সেনা হেফাজতে থাকাদের কোন কারাগারে রাখা হবে, ঠিক করবেন ট্রাইব্যুনাল

অনলাইন ডেস্ক
১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২০:৫৫
শেয়ার :
সেনা হেফাজতে থাকাদের কোন কারাগারে রাখা হবে, ঠিক করবেন ট্রাইব্যুনাল

সেনাবাহিনীর হেফাজতে থাকা কর্মকর্তাদের কোন কারাগারে রাখা হবে তা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ঠিক করবেন বলে জানালেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। ঢাকা সেনানিবাসের ভেতরে একটি ভবনকে সাবজেল ঘোষণা নিয়ে আজ সোমবার সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘সরকার যদি কোনো নির্দিষ্ট জায়গাকে সাবজেল ঘোষণা করে, সরকারের সে ক্ষমতা আছে। সেটা সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, যখন কোনো আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হবে, আইন–শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী সেটা তামিল করবেন। কাউকে গ্রেপ্তার করে সরাসরি জেলে নেওয়ার বিধান নেই। আইন হচ্ছে— আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে আনতে হবে। তখন যদি আদালত পুনরায় আদেশ দিয়ে বলেন– কারাগারে পাঠাতে, তখন সেটা কেন্দ্রীয় কারাগারও হতে পারে, জাতীয় সংসদ ভবনে হতে পারে, এমপি হোস্টেল হতে পারে বা অন্য কোনো জায়গাকে সরকার যদি কারাগার ঘোষণা করে, সেখানেও পাঠানো যেতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘কোন জায়গাকে কারাগার করা হচ্ছে, সেটা প্রসিকিউশন বা তদন্ত সংস্থার বিবেচন্য বিষয় নয়। আমাদের বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে, আইন অনুযায়ী কাজটি করতে হবে। কাউকে গ্রেপ্তার করা হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে আদালতে হাজির করতে হবে। তারপর আদালত (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল) যেখানে রাখতে বলবেন, সেখানেই পাঠানো হবে। প্রত্যেকেই আইনের দৃষ্টিতে সমান। এখানে কারও উচু মর্যাদা, কারও নিচু মর্যাদা, কাউকে অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়ার সুযোগ নেই।’

সেনাবাহিনীর গ্রেপ্তারের ক্ষমতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রেপ্তারকারী কর্তৃপক্ষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মানেই পুলিশ। সেনাবাহিনীর সঙ্গে গ্রেপ্তারের কোনো সম্পর্ক নেই। আদেশটি পালনের বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের সেনা অফিসকে শুধু অবহিত করা হয়েছে। তারা গ্রেপ্তার করবেন না। তারা শুধু অবহিত থাকবেন। পুলিশ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল করতে গেলে তারা অবহিত থাকলে তামিল করতে সাহায্য করতে পারবেন। গ্রেপ্তারের ক্ষমতা শুধু পুলিশের, অন্য কারও না। আর গ্রেপ্তার দেখানোর পর আদালতে আনতে হবে। গ্রেপ্তার না দেখালে ২৪ ঘণ্টার আইন প্রযোজ্য না।’

গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা দুই মামলায় গত বুধবার ১৫ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। এরপর গত শনিবার চাকরিরত ১৪ জন ও এলপিআরে থাকা একজনকে সেনা হেফাজতে নেওয়ার কথা জানায় সেনাসদর।

গতকাল রবিবার ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ১৮৯৮ সালের বাংলাদেশ ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪১(১) ক্ষমতাবলে ১৮৯৪ সালের দ্য প্রিজন অ্যাক্টের ধারা ৩(বি) অনুসারে ঢাকা সেনানিবাসস্থ বাশার রোডসংলগ্ন উত্তর দিকে অবস্থিত ‘এম ই এস’ ভবন নম্বর ৫৪–কে সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হলো।