আবু সাঈদ হত্যা /
ফের সাক্ষ্যগ্রহণ পেছাল
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য হাসিবুর রশীদসহ ৩০ আসামির বিরুদ্ধে ১০ম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ছিল আজ। তবে সাক্ষী আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় সাক্ষ্যগ্রহণ স্থগিত করে আগামী ১০ নভেম্বর নতুন দিন নির্ধারণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মঙ্গলবার (০৪ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ মামলাটির পরবর্তী দিন নির্ধারণ করেন। এদিন প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে সময় চেয়ে আবেদন করা হলে আদালত তা মঞ্জুর করে নতুন দিন ধার্য করেন।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর সহিদুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ান।
এ মামলার গ্রেপ্তার ছয় আসামি হলেন- এএসআই আমির হোসেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ।
এ প্রসঙ্গে কনস্টেবল সুজনের আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু বলেন, সাক্ষীর অনুপস্থিতি মূলত ‘রিলাক্টেন্স অব দ্য প্রসিকিউশন’ অর্থাৎ যাদের সাক্ষী করা হয়েছে, তাদের সময়মতো আদালতে হাজির করার দায়িত্ব প্রসিকিউশনের। তিনি বলেন, এটি প্রসিকিউশনের ব্যর্থতার প্রমাণ।
আরও পড়ুন:
চীনা অ্যাপের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব মানুষ
গত ১৩ অক্টোবর সাক্ষ্যগ্রহণের কথা ছিল। তবে সাক্ষী হাজির করতে পারেনি প্রসিকিউশন। এজন্য সময় চেয়ে আবেদন করেন প্রসিকিউটর মঈনুল করিম। তিনি বলেছিলেন, ‘শারীরিক অসুস্থতার কারণে আমাদের সাক্ষী আসতে পারেননি। বাকি প্রসিকিউটররা ট্রাইব্যুনাল-১ এ অন্য মামলা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। তাই আমাদের এ মামলায় ২০ অক্টোবরের পর সাক্ষী উপস্থাপন করতে চাই।’
ওই সময় প্রসিকিউশনের উদ্দেশে ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘সাক্ষী ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে হাজির হতে পারেনি, এটা কি লেখা যায়? আপনারা যা বলছেন, এটা কি বলতে পারেন? এটা যে আদালত অবমাননা তা কি জানেন? যদি কাজই করতে না পারেন, ব্যস্তই থাকেন, তাহলে দুটি ট্রাইব্যুনাল কেন করা হলো? আপনাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলার প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত।’
গত ২৭ আগস্ট মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয় সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে, যা উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এর আগে ৬ আগস্ট ট্রাইব্যুনাল ৩০ আসামির বিরুদ্ধে ফর্মাল চার্জ (আনুষ্ঠানিক অভিযোগ) গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
তবে বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ২৪ আসামি এখনো পলাতক রয়েছেন। তাদের পক্ষে গত ২২ জুলাই সরকারি খরচে চারজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:
ভারত সফরে গেলেন প্রধান বিচারপতি
গত ৩০ জুলাই পলাতক আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত চারজন আইনজীবী। এর মধ্যে পাঁচজনের হয়ে লড়েন আইনজীবী সুজাত মিয়া। নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতাদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মামুনুর রশীদ। এ ছাড়া শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত জাহান ও শহিদুল ইসলাম।
২৯ জুলাই তিন আসামির পক্ষে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়; এর মধ্যে শরিফুলের হয়ে লড়েন আইনজীবী আমিনুল গণি টিটো। কনস্টেবল সুজনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু এবং ইমরানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সালাহউদ্দিন রিগ্যান।
২৮ জুলাই প্রসিকিউশন ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ করেন। ৩০ জুন ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গ্রহণ করেন এবং ২৪ জুন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। এ মামলায় মোট ৬২ জন সাক্ষী রয়েছেন।
আমাদের সময়/এএস