অভিবাসী কর্মী কোটায় জালিয়াতি তদন্ত করতে টাস্কফোর্সের দাবি

মালয়েশিয়াকিনির প্রতিবেদন

অনলাইন ডেস্ক
২৭ নভেম্বর ২০২৩, ২১:৫০
শেয়ার :
অভিবাসী কর্মী কোটায় জালিয়াতি তদন্ত করতে টাস্কফোর্সের দাবি
ছবি : সংগৃহীত

মালয়েশিয়ায় অভিবাসী কর্মী আমদানির কোটা পেতে জাল চুক্তি করা হয়েছিল এবং এমন প্রতারণার সঙ্গে জড়িত ছিলেন খোদ দেশটির সরকারি কর্মকর্তারাই। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার সংবাদসংস্থা মালয়েশিয়াকিনিতে এমন প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি জটিলতার প্রভাবসহ অভিবাসী পাচার সংকটের মুখে দেশটির মানবাধিকার কমিশন সুহাকামের কমিশনার রঘুনাথ কেসাভান এই কেলেঙ্কারির তদন্তের জন্য একটি উচ্চপর্যায়ের টাস্কফোর্স গঠন করতে সরকারকে অনুরোধ করেছেন।

প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, কীভাবে অভিবাসী কর্মীদের আমদানির কোটা পাওয়ার জন্য অস্তিত্বহীন কোম্পানিগুলোর সঙ্গে মিলিয়ন রিঙ্গিত মূল্যের জাল চুক্তি ব্যবহার করা হয়েছিল। এর মধ্যে একটি চক্র ছয়টি কোম্পানির নামে ১ হাজার ৬২৫ অভিবাসী কর্মী নিয়োগের কোটা পেয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে আরও দেখানো হয়, সরকারের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরও কীভাবে শত শত প্রবাসী কর্মী মালয়েশিয়ায় পৌঁছে, যেখানে তাদের জন্য কোনো চাকরি বা কাজ ছিলই না। অথচ নথিগুলো সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর দূতাবাসে পৌঁছানোর আগে তিনটি মন্ত্রণালয়কে দিয়ে যাচাই করা হয়েছিল, মালয়েশিয়া সরকার এতে অনুমোদনও দিয়েছিল। ফলে নেপালসহ আরও কয়েকটি দূতাবাস কর্মী নেওয়ার বিষয়টি আস্থায় নেয়।

রঘুনাথ কেসাভান মনে করেন, শুধু প্রধান আইন প্রয়োগকারী এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি টাস্ক ফোর্স কার্যকরভাবে অভিবাসী ব্যবস্থাপনায় এ ধরনের দুর্নীতি নির্মূল করতে পারবে।

তিনি বলেন, ‘অভিবাসী ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘদিন ধরেই দুর্নীতি চলছে এবং এটা আরও প্রবল হয়ে উঠছে। চক্রগুলো শ্রমিকদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করছে, কোটা পাওয়ার জন্য নথি জাল করছে, কিন্তু শ্রমিকদের চাকরি দিচ্ছে না। এটা গুরুতর সমস্যা। অনেক নারী-পুরুষ এখানে পাচার করে আনা হচ্ছে এবং আশ্চর্যজনকভাবে সরকারি কর্মকর্তারা এর সঙ্গে জড়িত।’ তিনি বিষয়টি মোকাবিলার জন্য জরুরি উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন।

রঘুনাথ আরও বলেন, ‘সরকারের উচিত জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের মান অনুযায়ী মানবাধিকার সমুন্নত রাখা। কারণ মালয়েশিয়া এই কাউন্সিলের সদস্য।’

এদিকে, দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী ভি শিবকুমার অভিবাসী কোটা নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে বিষয়টি পূর্ণ তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে সুহাকামের কমিশনার রঘুনাথ বলছেন, এই ধরনের তদন্ত করার জন্য মন্ত্রণালয়ের প্রয়োজনীয় সক্ষমতা নেই।

জানা গেছে, মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উভয়ই অভিবাসী কর্মী নিয়োগের বিষয়টি পরিচালনা করে। রঘুনাথ বলেন, ‘অভিবাসী আবেদন প্রক্রিয়ার মধ্যে আমলাতন্ত্র শুধু দুর্নীতির ক্ষেত্র তৈরি করে। এর ফলে অসাধু ব্যক্তি ও সিন্ডিকেট আর্থিকভাবে লাভবান হয় এবং শোষণ করতে পারে। অভিবাসী সংকট সমাধানের জন্য শুধু মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাছে দায়িত্ব অর্পণ করাও সম্ভব না কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে। মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষে কার্যকরভাবে এই দুর্নীতি তদন্ত করা একটি চ্যালেঞ্জ হবে।’