জনস্বাস্থ্য রক্ষায় ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা জরুরি

অনলাইন ডেস্ক
২৫ নভেম্বর ২০২৩, ১৯:৫৫
শেয়ার :
জনস্বাস্থ্য রক্ষায় ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা জরুরি

‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন’-এর সংশোধনী প্রস্তাবে ই-সিগারেটের প্রচার, প্রসার, আমদানি, রপ্তানি, পরিবেশন, বিপণন নিষিদ্ধের প্রস্তাব দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এরপর কয়েকটি বহুজাতিক সিগারেট কোম্পানি বিভিন্ন উপায়ে দেশে অত্যন্ত ক্ষতিকর এ পণ্যের প্রচারে নতুন নতুন পন্থা অবলম্বন করছে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ই-সিগারেট উৎপাদন ও প্রসারে সিগারেট কোম্পানির উদ্যোগ জনস্বাস্থ্যের জন্য চরম সংকটের কারণ হতে পারে।

আজ শনিবার বিকেল ৩টায় ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ তামাক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত ২২টি সংগঠন যৌথভাবে ‘ই-সিগারেট/ভেপিং জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি : নিষিদ্ধ জরুরি’ শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বিদেশি সিগারেট কোম্পানি বিএটি সম্প্রতি বাংলাদেশে ভোক্তাদের আধুনিক জীবনধারার কথা উল্লেখ করে নতুন কিছু আর্ন্তজাতিক মানের পণ্যের আমদানি করার অনুমতি চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি দিয়েছে। চিঠিতে তারা এ ধরনের পণ্যের চাহিদা নিরুপণে দেশের বাজারে এসকল পণ্য বিক্রয় করবে এবং পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে এ পণ্যের উৎপাদন, পরিবেশন, বিপণন ও রপ্তানি করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছে। তাদের এ ধরনের প্রচেষ্টা দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। গণমানুষের কথা চিন্তা করে অতিদ্রুত ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করতে হবে।

সিগারেট কোম্পানির মিথ্যাচার নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির সভাপতি বিশিষ্ট ক্যানসার বিষেশজ্ঞ ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, কম ক্ষতিকর টার্ম ব্যবহার করে তামাক কোম্পানিগুলো তরুণ-যুবক এবং ধূমপায়ীদের ই-সিগারেটে আকৃষ্ট করছে। ই-সিগারেট কম ক্ষতিকর নয়, বরং খুবই ক্ষতিকর একটি পণ্য। ই-সিগারেটের ব্যবহার ও বাজার সম্প্রসারণের জন্য কোম্পানিগুলো ভ্যাপিং উৎসবের আয়োজন করছে, যা যুব সমাজ নতুন ভাবে অবক্ষয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। একইসঙ্গে বিশ্বব্যাপী এর স্বপক্ষে বিভিন্ন মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের এপিডেমোলজি বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়ায় ই-সিগারেট বন্ধের সুপারিশ করেছে। দেশের প্রায় ১৫০ জনের বেশি সংসদ সদস্য ই-সিগারেট বন্ধের সুপারিশ করেছে এবং সরকার তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত ই-সিগারেটের প্রচার ও প্রসার খুব বেশি বৃদ্ধি পায়নি। এমতাবস্থায় এখনই ই-সিগারেটের লাগাম টেনে না ধরলে পরবর্তীতে আইন করেও একে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। তামাক কোম্পানিগুলো ইতিমধ্যেই ই-সিগারেট কম ক্ষতিকর এবং এটি ধূমপান ছাড়তে সহায়ক হিসেবে তাদের মিথ্যা প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মানস’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. অরুপ রতন চৌধূরী। উপস্থাপনা করেন টিসিআরসির প্রোগ্রাম অফিসার ফারহানা জামান লিজা। 

এ সময় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা আহসানিয়া মিশনের পরিচালক (হেলথ এন্ড ওয়াস) ইকবাল মাসুদ, প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, এইড ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক শাগুফতা সুলতানা, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী, ডাসের উপদেষ্টা আমিনুল ইসলাম বকুল প্রমুখ। আজকের সংবাদ সম্মেলনটি ২২টি সংগঠন আয়োজন করে।