প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মসূচিতে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ পুলিশের, আহত অনেকে
রাজধানীর শাহবাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ‘কলম সমর্পণ কর্মসূচি’তে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করেছে। এতে কয়েকজন শিক্ষক আহত হয়েছেন। শনিবার (৮ নভেম্বর) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আমরা কলম সমর্পণ কর্মসূচি করতে শাহবাগে অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করি। শাহবাগ মোড়ে যাওয়ার আগেই রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশ শিক্ষকদের আটকে দেয়। সেখানে অবস্থান নিয়ে শিক্ষকরা দাবি আদায়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন। হঠাৎ পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে আমাদের কয়েকজন শিক্ষিকাসহ অনেকে আহত হয়েছেন।’
এর আগে শনিবার সকাল ৯টা থেকে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে বলে তখন জানান শিক্ষক নেতারা।
‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’-এর ব্যানারে চারটি সংগঠন এ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম-শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (শাহিন-লিপি) ও সহকারী শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের তৃতীয় ধাপে নিয়োগ পাওয়া সহকারী শিক্ষকরাও এতে যোগ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
শনিবার সকালে বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, ‘অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্নাতক ডিগ্রি নিয়েই দশম গ্রেড পাচ্ছেন। অথচ আমরা স্নাতক ডিগ্রির পাশাপাশি সিএনএড, বিপিএড বা বিটিপিটি কোর্স সম্পন্ন করেও ১৩তম গ্রেডে আছি। এটি বৈষম্য।’
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে কয়েক হাজার শিক্ষক শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছেন এবং দিন শেষে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়াতে পারে বলে আশা করছেন তারা।তবে কিছু স্থানে শিক্ষকদের বাধা দেওয়া ও ফোনে হুমকি দেওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে বলে জানান এ শিক্ষক নেতা।
সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি হলো দশম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেডের সমস্যা সমাধান এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি নিশ্চিত করা।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ৬৫ হাজার ৫৬৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। গত ২৪ এপ্রিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১১তম থেকে ১০ম গ্রেডে এবং ১৩তম গ্রেডের শিক্ষকদের ১২তম গ্রেডে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেয়।
তবে সহকারী শিক্ষকরা বলছেন, এ সিদ্ধান্তে তাদের দাবির প্রতিফলন ঘটেনি, তাই আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন তারা।
আমাদের সময়/জেআই