কোনো বাধাই দমাতে পারেনি জান্নাতুলকে

পূর্বা জান্নাত
২৬ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০
শেয়ার :
কোনো বাধাই দমাতে পারেনি জান্নাতুলকে

কিছুদিন আগে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিতে প্রকাশিত বিশ্বের প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় এবার স্থান করে নিয়েছেন বাংলাদেশের জান্নাতুল ফেরদৌস আইভি। ‘ভয়েস অ্যান্ড ভিউস’ নামে একটি মানবাধিকার সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা আইভি একই সঙ্গে চিত্রনির্মাতা, লেখক ও অধিকারকর্মী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন সফলভাবে। এ পর্যন্ত ৫টি শর্ট ফিল্ম নির্মাণ করেছেন আইভি। এ ছাড়া তার লেখা ৩টি উপন্যাসও ইতোমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। তিনি তার গল্প বলার সহজাত দক্ষতা কাজে লাগিয়ে চারপাশের মানুষের মধ্যে শারীরিকভাবে বিকলাঙ্গ সব মানুষের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করেন। ১৯৯৭ সালের ৩০ এপ্রিল স্নাতক শ্রেণির ছাত্রী থাকা অবস্থায় রান্না করার সময় হাফ সিল্কের শাড়ি দিয়ে বানানো সালোয়ার-কামিজের ওড়নায় আগুন লেগে দুই হাত, গলা, মুখশহ শরীরের ৬০ শতাংশ পুড়ে যায় আইভির। দীর্ঘদিন ঢাকার মগবাজারে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ওই সময় কেবল গলাতেই ১৭টি অপারেশন হয়েছে। ঘাড়ে নতুন চামড়া লাগানো হয়। সেটি অ্যাডজাস্ট না করায় আবার অপারেশন করে লাগানো হয়েছে। এভাবে মোট ৫১টি সার্জারির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তাকে।

এতকিছুর পরও কোনোভাবেই দমে যাননি আইভি। এর ভেতরই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বেসরকারি ব্যবস্থায় ডিগ্রি পরীক্ষা দেন। তার পর ইডেন কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্যে মাস্টার্স শেষ করেন তিনি। এর পর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজে আরেকটি মাস্টার্স করেন। এ ছাড়া তানভীর মোকাম্মেলের ফিল্ম অ্যাপ্রিসিয়েশন কোর্স করেছেন। শেষ করেছেন সিনেমার ওপর ডেইলি স্টারের চার মাসের সেলিব্রেটিং লাইফ কোর্সও। বিভিন্ন সময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা কর্মশালা ও সেমিনারে অংশ নিয়েছেন তিনি। ২০০৫ সালে মাস্টার্স রেজাল্টের পর একটি ব্রিটিশ এনজিওতে চাকরি শুরু করেন আইভি। সেখানেই একটি এনজিওর বিভিন্ন পর্যায়ের কাজ শিখেছেন। ন্যাশনাল কাউন্সিল অব ডিসঅ্যাবলড উইমেন (এসসিডিডব্লিউ), হ্যান্ডিক্যাপ ইন্টারন্যাশনাল এবং সিবিএম ইন্টারন্যাশনালের মতো সংস্থাগুলোর সঙ্গেও কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। তিনি কাজ করেছেন ইনক্লুশন ব্যবস্থাপক হিসেবে। ২০১০ সালের দিকে চাকরি ছেড়ে নিজের প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করা শুরু করেন আইভি।