ছাত্রদের যৌন হয়রানির অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কারাগারে
ছাত্রদের ওপর যৌন হয়রানির অভিযোগের মামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এরশাদ হালিমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলম এ আদেশ দিয়েছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে রাজধানীর শেওড়াপাড়ার নিজ বাসা থেকে এরশাদ হালিমকে গ্রেপ্তার করে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ।
শুক্রবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার এসআই মেহেদী হাসান মিলন এরশাদ হালিমকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে আদালতে হাজির করেন।
এরশাদ হালিমের পক্ষে আইনজীবী শ্যামল কুমার রায় জামিন আবেদনে বলেন, ‘এ আসামি কোনোভাবে মামলার ঘটনার সাথে জড়িত না। তাকে হয়রানি করতে মামলায় জড়ানো হয়েছে। কার্যত এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি, ঘটলে মেডিকেল সার্টিফিকেট থাকত। শিক্ষাজীবনে এরশাদ হালিম অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। তিনি কোনোভাবে মামলার ঘটনার সাথে জড়িত না। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদালয়ের রসায়ন বিভাগের ল্যাবরেটরির দায়িত্বে রয়েছেন। অভ্যন্তরীণ অফিসিয়াল রাজনীতির শিকার তিনি। বয়স্ক একজন মানুষ। জামিনের প্রার্থনা করছি।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুরের আদেশ দেয়।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের একজন নিয়মিত ছাত্র। গত ২৬ সেপ্টেম্বর তার বিভাগের পদার্থবিজ্ঞান মাইনর ল্যাব পরীক্ষায় একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রেক্ষিতে এরশাদ হালিমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরশাদ হালিম ভুক্তভোগীর সমস্যা সমাধান করে দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন এবং তার মিরপুর মডেল থানাধীন পশ্চিম শেওড়াপাড়ার বাসায় যেতে বলেন।
ওই ছাত্র সরল বিশ্বাসে ২৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে তার বাসায় যান। বাসায় ওই ছাত্রকে যৌন নির্যাতন করেন এরশাদ হালিম। পরে তিনি বাসা থেকে চলে আসেন। এই বিষয় কাউকে না বলতে ভয়ভীতি দেখান এরশাদ হালিম। পরদিন ওই ছাত্রকে ফোনে এরশাদ হালিম জানান, তার পরীক্ষা সংক্রান্ত সমস্যার বিষয়ে প্রক্টর স্যারের সাথে আলোচনা করেছেন এবং তাকে বিকেলের শিফটে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেবেন। সেই সাথে তাকে ওই দিন পুনরায় তার শেওড়াপাড়ার বাসায় যেতে বলেন।
তবে এরশাদ হালিমের সমকামী আচরণের কারণে ওই দিন ওই ছাত্র আর তার বাসায় যাননি। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে তিনি গ্রামের বাড়িতে চলে যান। গ্রামের বাড়িতে চলে যাওয়ায় এরশাদ হালিম ফোন করে তাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করে এবং দ্রুত ঢাকায় এসে তার বাসায় রাত্রিযাপন করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।
গত ১০ অক্টোবর ঢাকায় আসার পর ওই ছাত্র এরশাদ হালিমকে ফোন করে বাসায় যাওয়ার জন্য বললে তিনি অসম্মতি জানান। তার বাবা অসুস্থ থাকায় এবং পরীক্ষার বিষয়টি পরিবার জানতে পারলে তার বাবা আরও অসুস্থ হয়ে যাবে মর্মে সে কোনো উপায় না পেয়ে গত ১৪ অক্টোবর রাত সাড়ে ১২টার দিকে শেওড়াপাড়ার বাসায় যেতে বাধ্য হন। বাসায় যাওয়ার পর তাকে মারধর করেন, বিকৃত যৌনাচার করেন। নির্যাতনে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে তাকে হলের সামনে নামিয়ে দেন এরশাদ হালিম।
এ ঘটনায় শুক্রবার ওই ছাত্র শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন।
আরও পড়ুন:
মৌচাকের গোল্ডেন প্লাজায় অগ্নিকাণ্ড
আমাদের সময়/জেআই