ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে জাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

জাবি প্রতিনিধি
২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:১৭
শেয়ার :
ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে জাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

দেশে চলমান ধর্ষণ-নিপীড়ন, উগ্র-হিন্দুত্ববাদী অপতৎপরতা এবং সম্প্রতি টঙ্গীতে এক মসজিদের খতিবকে অপহরণের ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বাদ জুমা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় থেকে শুরু হয়ে  ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় বটতলায় এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা। ‘ব্যান ব্যান, ইসকন’,‘ইসকনের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’,‘অপহরণ ধর্ষণ, ইসকন ইসকন’, ‘স্বৈরাচারের সঙ্গী, ইকসন তুই জঙ্গি’ ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

এ সময় জাকসুর পরিবেশ সম্পাদক ও শাখা শিবির স্কিল ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক শাফায়েত মীর বলেন, দেশে লাগাতার ধর্ষণ, নিপীড়ন ও ইসলামবিদ্বেষী অপতৎপরতা সমাজে গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। টঙ্গীতে মসজিদের খতিবকে অপহরণ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং এটি ধর্মীয় বিদ্বেষ উসকে দেওয়ার একটি অপচেষ্টা। রাষ্ট্র ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি এসব ঘটনার বিচার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা সহিংস আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে। এ সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী ও দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হল সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) সিফাতুল্লাহ বলেন, ‘চট্টগ্রামে উগ্রবাদী ইসকনের হামলায় নিহত সাইফুল আমার ভাই, বুয়েটে শ্রীশান্তের নেশার ঘোরে ধর্ষণ করা মেয়েটি আমাদের বোন। আমরা সবাই সাইফুল। আমারা হচ্ছি সেসব ইমাম-খতিব, যাদের ইসকন গুম করে ভারতীয় বর্ডারে ফেলে এসেছে। আমারা যদি এই উগ্রবাদী সংগঠনকে এখনি থামিয়ে দিতে না পারি, এখনই ব্যবস্থাগ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়, সরকার তাহলে অদূর ভবিষ্যতে এরা ঘোষণা দিয়েই আমাদের ইমাম-খতিবদের গুম করবে। ইসকনকে নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের দাবি।’

সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ছাত্র আনজুম শাহরিয়ার বলেন, ‘আমাদের মা-বোনদের ধর্ষণ করা হচ্ছে, যারা আমাদের ঈমানের শিক্ষা দেয় সেই ইমামদের বলে বলে গুম করা হচ্ছে। অথচ আমরা দেখতে পাচ্ছি বাংলাদেশের পুলিশ ধর্ষিতাকে দোষী সাব্যস্ত করে অফিসিয়াল বিবৃতি দিচ্ছে। আমরা বলে দিতে চাই, আমাদের আবেগ নিয়ে খেলবেন না, আমাদের ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিবেন না। গত বছর ইসকন নামের হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আমাদের ভাই সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করেছিল, এক বছর পার হয়ে গেলেও আমরা ভাই হত্যার বিচার এখনো পাইনি। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলে দিতে চাই, আমাদের মা বোনদের নিয়ে, আমাদের দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে কোন ধরনের ষড়যন্ত্র আমরা বরদাস্ত করবো না।’

উল্লেখ্য, সম্প্রতি জুমার খুতবায় টঙ্গী মসজিদের খতিব ‘হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসন’ ও ‘লাভ ট্র্যাপ’ নিয়ে সচেতনতামূলক বক্তব্য দেন। এরপর থেকেই তিনি ইসকনের নাম লেখা উড়োচিঠিতে হুমকি পেয়ে আসছিলেন। পরে তাকে অপহরণ করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে পঞ্চগড়ের এক সীমান্তবর্তী এলাকায় এলাকাবাসী তাকে শেকল দিয়ে গাছের সঙ্গে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে।

আমাদের সময়/জেএইচ