ঋতু পরিবর্তনে শিশুর যত্ন

নিশাত তানিয়া
১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:২৩
শেয়ার :
ঋতু পরিবর্তনে শিশুর যত্ন

প্রকৃতিতে বইতে শুরু করেছে ঠাণ্ডা হাওয়া। ঋতু পরিবর্তনের সময় বাড়ির শিশুটির দিকে বাড়তি খেয়াল রাখা জরুরি। দুরন্ত উজ্জ্বল শিশুটির খেয়াল রাখা একটু কঠিনই হয়ে পড়ে। অসাবধানতায় শিশুর জন্য বড় কোনো ক্ষতির কারণ হতে পারে। এছাড়া ডেঙ্গু, করোনার মৌসুমও চলছে পাল্লা দিয়ে। তাই যে কোনো অসুস্থতা থেকে শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে সতর্কতার বিকল্প নেই। এ শীতে বাড়তি যত্ন ও ভালোবাসায় বাড়ির শিশুটিকে আগলে রাখুন, নিরাপদে রাখুন।

আবহাওয়া বুঝে পোশাক

শীতের ছোঁয়া এখন পাওয়া যাচ্ছে প্রকৃতিতে। তবে রাত আর ভোরের দিকে হালকা শীতের বাতাসের রেশ বয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়ার এই পরিবর্তন বুঝে শিশুকে পোশাক পরান। শীতের ভারী কাপড় পরিয়ে শিশুর ঘাম ঝরাবেন না। এতেও শিশুর ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে। দিনে ও রাতের তাপমাত্রা বুঝে শিশুকে পোশাক পরান। রাতে শোয়ার সময় আরামদায়ক পোশাক পরাতে হবে।

প্রতিদিন গোসল

শিশুর গোসলের সময়সূচি ঠিক রাখতে হবে। প্রতিদিন একই সময়ে গোসল করলে ভালো এবং অবশ্যই তা সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টার মধ্যে। গোসলের সময় শরীরে যেন ঘাম না থাকে তা লক্ষ্য রাখতে হবে। পরিবেশ একটু ঠাণ্ডা হলেও প্রতিদিন গোসল করানোই ভালো। সে ক্ষেত্রে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে হবে।

ত্বকের যত্ন

শীতের শুরুর সময়টাতে শিশুর ত্বক খসখসে হয়ে যায়। তাই গোসলের পর শিশুর শরীর ও মুখে ভালোমানের বডিলোশন ও ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে দিন। যেহেতু এখন দিনের বেলায় হালকা গরমও পড়ছে তাই ঘাম আটকে শিশুর বগলের নিচে, কুচকিতে ফাঙ্গাল ইনফেকশন দেখা দিতে পারে। এসব সমস্যা থেকে শিশুকে দূরে রাখতে হাত-মুখ ধোয়ার পর শিশুর ত্বকে বেবিলোশন লাগিয়ে দিন। শিশুর ত্বক নরম ও কোমল রাখতে অলিভ অয়েলও উপকারী। এ ছাড়া গোসলের সময় শিশুর বগল, গলার নিচের জায়গাগুলো পরিষ্কার করে দিতে হবে।

বুঝেশুনে ফ্যানের বাতাস

অবশ্যই আবহাওয়ার পরিবর্তন বুঝে শিশুর যত্ন নিতে হবে। এখন দিন ও রাতের কখনও একদম গরম তো কখনও হালকা শীতের পরশ। দিন ও রাতের যে সময়ে গরম অনুভূত হয়, তখন বেশি গতিতে ফ্যান চালানো যাবে না, শেষ রাতের দিকে ফ্যান বন্ধ করে রাখুন। অনেক সময় শুধু ফ্যানের বাতাসের কারণেও শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। সে ক্ষেত্রে কিছু ঘুমালে গায়ে পাতলা চাদর বা কাঁথা দিয়ে রাখুন।

খাবার-দাবার

ঋতু পরিবর্তনে শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয় বেশি, তাই এ সময় শিশুকে ভাজাপোড়া খাবার, বাসি কেক, পেস্টি, দোকানের জুস থেকে দূরে রাখুন।

শিশুর খাদ্যতালিকায় সুষম খাবার রাখতে হবে। ডিম, দুধ, শাকসবজি, ফলমূল ও মাছ-মাংস সবই নিয়ম করে খাওয়াতে হবে। কোনো খাবার খেতে না চাইলে বিকল্প পদ্ধতিতে রান্না করে খাওয়াতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করাতে হবে। খেলাধুলা বা পরিশ্রমের পর ফলের রস খাওয়াতে পারেন।

মশার কামড় থেকে দূরে

ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়ার হাত থেকে বাঁচতে বিশেষ করে ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করুন। সেটি দিন কিংবা রাত যখনই হোক। সন্ধ্যার ঠিক আগে ঘরের বাতি জ্বালিয়ে দিন, অন্ধকার রাখলে এ সময়টা মশা বেশি আসে এবং বাইরের মশা যাতে ঘরে না ঢোকে তাই জানালা-দরজা বন্ধ রাখুন কিছু সময়ের জন্য।