বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গোপন নথি ফাঁস, উপাচার্যের পিএসকে অপসারণ
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্যের দপ্তরের একাধিক গোপন নথি ফাঁস হওয়ার ঘটনায় উপাচার্যের একান্ত সচিব (পিএস) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য দায়িত্ব পাওয়া ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার খান সানজিয়া সুলতানা স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
গত সোমবার (২৭ অক্টোবর) মধ্যরাতে মিজানুর রহমানের ফেসবুক আইডিতে কমপক্ষে ৬০টি নথি শেয়ার করা হয়। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে সেগুলো মুছে ফেলা হলেও অনেক শিক্ষার্থী সেগুলোর স্ক্রিনশট রেখেছেন। এ নিয়ে মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) থেকে ক্যাম্পাসে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
প্রকাশ করা নথিপত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেগুলোর মধ্যে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করা, ব্যক্তিগত ফাইল ও শাস্তির নথি, তদন্ত প্রতিবেদন ও অডিট আপত্তির নথি, শিক্ষার্থীদের মামলার নথি ও কর্মকর্তাদের চাকরির আবেদনপত্রের ব্যক্তিগত ছবি রয়েছে।
রেজিস্ট্রার দপ্তরের সেকশন কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমি উপাচার্যের কাছে একটি আবেদনপত্র জমা দিয়েছিলাম, এর কপি কেবল অফিসের গোপন নথিতে ছিল। অথচ সেই আবেদনপত্রের ছবি ফেসবুকে দেখা গেছে। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক গোপনীয়তার জন্য হুমকিস্বরূপ।’
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে উপাচার্যের কার্যালয় থেকে সরিয়ে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের উপপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একই আদেশে আরও দুই কর্মকর্তার রদবদল করা হয়।
অভিযোগের বিষয়ে পিএস মিজানুর রহমানের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধীক শিক্ষক বলেন, ‘এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অভ্যন্তরীণ জবাবদিহি ও তদারকি ব্যবস্থার দুর্বলতার ভয়াবহতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দপ্তরে কে কী তথ্যের অধিকার রাখবে, গোপন নথি কাদের অ্যাকসেসে থাকবে, ডিজিটাল নিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত হবে-এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো স্পষ্ট নীতিমালা নেই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের সেকশন কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলমের নির্দেশে মিজানুর রহমানকে ভিসির পিএস পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আমাদের সময়/আরডি