বিশেষজ্ঞ যা বলেন

ডা. মেখলা সরকার
২৬ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০
শেয়ার :
বিশেষজ্ঞ যা বলেন

এ প্রসঙ্গে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাইকিয়াট্রিস্ট ডা. মেখলা সরকার বলেন, সহিংস শাসন শিশুর শারীরিক ও মানসিক- দুধরনেরই ক্ষতি করতে পারে। শারীরিক সহিংসতা বলতে আমরা যেটি বুঝি, সেটি হলো শাসনের নামে শিশুকে শারীরিকভাবে আঘাত করা। আর যেটি মানসিক সহিংসতা, সেটি হচ্ছে শিশুকে সব সময় কঠিনভাবে কথা শোনানো। তাকে অন্যদের সঙ্গে তুলনা করাÑ ও পারে, তুমি পারো না কেন? তার ঘাটতি নিয়ে সব সময় তাকে কটাক্ষ করা, তাকে বুলিং ইত্যাদি। এ দুটিকেই আমরা সহিংস শাসন বলে থাকি। এ দুধরনের শাসনই শিশুর বিকাশের অন্তরায়। শিশু ভুল করতে পারে, অনেক কিছুই করতে নাও পারে। সবাই তো সব পারে না। তখন শাসনের নামে তার প্রতি সহিংস আচরণ তার আত্মবিশ^াসকে ভেঙে দিতে পারে। তার মধ্যে হীনম্মন্যতা তৈরি হয়। তার সৃষ্টিশীলতা কমে যায়। নতুন কিছু করার ঝুঁকি নিতে সে দ্বিধাবোধ করে। আরেকটি বিষয় হলো, শিশুরা দেখে দেখে শেখে। যে পরিবারের মা-বাবা নিজেদের মধ্যে ঝগড়া ও সহিংস আচরণ করে, ওই পরিবারের শিশুরাও সেটিই শেখে। সে তখন তার আশপাশের মানুষের সঙ্গে সহিংস আচরণ করে। তখন সে কোনো কারণে রাগ হলে সেটি প্রকাশ করতে পারে না। এর প্রভাব পড়ে তার আচরণে। এ ধরনের শিশুদের মধ্যে অ্যাংজাইটি দেখা যায়। তারা বিষণ্নতায় আক্রান্ত হয়। এতে তার পড়াশোনায় মনোযোগ কমে যায়। পরে সে আর এই ঘাটতি পূরণ করতে পারে না। পরীক্ষার সময়ও অ্যাংজাইটির কারণে সে মনোযোগী হতে পারে না, কিছু মনে রাখতে পারে না। এটি থেকে শিশুর দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে। আর শারীরিক আঘাতে সবচেয়ে বড় আশঙ্কা হচ্ছে, শিশুর কোথাও কেটে-ফেটে বা ভেঙে যেতে পারে। শরীরের কোনো অঙ্গের ক্ষতি হতে পারেÑ যা তাকে সারাজীবনের জন্য পঙ্গুও করতে পারে। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে মানসিক আঘাতটি খুব বেশি প্রভাব ফেলে।

যে কোনো ধরনের নির্যাতন শিশু অধিকারের লঙ্ঘন এবং তা শিশুর মানসিক ও শারীরিক- দুটির জন্যই ক্ষতিকর।

মানসিকরোগ বিশেষজ্ঞ

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা