সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক ও খোকন দম্পতির আয়কর নথি জব্দের আদেশ

আদালত প্রতিবেদক
৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:১৮
শেয়ার :
সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক ও খোকন দম্পতির আয়কর নথি জব্দের আদেশ

‎সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এবং ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক উপ-প্রেসসচিব মুহাম্মদ আশরাফুল আলম খোকন এবং তার স্ত্রী রেজওয়ানা নূরের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজ এ আদেশ দিয়েছেন।

‎দুদকের সহকারি পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ আয়কর নথি জব্দ চেয়ে আবেদন করেন।

মোজাম্মেল হকের আবেদনে বলা হয়, মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে রাখা এবং তার নামীয় চারটি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজন অর্থ লেনদেন করে তা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তর করার অভিযোগেরর বিষয়ে তদন্ত চলছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে মোজাম্মেল হকের আয়কর নথির স্থায়ী অংশ, বিধিত অংশ ও অ্যাসেসমেন্ট প্রতিবেদন (যদি থাকে) এবং নোটসিটসহ সংশ্লিষ্ট যাবতীয় রেকর্ডপত্র/তথ্যাদি এবং অফিস আদেশের অংশ সংগ্রহপূর্বক পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন।

‎এদিকে খোকন দম্পতির আবেদনে বলা হয়, আশরাফুল আলম খোকনের বিরুদ্ধে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক নিজ নামে-বেনামে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখা এবং তার নামীয় তিনটি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজন অর্থ লেনদেন করে তা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তর করার অভিযোগের তদন্ত চলছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামি মুহাম্মদ আশরাফুল আলম খোকন এবং তার স্ত্রী রেজওয়ানা নূরের আয়কর নথির স্থায়ী অংশ, বিবিধ অংশ ও অ্যাসেসমেন্ট প্রতিবেদন (যদি থাকে) এবং নোটসিটিসহ সংশ্লিষ্ট যাবতীয় রেকর্ডপত্র/তথ্যাদি এবং অফিস আদেশের অংশ সংগ্রহপূর্বক পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন।

এমতাবস্থায় মোজাম্মেল হক, আশরাফুল আলম খোকন এবং তার স্ত্রীর আয়কর নথির শুরু থেকে ২০২৪-২০২৫ করবর্ষ পর্যন্ত আয়কর নথির স্থায়ী অংশ, বিবিধ অংশ ও এ্যাসেসমেন্ট প্রতিবেদন (যদি থাকে) এবং নোটসিটসহ সংশ্লিষ্ট যাবতীয় রেকর্ডপত্র/তথ্যাদি এবং অফিস আদেশের অংশ পর্যালোচনা পূর্বক সাক্ষ্য-স্মারক প্রদানের লক্ষ্যে সত্যায়িত ফটোকপি (একসেট) এবং মামলার আলামত হিসাবে জব্দকরণের লক্ষ্যে আদেশ দানে প্রার্থনা করা হয়।

আয়বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে গত ২৯ সেপ্টেম্বর মামলা করেন সংস্থার সহকারী পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ।

‎মামলার এজাহারে বলা হয়, মোজাম্মেল হক ১০ কোটি ৩৪ লাখ ৫৭ হাজার ৪২৭ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মালিক হয়েছেন, যা তার ঘোষিত আয়ের উৎসের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এ ছাড়া, তার নামে থাকা তিনটি ব্যাংক হিসাবে মোট ৮ কোটি ৩২ লাখ ৭৪ হাজার ১১৪ টাকার ‘সন্দেহজনক’ লেনদেনের তথ্যও উল্লেখ করা হয়েছে।

‎গত ২৭ মার্চ আশরাফুল আলম খোকন এবং তার স্ত্রী রেজওয়ানা নূরের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করে দুদক।

‎মামলায় অভিযোগ করা হয়, আশরাফুল আলম খোকন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিবের দায়িত্বে থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১৩ কোটি ৩৩ লাখ ৯৮ হাজার ৮২৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন। তার নামের তিনটি ব্যাংক হিসাবে ১ কোটি ৩৪ লাখ ৩৯ হাজার ৫৭২ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনেরও প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া দুর্নীতির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি কিনেছেন তিনি। স্বামীর ক্ষমতা অপব্যবহার করে স্ত্রী রেজওয়ানা নূরের জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৩ কোটি ৮ লাখ ৮১ হাজার ৫৬৬ টাকা অবৈধভাবে অর্জন ও ভোগ দখল করেন। তার তিনটি ব্যাংক হিসাবে ৬ কোটি ১২ লাখ ৪৯ হাজার ৮৩৭ টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর, স্থানান্তরের মাধ্যমে সন্দেহজনক অসংখ্য লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

আমাদের সময়/আরডি