান আলীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের পরিবারের দাবি এটি পরিকল্পিত হত্যা।

শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ নূর-এ আলম বলেন, প্রথমে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে ওই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে খোঁজ পেয়ে স্বজনেরা এসে ওই ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করেন। ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এরপর রাতে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ জেলা সদরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

নিহত ইমান আলীর ছেলে মিলন বলেন, ‘আমার বড় ভাই কামাল হোসেনের কাছে গ্রামের রিপন প্রধান নামের একজন সুদ ব্যবসায়ী দেড় লাখ টাকা পেতেন। সুদে আনা ওই টাকার জন্য তারা বাবাকে প্রায়ই চাপ দিতেন রিপন। গত ৩ নভেম্বর রাত সাড়ে ৭টার দিকে রিপনের কথা বলে অজ্ঞাত তিন যুবক সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে বাবাকে দোকান থেকে ডেকে নিয়ে যান। এরপর আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরদিন রাতে দৌলতপুর উপজেলার ধামসর এলাকায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় রিপনসহ অজ্ঞাতনামা তিনজনকে আসামি করে ঘিওর থানায় মামলা করা হয়। এরপর থেকে আসামিরা মামলা তুলে নিতে হুমকি ধামকি দিতেন।’

নিহত ব্যবসায়ী ইমান আলীর মেঝ ছেলে মামুন মিয়ার দাবি, তার বাবাকে রিপন ও তার সহযোগীরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছেন। তার বাবার হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে রিপনের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর ইসলাম জানান, ইমান আলীকে অপহরণের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়েও থানায় জিডিও হয়েছে। লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অপহরণ মামলার আসামিরা জামিনে আছেন বলেও জানান ওসি।