ধর্ষণের বিরুদ্ধে ডাকসুর জিরো টলারেন্স: ফরহাদ

ঢাবি প্রতিনিধি
১৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১:১১
শেয়ার :
ধর্ষণের বিরুদ্ধে ডাকসুর জিরো টলারেন্স: ফরহাদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এস এম ফরহাদ বলেন, ‘যেকোনো ধরনের ধর্ষণ, সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের বিরুদ্ধে ডাকসুর জিরো টলারেন্স। শিক্ষক, কর্মচারী, কিংবা যার মাধ্যমেই হ্যারাসমেন্টের ঘটনা ঘটুক না কেন, সে যত বড়ই প্রভাবশালী হোক না কেন--তার শিকড় আমরা উপড়ে ফেলব।’  

শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এরশাদ হালিমের ‘বিকৃত যৌনাচারের’ দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। এতে সংহতি জানিয়ে ডাকসুর জিএস এস এম ফরহাদ এ কথা বলেন। 

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মুসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মাদ এবং ডাকসুর কার্যনির্বাহী সদস্য সর্ব মিত্র চাকমা।  

ডাকসুর জিএস এস এম ফরহাদ বলেন, ‘একটি ক্রিমিনাল যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ক্রাইমে অভিযুক্ত হয় এবং প্রমাণিত হয়, তখন দুটি জায়গা থেকে তার মৌলিক শাস্তি আসা উচিত। একটি হলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং আরেকটি রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দুই জায়গাতেই আমরা যথেষ্ট গাফিলতি লক্ষ্য করেছি। শুধু গাফিলতি নয় ইনটেনশনালি তারা বিষয়টি ইগনোর করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলে তদন্ত কমিটি হতো, রিপোর্ট প্রকাশ হতো এবং সামগ্রিকভাবে একটি অ্যাকশনে যাওয়া যেত। প্রমাণ যেমনই হোক, প্রমাণিত হওয়ার পর অ্যাকশন নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব ছিল। আমরা সন্দেহ করছি, সেই ফ্যাকাল্টি, সেই ডিপার্টমেন্ট কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো শিক্ষক এই ঘটনায় জড়িত কি না, হয়তো সেই কারণেই পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমার ব্যক্তিগত জায়গা থেকে একটি কথা স্পষ্ট যেকোনো ধরনের ধর্ষণ বা যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স।’ 

ডাকসুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মুসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মাদ বলেন, ‘আপনারা জানেন অধ্যাপক এরশাদ হালিমকে গ্রেপ্তার করার পরে রাষ্ট্রের দায়িত্ব ছিল তাকে রিমান্ডে নিয়ে জবাবদিহি করা। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি রাষ্ট্র তার রিমান্ডের আবেদন করলই না। আমরা মনে করি এটি একটি বৃহৎ ষড়যন্ত্রের অংশ। তাকে কোনো রাজনৈতিক গোষ্ঠী শেল্টার দিচ্ছে। আমরা হুঁশিয়ারি করে বলে দিতে চাই কালবিলম্ব না করে তার রিমান্ড আবেদন করে রিমান্ড কার্যকর করুন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আহ্বান জানাব, জরুরি সিন্ডিকেট বৈঠক ডেকে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হবে এবং ধর্ষকের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না।’

ডাকসুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক বলেন, ‘সমকামিতার বিরুদ্ধে আমরা রাষ্ট্রের সুস্পষ্ট আইন চাই। যারা যারা সমকামিতার সাথে জড়িত হবে, তাদেরকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’

রাজু ভাস্কর্যে মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা একটি মিছিল নিয়ে ভিসির অফিস ঘেরাও করেন। এসময় শিক্ষার্থীরা দাবি জানান, ২ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট দিতে হবে এবং ৪ কার্যদিবসের মধ্যে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে। এসময় তারা রয়াসন বিভাগের সকল প্রকার ক্লাস, পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা করেন।  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ সেখানে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, ‘অভিযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে আসার পর রসায়ন বিভাগে এ বিষয়ে আমরা জানিয়েছি দ্রুত একাডেমিক মিটিং বসানোর জন্য। এর প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার অধ্যাপক ড. এরশাদ হালিমকে সকল প্রকার একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যকম থেকে বহিষ্কার করা হয়।’

তিনি বলেন, যৌন নিপীড়ক সেল থেকে তদন্ত রিপোর্ট আসার পর সিন্ডিকেট সভায় স্থায়ী বহিষ্কারের বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আমাদের সময়/জেএইচ