প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো গানের টাকা নাটকে ইনভেস্ট করছে

বিনোদন সময় প্রতিবেদক
২৭ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০
শেয়ার :
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো গানের টাকা নাটকে ইনভেস্ট করছে

জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কাজী শুভ। সম্প্রতি প্রকাশ হয়েছে তার কণ্ঠে বেশকিছু গান। নতুন গান ও সংগীত ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে অনেক কথা বলেছেন প্রাণ খুলে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তারেক আনন্দ

কাছাকাছি সময়ে প্রকাশ হলো আপনার কণ্ঠে তিনটি গান। শ্রোতারা আপনার কাছে যে ধরনের গান শুনতে চায়, এ গানগুলো কি সেই প্রত্যাশা পূরণ করবে বলে মনে করেন?

আমি সব সময় মাটির গান করি। ‘মন কান্দে তোমার লাগিয়া’ গানটি ফোক গান। আমার যারা শ্রোতা আছে তাদের কাছে ভালো লাগবে। সুন্দর একটি মিউজিক ভিডিও আকারে প্রকাশ হয়েছে। এটি প্রকাশ করেছে এম আর বেস্ট মিডিয়া ইউটিউব চ্যানেল থেকে। এ ছাড়া প্রকাশ হয়েছে সম্প্রতি আরও দুটি গান। ‘নারীর ছল’ গানটি প্রকাশ করেছি আমার নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল ‘কাজী শুভ’ থেকে। অন্যটি নাটকের গান ‘প্রেমের নৌকা’ প্রকাশ হয়েছে সুলতান এন্টারটেইনমেন্ট থেকে। এ গানগুলোও শ্রোতাদের ভালো লাগবে।

কয়েক বছর আগেও বছরে শতাধিক গান প্রকাশ হয়েছে আপনার কণ্ঠে। হঠাৎ বদলে গেল সংগীতাঙ্গন। এই বদলে যাওয়টা কীভাবে দেখছেন?

ইন্ডাস্ট্রি বদলে যাওয়ার কারণ আমরা কমবেশি সবাই জানি। বড় কোম্পানি যারা আছে তারা নিয়মিত গান প্রকাশ করত। এখন আর তারা গান প্রকাশ করছে না। অথচ তারা গান প্রকাশে মরিয়া হয়ে থাকত। তারা এখন নাটকের দিকে ঝুঁকে গিয়েছে। সবাই বলে রেভিনিউ কমে গেছে, রেভিনিউ কমে গেছে। আমি নিজেও ইউটিউব চ্যানেল থেকে গান প্রকাশ করছি। অনেক শিল্পীই নিজের চ্যানেল থেকে গান প্রকাশ করছেন। আমার চ্যানেলে খুব বেশি কনটেন্ট নেই। তার পরও বলব গানের ইনকাম সোর্স কিন্তু বেশি। একটা নাটক মানুষ একবার দেখে। গান যদি ভালো লাগে তা হলে বারবার শোনে। অনেকগুলো প্ল্যাটফরম থেকে গানের ইনকাম বাড়ানো যায়। আমার মনে হয় যেসব বড় কোম্পানি আছে। তাদের সংগঠন আছে এমআইবি। সবাই মিলে যদি উদ্যোগ নেয়, তা হলে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিকে আবার ফেরানো সম্ভব। গান সব সময় থাকবে, ভালো গান মানুষ শুনবেই।

অনেক আশার কথা বললেন। সত্যিই কি অডিও ইন্ডাস্ট্রি আগের মতো ফিরে আসবে?

বিচ্ছিন্নভাবে গান হচ্ছে। কিন্তু মূল প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো গানে ভালোভাবে ফিরে আসা উচিত। হয়তোবা সামনে আসবে। আরেকটা বিষয় আমার কাছে খুব দুঃখজনক মনে হয়, আজকে যে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান নাটকে ইনভেস্ট করছে এগুলো কিন্তু গান থেকে ইনকাম করা টাকায়। তাই গানের ব্যাপারে তাদের অবশ্যই যত্নশীল হওয়া উচিত। সব সময় তো একরকম পরিবেশ থাকে না। তাই বলে তারা গান থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, এটা দুঃখজনক।

তা হলে বলব গানের জগতে ঘোর অন্ধকার?

অন্ধকার কেন হবে? আমরা অবশ্যই আশাবাদী থাকব, গান সারাজীবন মানুষ শুনবে। গানের কোনো বিকল্প নেই। নাটক এক ঘণ্টার বিনোদন, একটা গান ভালো লাগলে সারাজীবন মানুষ শোনে। এখন আমরা প্রমাণই পাচ্ছি যে, মাঝখানে কিছু সিনেমার গান হিট হলো। সবাই শুনছে। সব মাধ্যমে বাজছে। গানের বিষয়ে কখনো হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এখন কোম্পানিগুলো অতিরিক্ত লাভের আশায় নাটক নির্মাণ করছে, তাই বলে গান বন্ধ হবে এমন কোনো কথা নেই।

কোম্পানি যখন হাতগুটিয়ে নিল শিল্পীরা তখন নিজের ইউটিউব চ্যানেল থেকে গান প্রকাশ করছে। এটাকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

শিল্পীরা ইউটিব চ্যানেল থেকে গান প্রকাশ করছে এটা অবশ্যই ভালো দিক। অবশ্যই প্রত্যেকের নিজস্ব প্ল্যাটফরম থাকা উচিত। বাইরের দেশের বড় বড় তারকা নিজের ইউটিউব চ্যানেল থেকে গান প্রকাশ করে থাকেন। শিল্পীরা গান প্রকাশ করলে মানুষ ভালো ভালো গান উপহার পাবে।

আপনার আগামী দিনের পরিকল্পনার কথা জানতে চাই।

পরিকল্পনা বলতে নিজস্ব প্ল্যাটফরম তৈরি করছি। অনেক কোম্পানির সঙ্গে কাজ হচ্ছে, সামনেও হবে। পাশাপাশি নিজস্ব প্ল্যাটফরম থাকা উচিত। এটা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও একটা সময় বড় কিছু হয়ে দাঁড়াবে বলে আশা করি।