নিয়মিত চিকিৎসায় আর্থ্রাইটিস রোগে ভালো থাকা যায়
আর্থ্রাইটিস এমন একধরনের রোগ, যা শরীরের বিভিন্ন অস্থিসন্ধি বা জোড়াকে প্রভাবিত করে। এটি মূলত সংযোগস্থলের প্রদাহ, ব্যথা, ফোলা এবং হাড়ের ক্ষয় তৈরির জন্য পরিচিত। আর্থ্রাইটিসের বিভিন্ন ধরন। যেমন- অস্টিওআর্থ্রাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, গাউট ইত্যাদি।
যে কারণে হয় : আর্থ্রাইটিসের কারণ নির্ভর করে ধরনের ওপর। সাধারণ কারণ হলো, বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অস্থিসন্ধির ক্ষয় ও হাড়ের ঘর্ষণ বেড়ে যায়, যা অস্টিওআর্থ্রাইটিসের প্রধান কারণ। কিছুটা বংশগত কারণেও হয়ে থাকে। কিছু মানুষের শরীরে জিনগতভাবে এ রোগের ঝুঁকি বেশি। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভুলক্রমে নিজ অস্থিসন্ধিকে আক্রমণ করে। এটি একটি অটোইমিউন রোগ। কোনো ধরনের গুরুতর আঘাত বা সংযোগস্থলের বারবার ক্ষতি অস্থিসন্ধিতে দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। অতিরিক্ত ওজন অস্থিসন্ধির ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, যা হাড় ও কার্টিলেজ ক্ষতি করে আর্থ্রাইটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
এছাড়া কিছু সংক্রমণ বা অন্যান্য রোগ, যেমন- ফিজিওথেরাপি : আর্থ্রাইটিসে ফিজিওথেরাপি একটি গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা পদ্ধতি, যা জোড়ার ব্যথা, প্রদাহ এবং কার্যক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি ওষুধ বা অস্ত্রোপচারের বিকল্প নয়, বরং চিকিৎসার একটি সম্পূরক অংশ হিসেবে কাজ করে। ফিজিওথেরাপি মূলত শরীরের চলাচল ও নমনীয়তা বাড়াতে, জোড়ার শক্তি বৃদ্ধি করতে এবং ব্যথা কমাতে ব্যবহৃত হয়। ওজন নিয়ন্ত্রণ ও ব্যায়াম। হালকা থেকে মাঝারি ব্যায়াম, যেমন- হাঁটাহাঁটি, সাঁতার, সাইক্লিং ইত্যাদি অস্থিসন্ধিকে শক্তিশালী ও নমনীয় রাখে। এছাড়া সুস্থ ওজন বজায় রাখলে অস্থিসন্ধিতে চাপ কমে।
উপযুক্ত খাদ্যাভ্যাস: ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাদ্য, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন-ডি-সমৃদ্ধ খাবার হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়তা করে। পানি বেশি পান করা এবং অ্যালকোহল ও উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকা গাউটের মতো আর্থ্রাইটিসের নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। অস্থিসন্ধির খুব বেশি ক্ষতি হলে কখনো কখনো অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হয়। এতে জোড়া প্রতিস্থাপন (জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট), অ্যানকাইলোসিস (হাড় জোড়া করা) বা অর্থোস্কোপি (মেরামত অস্ত্রোপচার) করা হয়।
আরও পড়ুন:
শীতে গর্ভবতী মায়েদের যত্ন
জীবনযাত্রার পরিবর্তন : দৈনন্দিন কাজের সময় অস্থিসন্ধির ওপর কম চাপ দেওয়ার জন্য সঠিক অঙ্গভঙ্গি, আরগোনমিক আসবাব এবং উপকরণ ব্যবহার করা জরুরি।
আর্থ্রাইটিসের প্রতিরোধে করণীয় : নিয়মিত ব্যায়াম করা। সুষম খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা। আঘাত থেকে অস্থিসন্ধি রক্ষা করা। দীর্ঘ সময় ধরে এক ভঙ্গিতে বসা বা দাঁড়িয়ে থাকা থেকে বিরত থাকা। চলুন, সবাই প্রতিজ্ঞা করি, আর্থ্রাইটিসের বিরুদ্ধে সচেতন হই, পদক্ষেপ নেই এবং স্বাস্থ্যবান সমাজ গড়ে তুলি।
লেখক : চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট
আরও পড়ুন:
জরায়ুমুখ ক্যানসারের লক্ষণগুলো জেনে রাখুন
ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল
ধানমন্ডি, আবাসিক এলাকা, ঢাকা
হটলাইন : ০১৭৮৭১০৬৭০২
আরও পড়ুন:
শীতে মুলা কেন খাবেন?