ঋতু বদলে পোশাক

নিশাত তানিয়া
২২ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৩৯
শেয়ার :
ঋতু বদলে পোশাক

শীতের পূর্বাভাস নিয়ে আগমন ঘটে হেমন্তের। কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাসের সমন্বয়ে আসে হেমন্ত। এই ঋতু যেন নানা বৈচিত্র্য নিয়ে আসে আমাদের মাঝে। হেমন্তের এই সময়ে রাতের একটি নির্দিষ্ট সময় আর সকালের দিকে হিমেল হাওয়া ছুঁয়ে যায়। তা ছাড়া বাকি সময়টা ঠাণ্ডা গরমের দেখা মেলে। তাই এই সময়ে পোশাক আরামদায়কের সঙ্গে হতে হবে আবহাওয়া উপযোগীও। সাসটেইনেবল ফ্যাশন লেবেল-এর আফসানা ফেরদৌসি বলেন, এখন যেহেতু হেমন্তের শেষ ভাগ, আর শীতের আগমন ধীরে ধীরে অনুভব করা যাচ্ছে, তাদের কালেকশনটিও সেই সময়টাকেই মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে। আবহাওয়ার এই রূপান্তরের সময় মানুষ যেন আরামদায়কভাবে, অথচ স্টাইল বজায় রেখে পোশাক পরতে পারে, সেটাই মূল ভাবনা। ব্র্যান্ডটি যেহেতু সাসটেইনেবল ফ্যাশনের ওপর কাজ করে, তাই কাপড় হিসেবে বেছে নেওয়া হয় প্রাকৃতিক ফাইবার কটন ও লিনেন। এগুলোর ওজন মাঝারি রাখা হয়েছে, যাতে দুই মৌসুমেই আরামদায়কভাবে পরা যায়। ফ্যাব্রিকগুলো ‘ব্রিদেবল’, ফলে সারাদিন পরলেও কোনো অস্বস্তি হয় না। ডিজাইনের ক্ষেত্রে লং স্লিভ ড্রেস, যেগুলোর হাতা ভাঁজ করে ছোট করা যায়, দিনের তাপমাত্রা অনুযায়ী সহজেই মানিয়ে নেওয়া সম্ভব। এ ছাড়া আছে লং ড্রেস, কর্ড সেট ও লেয়ারড পোশাক, যেগুলো একা বা জ্যাকেট, স্কার্ফ ইত্যাদির সঙ্গে মিলিয়ে পরা যায়। কালার প্যালেট রাখা হয়েছে বেশ নরম ও প্রাকৃতিক টোনে, যেমন অফ-হোয়াইট, ইন্ডিগো নীল, টেরাকোটা, আর্থ ব্রাউন ইত্যাদিÑ যাতে পোশাকগুলো শুধু মৌসুমে নয়, সময়ের সীমার বাইরেও পরা যায়। জর্জেট, সিল্ক, নেট কাপড়ের লং কামিজ, স্কার্ট এই সময়ে বেশ আরামদায়ক। তা ছাড়া টি-শার্ট কিংবা টপসের সঙ্গে জেগিংস খুব উপযোগী এই সময়ে। শাড়ির ক্ষেত্রে হেমন্তে বেছে নিতে পারেন সিল্ক শাড়ি। সিল্ক শিফন, টাঙ্গাইল সিল্ক, সাউথ ইন্ডিয়ান সিল্ক ইত্যাদি। খাদির শাড়িও পরতে পারেন। সে ক্ষেত্রে উজ্জ্বল রঙ আপনাকে মানাবে। দেশের নামি-দামি ফ্যাশান হাউসগুলো ঘুরে দেখা গেল, সকালে ও রাতের দিকে বাতাসে ঠাণ্ডা অনুভব হয়, তাই এ সময় সাধারণত ফুল স্লিভ কিংবা থ্রি-কোয়ার্টার লং কুর্তি, কামিজ, শাল, টি-শার্ট, জ্যাকেট, হুডি, কটি, হাতাওয়ালা পোশাকের চাহিদা বেশি।

