ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলায় কারাগারে শ্রীশান্ত

আদালত প্রতিবেদক
২২ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:৫১
শেয়ার :
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলায় কারাগারে শ্রীশান্ত

‎ইসলাম ধর্ম, মুসলিম নারীদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িকভাবে বহিষ্কার হওয়া ছাত্র শ্রীশান্ত রায়কে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

‎বুধবার (২২ অক্টোবর) ঢাকার মেট্টোপলিটন মাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ এহসানুল ইসলাম শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। ‎একই সঙ্গে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) মামলার তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে জামিন শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত। 

‎শ্রীশান্তের বিরুদ্ধে সহপাঠীকে ‘যৌন হয়রানি, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও সাইবার বুলিংয়ের’ অভিযোগ তুলে তার শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) মধ্যরাতে বিক্ষোভ শুরু করেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। রাতেই তাকে হেফাজতে নেয় চকবাজার থানা পুলিশ।

‎‎ইসলাম ধর্ম, মুসলিম নারীদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে বুধবার বুয়েটের সিকিউরিটি অফিসার আফগান হোসেন মামলা করেন। এদিন তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার থানার এসআই শাজাহান সিরাজ আসামিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।

‎‎শ্রীশান্তের পক্ষে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম জামিন চেয়ে শুনানিতে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে যে ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে, তা জামিনযোগ্য। অজ্ঞাত আইডি থেকে শ্রীশান্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ। এ অভিযোগ ধারণার ভিত্তিতে, অনেক সময় নব-ক্রিয়েট। জামিনযোগ্য ধারা, তার জামিনের প্রার্থনার করছি।’

‎‎রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, ‘এটা একটা চাঞ্চল্যকর মামলা। দেখতে হবে ঘটনাটি কী। আসামি জামিন পেলে পরিস্থিতি কী হবে। মাত্র কয়েক দিন আগে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষার্থী কোরআন শরীফ অবমাননা করেছে। সে হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে বিরোধ লাগাতে চাচ্ছে। এ আসামি প্রথমে বোরকা পরা নারীদের নিয়ে, পরে মাদ্রাসা পড়ুয়া মেয়েদের নিয়ে, এরপর আজান নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছে। এভাবে সে ইসলাম ধর্ম, অনুষ্ঠান নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। গতকাল সারারাত এটা নিয়ে বুয়েটে বিক্ষোভ হয়েছে। জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে আটক রাখার প্রার্থনা করছি।’

‎‎উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে বিচারক বলেন,‘মামলায় দেখা যাচ্ছে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের। কিন্তু যে ধারা দেওয়া হচ্ছে, তার সাথে যাচ্ছে না। তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার শুনানি হবে।’ ‎

পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়। ‎শুনানিকালে হাসিমাখা মুখে দেখা যায় শ্রীশান্তকে।

‎‎মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, বুয়েটের আহসান উল্লাহ হলে অবস্থান করে ছদ্ম নাম ‘উইকলি সার্ভিস ৯২৩’ (ইংরেজিতে) আইডি ব্যবহার করে মুসলিম নারী ও ইসলাম ধর্ম নিয়ে চলতি বছরের ৮ জুন থেকে ৭ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন লেখালেখি করে। সেখানে তার মন্তব্যসহ আরও অনেক অশ্লীল এবং কুরুচিপূর্ণ, ধর্মীয় বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য পোস্ট করা হয়। এ আসামি ছদ্মনাম ব্যবহার করে দীর্ঘ দিন ধরে মুসলিম নারী ও ইসলাম ধর্মীয় বিষয়ে অশ্লীল এবং কুরুচিপূর্ণ আপত্তিকর পোস্ট করে আসছে।

‎‎দীর্ঘদিন চেষ্টা করে ছদ্মনামে ব্যবহৃত আইডির প্রকৃত পরিচয়ধারী ব্যক্তি আসামি শ্রীশান্ত রায়কে শনাক্ত করা হয়। আসামির মুসলিম নারী সংক্রান্ত অশ্লীল মন্তব্য এবং ধর্মীয় ঘৃণা ও বিদ্বেষমূলক মন্তব্য, বুয়েটের শিক্ষার্থী ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে। 

আমাদের সময়/জেএইচ