পল্লবীতে যুবদল নেতা কিবরিয়া হত্যা মামলায় ২ জন রিমান্ডে
রাজধানীর পল্লবী থানা যুবদলের সদস্যসচিব গোলাম কিবরিয়াকে গুলি করে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দুজনকে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র এই রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন।
রিমান্ড যাওয়া আসামিরা হলেন, সোহেল ওরফে পাতা সোহেল ওরফে মো. মনির হোসেন (৩০) ও মো. সুজন ওরফে বুকপোড়া সুজন (৩৫)।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, পল্লবী থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ হানিফ আসামিদের আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামিরা পূর্বশত্রুতার জের ধরে পরস্পর যোগসাজশে একই উদ্দেশ্যে পিস্তল দিয়ে একাধিক গুলি করে গোলাম কিবরিয়াকে (৫০) হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়। মামলাটি একটি নৃশংস খুনের ঘটনার মামলা, যা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। মামলার ঘটনার সাথে আসামিরা জড়িত থাকার বিষয়ে সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন আছে। মামলার ঘটনায় জড়িত অপরাপর আসামিদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ, গ্রেপ্তার, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারসহ প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে তাদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে সাত দিনের জিজ্ঞেসাবাদ করা একান্ত প্রয়োজন।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
আসামি পক্ষের আইনজীবী মো. রানা শেখ রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করে, রাষ্ট্রপক্ষ প্রসিকিউটর জামাল উদ্দিন বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের আদালত প্রত্যেকের চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
গত ১৮ নভেম্বর রাতে সাভার থানাধীন বিরোলিয়া এলাকা থেকে পাতা সোহেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই রাতে জিএমপির টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন মাজারবস্তি এলাকা থেকে সুজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৪। গ্রেপ্তার দুজনের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব জানিয়েছে, রাজনৈতিক কোন্দল ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গোলাম কিবরিয়া মাঝেমধ্যে পল্লবী থানাধীন বিক্রমপুর হার্ডওয়্যার অ্যান্ড স্যানিটারি দোকানে বসে তার বন্ধু মাসুদ রানা সঙ্গে কথা বলেন। গত ১৭ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬ টার ৪২ এর দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গুলি করে আসামি মো. জনি ভূঁইয়া, সোহাগ কালু, রোকন। হত্যার পরিকল্পনা ও নির্দেশনা দেন আসামি সোহেল ও মাসুম। আসামিরা ভুক্তভোগীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি গুলি করে। গুরুতর রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে হাসপাতাল নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
সন্ত্রাসীরা পালানোর সময় স্থানীয় জনতার ওপর গুলিবর্ষণ করলে এক রিকশাচালক গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। ওই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী সাবিহা আক্তার দিনা পল্লবী থানায় হত্যা মামলাটি দায়ের করে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া দোকানের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, কিবরিয়া দোকানে ঢোকার দুই তিন সেকেন্ডের মধ্যে কয়েকজন দুর্বৃত্ত দোকানে ঢুকে তাকে গুলি করতে শুরু করে। দুর্বৃত্তদের একজনের পরনে পাঞ্জাবি ও দুজনের গায়ে শার্ট ছিল। প্রত্যেকের মাথায় হেলমেট ও মুখে মুখোশ ছিল। এ সময় দোকানে নয়জন ছিলেন। দুর্বৃত্তদের একজন কিবরিয়াকে গুলি করতে শুরু করলে ভয়ে দোকান থেকে আগের লোকজন বেরিয়ে যান। সময় কিবরিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাদের একজন আরও তিনটি গুলি করে দ্রুত বেরিয়ে যায়।
আমাদের সময়/জেআই
আরও পড়ুন:
মৌচাকের গোল্ডেন প্লাজায় অগ্নিকাণ্ড