তারেক রহমানের ৬১তম জন্মদিন আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:২০
শেয়ার :
তারেক রহমানের ৬১তম জন্মদিন আজ

আজ ২০ নভেম্বর, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৬১তম জন্মদিন। ১৯৬৫ সালের এই দিনে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দুই ছেলে তারেক রহমান ও প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকো। তারেক রহমান তাঁদের বড় সন্তান। আদর করে মা খালেদা জিয়া ডাকেন পিনো। দলের এই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে ঘিরে নতুন স্বপ্ন বুনছেন বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।

নেতাকর্মীরা বলছেন, তারেক রহমানের আগামী জন্মদিন আসার আগে তার জীবনে ঘটতে পারে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। এই নির্বাচনে পিতৃভূমি বগুড়া-৬ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়বেন তারেক রহমান। নেতাকর্মীদের আশা, তারেক রহমান প্রথমবারের মতো বিপুল ভোটে এমপি নির্বাচিত হবেন। তার নেতৃত্বে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন নিয়ে বিএনপি জাতীয় সংসদে যাবে এবং সরকার গঠন করবে। সেক্ষেত্রে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন

তিনি। একই সঙ্গে নির্বাচনের পর দলের ৭ম জাতীয় কাউন্সিল করার কথা রয়েছে। সব ঠিক থাকলে কাউন্সিলররা তারেক রহমানকেই দলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেবেন। এমনটা হলে প্রথমবারের মতো তিনি বিএনপির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন। কারণ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে অসুস্থ। তার স্থলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে তারেক রহমান বিএনপিকে পরিচালনা করছেন। বেগম খালেদা জিয়াও এমনটা চান বলে নেতাকর্মীরা জানান।

তবে তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী তার জন্মদিন পালনে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান বা উৎসব না করতে দলীয় নেতাকর্মীদের জানিয়েছে বিএনপি। গত মঙ্গলবার দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশনার কথা গণমাধ্যমকে জানান। এতে বলা হয়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা, পোস্টার-ব্যানার লাগানো ও আলোচনা সভাসহ কোনো ধরনের আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠান বা উৎসব পালন করা যাবে না। ঢাকাসহ দেশব্যাপী দলের সব ইউনিটের নেতাকর্মীদের দলীয় এই নির্দেশনা মেনে চলার জন্য আহ্বান জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

তারেক রহমান ১৯৮৮ সালে বগুড়া গাবতলী উপজেলা বিএনপির প্রাথমিক সদস্য হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। যদিও তার আগেই দলীয় রাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি। পর্যায়ক্রমে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এবং বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারেক রহমান মায়ের পাশে থেকে সারাদেশে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন। দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, ৯১ থেকে যত জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিয়েছে, প্রতিটিতে ছিল তারেক রহমানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বিগত দিনে প্রতিটি আন্দোলনেও ছিল তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে তার ভূমিকা সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। একজন বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ, দক্ষ সংগঠক ও দেশপ্রেমিক জাতীয়তাবাদী ঐক্যের প্রতীক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন তিনি।

জানা গেছে, ২০০২ সালে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্মপ্রাপ্ত হন তারেক রহমান। বিএনপি নেতারা বলেন, ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনের ভূমিধস বিজয়ের নেপথ্যে ছিলেন তিনি। এরপর দলের সিদ্ধান্তে তাকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব পদের জন্য নির্বাচিত করা হয়। তখন থেকেই দেশি-বিদেশি চক্র তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে। ওয়ান ইলেভেনে ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হয়। তখন তাকে গ্রেপ্তার করে হত্যার উদ্দেশ্যে নানা নির্যাতন করা হয়। আদালতের নির্দেশে ২০০৮ সালে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে লন্ডনে নেওয়া হয়। সেই থেকে তিনি সপরিবারে সেখানে অবস্থান করছেন।

পরে ২০০৯ সালে বিএনপির পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিল এবং ২০১৬ সালে ষষ্ঠ কাউন্সিলে তারেক রহমানকে দলের সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসনকে ভিত্তিহীন মামলায় শেখ হাসিনার সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আদালত সাজা দিয়ে রায় ঘোষণা এবং গ্রেপ্তার করে কারাগারে নেওয়ার পর থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তারেক রহমান। যুক্তরাজ্য থেকেই ভার্চুয়ালি দলের কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে নেতাকর্মীদের দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন তিনি। আগামী মাসে তারেক রহমান দেশে ফিরতে পারেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।

তথ্যচিত্র ‘সংকট সংগ্রামে সাফল্য’ মুক্তি পাবে আজ

তারেক রহমানকে নিয়ে ‘সংকট সংগ্রামে সাফল্য’ শীর্ষক একটি তথ্যচিত্র আজ বৃহস্পতিবার মুক্তি পাবে। আয়োজকদের পক্ষ থেকে গতকাল পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তারেক রহমানের বর্ণাঢ্য জীবনের নানা দিক নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামতসহ স্টুডিওভিত্তিক আলোচনা তথ্যচিত্রটিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রেসসচিব আশিক ইসলামের সার্বিক তত্ত্বাবধানে নির্মিত তথ্যচিত্রটি অনলাইনে মুক্তি দেওয়া হবে। এতে রাজনীতিবিদ, শিক্ষক, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী, আইনজীবী, বিচারপতি, শিল্পী, মানবাধিকারকর্মীসহ বিভিন্ন অঙ্গনের খ্যাতিমান ব্যক্তিরা তারেক রহমানের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের নানামুখী ভাবনা-ধারণার ওপর গুরুত্বপূর্ণ মতামত দিয়েছেন। পাশাপাশি দেশের গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তার সংগ্রামের কথা তুলে ধরা হয়েছে।