হেমন্ত ও শীতের পূর্বাভাস মাথায় রেখে হাউসগুলো এনেছে স্ক্রিন ও ব্লক প্রিন্টেড, এমব্রয়ডারি উজ্জ্বল ও গাঢ় রঙের শাল, স্কার্ফ, কটি, ডেনিম প্যান্ট, টুইল প্যান্ট, লেগিংসসহ বিভিন্ন ধরনের আরামদায়ক পোশাক। পোশাক ব্র্যান্ড আড়ং, সেইলর, রঙ বাংলাদেশে পাওয়া যাচ্ছে উজ্জ্বল রঙের শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, লং কামিজ, টপস, পাঞ্জাবি, কুর্তা, শার্টম, টি-শার্ট ইত্যাদি। শীত সামনে রেখে ‘সারা’ নিয়ে এসেছে ছোট ও বড়দের জ্যাকেট, টপস, হুডি, চাদর এবং ফুল হাতা টি-শার্ট। উজ্জ্বল ও গাঢ় রঙ, যেমনÑ কালো, গাঢ় নীল, গাঢ় কমলা, গাঢ় ম্যাজেন্টা ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের গাঢ় রঙের পোশাক পরার এখনই সময়। এই সময়ে হালকা রঙ মানানসই নয়। যেহেতু এ ঋতুতে কিছুটা ঠাণ্ডা বাতাস বয়, এ সময় ফুল স্লিভ কিংবা থ্রি-কোয়ার্টার আরামদায়ক হাতাওয়ালা পোশাক পরতে পারেন। বিয়ে বা কোনো অনুষ্ঠানে গেলেও ফুল হাতার পোশাক পরতে পারেন; বিশেষ করে কার্তিকের শেষের দিকে এবং অগ্রহায়ণ মাসে বড় হাতার পোশাক আপনাকে উষ্ণতা দেবে। এ সময়ে পরার জন্য সিল্কের পোশাকও কিন্তু মন্দ নয়। হেমন্ত ঋতুতে নিজেকে আরও সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারেন সিল্ক, জর্জেট ও মখমল পোশাকে। সারাবছরই সুতি কাপড় চলে। এই ঋতুতে একটু ভারী সুতার কাপড়, যেমনÑ খাদি বেশ আরামদায়ক। পরতে পারেন খাদি, সিল্ক, জর্জেট, লিনেন, কটন, ধুপিয়ান, ভয়েল, মসলিন, চিকেন ও তাঁতের কাপড়। এ ধরনের কাপড়ে নকশার জন্য যোগ করা হয় স্ক্রিন, ব্লক, এমব্রয়ডারিসহ বিভিন্ন ভ্যালুয়েশন। এই ঋতুতে তাঁতের পোশাকও বেশ আরামদায়ক। তাঁতের কাপড়ে নকশার জন্য ফ্যাশন হাউসগুলো বাটিক, স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক প্রিন্ট, ডিজিটাল প্রিন্টকে প্রাধান্য দিচ্ছে। কর্মজীবী নারী ও গৃহিণীদের জন্য আরামদায়ক পোশাক হলো সালোয়ার-কামিজ, কুর্তি। আর তা যদি হয় বাটিকের, তাহলে তো কথাই নেই। বাটিক ছাড়াও স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক প্রিন্টের শাড়ি ও কুর্তিতে স্বস্তি পাওয়া যায় এ সময়। কুর্তি সাশ্রয়ী দামে কেনা যায়। এতে আলাদা ঝুটঝামেলা নেই। কুর্তি পরা যায় প্যান্ট, টাইস, জ্যাগিংস, লেগিংসের সঙ্গে মিলিয়ে।

পোশাক পাবেন যেখানে

ওয়েস্টার্ন আউটফিটের জন্য যেতে পারেন ক্যাটস আই, এক্সট্যাসি, সারা এসব ফ্যাশন ব্র্যান্ডে। এগুলোতে বিভিন্ন কাটিংয়ের পোশাক পাবেন। এ ছাড়া দেশীয় ফ্যাশন হাউস বিশ্বরঙ, অঞ্জন’স, জেন্টল পার্ক-এ পাবেন পছন্দের দাওয়াতের পোশাক। নন-ব্র্যান্ডের পোশাক পাবেন বসুন্ধরা সিটি, নর্থ টাওয়ার, যমুনা ফিউচার পার্ক, নিউমার্কেট ও ঢাকা কলেজের বিপরীতে বদরুদ্দোজা মার্কেটে।