শীতে পোষা প্রাণীর যত্নে করণীয়
আমাদের আশে পাশে যে প্রাণীগুলোর বিচরণ সবচেয়ে বেশি এর মাঝে অন্যতম হচ্ছে কুকুর ও বিড়াল। অনেকেই নিজের বাসায় ভালোবেসে বিড়াল লালন পালন করেন। আস্তে আস্তে এসব পোষা প্রাণীদের সাথে সম্পর্ক তৈরি হয়। একটা সময় পরিবারের অংশ হয়ে পড়ে এসব প্রাণী।
তবে শীতকালে নিজের পাশাপাশি পোষা প্রাণীটির দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। বেশিরভাগ বিড়ালই মানুষের কোলে অথবা মানুষের গা ঘেঁষে ঘুমাতে পছন্দ করে। এর প্রধান কারন হচ্ছে বিড়াল উষ্ণস্থান পছন্দ করে। শীতকালে অনেক সময় অনেক বিড়ালকে উষ্ণতার খোঁজে রৌদ্রস্নান করতে দেখা যায়। বয়স্ক এবং মা বিড়ালকে বাচ্চা নিয়ে ঘরের উষ্ণস্থানটি খুঁজতে থাকে। বিড়ালের শরীরে লোম বেশি থাকলেও তারা শীত বেশি লাগে। এসময় বিড়ালকে বেশি অসুস্থ হতে দেখা যায়। তাই শীতকালে আপনার পোষা বিড়ালটি প্রয়োজন কিছু বাড়তি যত্নের। চলুন জেনে নিই কীভাবে শীতকালীন অসুস্থতা থেকে পোষা প্রাণীদের মুক্ত রাখবেন।
১। নরম এবং উষ্ণ বিছানা:
স্বভাবতই বিড়াল ঘুমাতে অনেক পছন্দ করে। শীতকালে তাদের ঘুমানোর জন্য চাই একটি নরম ও উষ্ণ বিছানা। আজকাল বিড়ালের জন্য আলাদাভাবে Cat Bed or Cat house কিনতে পাওয়া যায়। ঘরের কোনায় তার জন্য পছন্দের একটি বিছানা তৈরি করে দিন অথবা আপনার সাথে কম্বলের উপর ঘুমাতে দিন। এতে করে সে ঘুমিয়ে আরাম পাবে এবং ঠাণ্ডায় কষ্ট হবে না।
২। রৌদ্রস্নান (Sunbath):
আরও পড়ুন:
শীতে গর্ভবতী মায়েদের যত্ন
বিড়ালকে রৌদ্রস্নান করতে দিন। ঘরের যে পাশে দিনের বেলা রোদ আসে, সেদিকের পর্দা সরিয়ে উন্মুক্ত করে দিন যাতে করে ঘরের ভেতর রোদ আসতে পারে। বিড়াল রোদের আলোর উষ্ণতা খুব পছন্দ করে।
৩। বিড়ালের খাওয়া:
খেয়াল রাখতে হবে বিড়াল ঠিক মত খাওয়া দাওয়া করছে কিনা। বিড়ালকে তার বয়স অনুযায়ী খাওয়া অত্থবা Cat Food খাওয়াতে হবে যাতে সে সঠিক ক্যালোরি পায়। প্রয়োজনে খাবার বাড়াতে অথবা কমাতে হবে। রেফ্রিজারেটর এর ঠাণ্ডা খাবার গরম করে দিতে হবে, সরাসরি ঠাণ্ডা খাবার দিলে বিড়ালের ঠাণ্ডা লেগে জ্বর হতে পারে।
৪। গোসল অথবা Grooming:
বিড়াল স্বভাবতই পরিষ্কার প্রাণী এবং তারা পানি পছন্দ করে না। শীতকালে বিড়ালকে গোসল না করানই ভালো, এতে জ্বর এসে নিউমনিয়া হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। খুব যদি প্রয়োজন মনে হয় তাহলে হালকা গরম পানিতে গোসল করিয়ে, ভালো ভাবে তোয়ালে দিয়ে মুছিয়ে দিতে হবে। প্রয়োজনে Hair Dryer দিয়ে শুকিয়ে উষ্ণস্থানে রেখে দিতে হবে।
আরও পড়ুন:
জরায়ুমুখ ক্যানসারের লক্ষণগুলো জেনে রাখুন
৫। Activity ও খেলেধুলা:
শীতকালে সব প্রাণীর মধ্যেই একটু অলসতা দেখা দেয়। বিড়াল এ সময় তুলনামুলকভাবে বেশি ঘুমায়। তাই তার সাথে প্রতিদিন একটু সময় খেলাধুলা করতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে তার Activity ঠিক আছে কিনা।
৬। গ্যারেজ অথবা Basement নিরাপদ নয়:
আপনার বিড়াল যদি নিয়মিত বাইরে যায় তাহলে এখনি নেট লাগিয়ে দিন যাতে বাইরে যেতে না পারে। শীতকালে বিড়াল উষ্ণ জায়গা খুঁজে আর গ্যারেজ এ গাড়ির ইঞ্জিনের উষ্ণতা পাওয়ার জন্য গাড়ির নিচে অথবা চাকার উপরে ঘুমিয়ে থাকে। এতে করে অসাবধানতাবশত দুর্ঘটনা ঘটতে পারে অথবা বেশি তাপে শরীরের যে কোন অংশ পুড়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন:
শীতে মুলা কেন খাবেন?
৭। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও টিকা দিতে হবে:
শীতকাল আসার আগেই বিড়ালকে রোগ প্রতিরোধ করার জন্য টিকা দিতে হবে। এছাড়া জ্বর, কাশি হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিকটস্থ vet এর কাছে নিয়ে যেতে হবে।
আমাদের সময়/ টিটিএ