জকসু নির্বাচনে প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট করবে কমিশন, নেই আপিলের সুযোগ

জবি প্রতিনিধি
০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২২:১২
শেয়ার :
জকসু নির্বাচনে প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট করবে কমিশন, নেই আপিলের সুযোগ

আসন্ন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু)-র নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। একই সঙ্গে নির্বাচনী চূড়ান্ত আচারণবিধিও প্রকাশ করা হয়েছে। নির্বাচনী আচারণ বিধিতে প্রার্থীদের জন্য ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলকসহ বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক লাউঞ্জে জকসুর তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী আচারণ বিধিমালা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচনী বিধিমালায় বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন প্রত্যেক প্রার্থীর ডোপ টেস্টের মাধ্যমে মাদকাসক্তির বিষয়টি পরীক্ষার নিরীক্ষা করবেন। এবং মাদকাসক্ত প্রমাণিত হলে ওই প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল বলে গণ্য হবে। কেউ ডোপটেস্টে অনুপস্থিত থাকলে তার মনোনয়নপত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল বলে গণ্য হবে। ডোপ টেস্টের রেজাল্টের বিষয়ে কোনো আপিল বা আপত্তি করা যাবে না। দুই দিন ধরে প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নভেম্বরের ২৭ ও ৩০ তারিখে প্রার্থীদের টেস্ট করা হবে।

এ ছাড়া নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচারণা বিষয়ে বলা হয়েছে, ক্লাস বা পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে শ্রেণিকক্ষে বা পরীক্ষার হল রুমে কোনো নির্বাচনী প্রচারণা করা যাবে না। মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরুর আগের দিন থেকে অর্থাৎ ১২ নভেম্বর থেকে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসে সব সামাজিক সংস্কৃতি ও কল্যাণমূলক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকবে।

নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ব্যতীত ৫০ জনের অধিক একসঙ্গে জমায়েত হওয়া যাবে না। নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো বহিরাগত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। তবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো প্রাক্তন শিক্ষার্থী রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক ইসুকৃত বিশেষ পরিচয়পত্র গ্রহণ সাপেক্ষে প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। কোনো নির্দিষ্ট প্যানেলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫০ জন কোনো আংশিক প্যানেলের পক্ষে প্রার্থী দুইজন। এবং প্রত্যেক স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে সর্বোচ্চ দুইজন বিশেষ পরিচয়পত্র নিতে পারবেন। ইস্যুকৃত এই পরিচয়পত্র নির্বাচনী প্রচারণা সময়সীমা পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

নির্বাচনী এই বিধিমালায় বলা হয়েছে, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা স্বার্থে মনোনয়নপত্র দাখিলের পরদিন থেকে পর্যন্ত উন্মুক্ত লাইব্রেরি বন্ধ থাকবে। তবে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি যথারীতি খোলা থাকবে। ভোট গ্রহণ শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগে প্রচারণা শেষ করতে হবে প্রচারণার দিনগুলিতে সকাল রাত দশটা পর্যন্ত প্রচারণা শেষ করতে হবে।

প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক ইস্যুকৃত পরিচয়পত্র প্রদর্শনপূর্বক রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে গণমাধ্যম কর্মীরা ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন, তবে ভোটকেন্দ্রের বুথসমূহে প্রবেশ করতে পারবেন না, ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে কোনো ধরনের লাইভ সম্প্রচারসহ ভোট কার্যক্রমে বাধাগ্রস্ত হতে পারে এমন কিছু করা যাবে না।

বুথের অভ্যন্তরে কোনো ভোটার মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস বহন করতে পারবে না। ভোটগণনা লাইভ সম্প্রচার করা হবে। এ ছাড়া নির্বাচনের দিন কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো ভোটার ভোটার স্লিপ প্রদান করতে পারবেন। তবে ভোট কেন্দ্রের ৫০ মিটারের মধ্যে ভোটার স্লিপ করা যাবে না।

এর আগে বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক লাউঞ্জে জকসুর তফসিল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন। এদিন নির্বাচন কমিশন আগামী ২২ ডিসেম্বর (সোমবার) জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি ও নানাবিধ প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে আমরা একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামী ২২ ডিসেম্বর ভোট গ্রহন করা হবে। এবং একই দিনে ভোট গণনা করে ফল ঘোষণা করা হবে।

অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান তফসিল বিবরণীতে জানান, আজ ৫ নভেম্বর বুধবার আচারণ বিধিমালা প্রকাশ করা হবে। ভোটার তালিকায় আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি ৯ ও ১১ নভেম্বর। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ বুধবার ১২ নভেম্বর , এ ছাড়া ১৩নভেম্বর থেকে ১৭ নভেম্বর মনোনয়ন বিতরণ চলবে। এবং ১৭ ও ১৮ নভেম্বর মনোনয়ন দাখিল করা যাবে। মনোনয়নপত্র বাছাই করে ১৯ ও ২০ নভেম্বর সম্পন্ন করে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৩ নভেম্বর রোববার।

পরবর্তীতে প্রার্থীদের আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি ২৪ নভেম্বর থেকে ২৬ নভেম্বর। এ ছাড়া প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট করা হবে ২৭ ও ৩০ নভেম্বর। পরবর্তীতে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ৩ ডিসেম্বর বুধবার। এরপর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ৪, ৭ ও ৮ ডিসেম্বর। প্রত্যাখ্যানকৃত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ৯ ডিসেম্বর। এবং প্রার্থীদের প্রচারণা ৯ ডিসেম্বর থেকে ১৯ ডিসেম্বর। সবশেষে ভোটগ্রহণ ও ফল ঘোষণা করা হবে ২২ ডিসেম্বর। 

আমাদের সময়/আরডি