শাহবাগী বুদ্ধিজীবীরা ফ্যাসিবাদ দীর্ঘায়িত করেছিল: সাদিক কায়েম

জবি প্রতিনিধি
১৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:৩৬
শেয়ার :
শাহবাগী বুদ্ধিজীবীরা ফ্যাসিবাদ দীর্ঘায়িত করেছিল: সাদিক কায়েম

ডাকসুর ভিপি ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক আবু সাদিক কায়েম বলেছেন, ২০১৩ সালের শাহবাগ ও তথাকথিত কিছু বুদ্ধিজীবীরা দেশে স্বৈরাচারী হাসিনার ফ্যাসিবাদকে দীর্ঘায়িত করেছিল।

আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আয়োজিত শহীদ ইকরামুল হক সাজিদ স্মৃতি আন্তঃবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

আবু সাদিক কায়েম বলেন, ‘মুক্তির জন্যই আমরা বিগত ১৬ বছর লড়াই করেছি। কিন্তু সমাজের বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, শিক্ষকদের একটা অংশ মুক্তির পক্ষে কথা বললেও কৌশলে শেখ হাসিনার জুলুম নির্যাতনের পক্ষে সমর্থন দিছিল। এইসব বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে হিপোক্রেসি ছিল।’

তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের শিবির ট্যাগ দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছিল। এই ক্যাম্পাসে শিবির ট্যাগ দিয়ে বিশ্বজিৎকে হত্যা করা হয়েছিল। শিবির বলে ট্যাগ দিলেই সকল বুদ্ধিজীবী চুপ হয়ে যেত। এভাবে তারা হিপোক্রেসি দেখিয়েছে। ২০১৩ সালের শাহবাগ ও বুদ্ধিজীবীদের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ দীর্ঘায়িত হয়েছিল।’

ডাকসুর ভিপি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি গুম কমিশনের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এককভাবে জামায়াত আর শিবির মিলে দেশে সবচেয়ে বেশি গুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। আর বিএনপির পর আলাদা সংগঠন হিসেবে এককভাবে শিবির সবচেয়ে বেশি গুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। আমাদের অনেক ভাই এখনো গুম আছে।’

আবু সাদিক কায়েম বলেন, ‘আমাদের নিজেদের মধ্যে যৌক্তিক আলোচনা পর্যালোচনা অব্যাহত রাখা দরকার। এই জন্য বিতর্কটি বেশি দরকার। সকল দলই এ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে বলে আশা রাখি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এখনো আমরা একাডেমিক ইনস্টিটিউট করতে পারিনি। আমাদের পাশের নেপালও শিক্ষায় অনেক এগিয়ে। কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে মেধার চর্চা হওয়া উচিত ছিল, তা আমরা পারিনি।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ বিলাল হোসাইন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ ভালো মানুষ তৈরি করা। জ্ঞাননির্ভর সমাজ ও মানুষ তৈরি করা। জবি শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি এই কাজ চালিয়ে যাবে বলে আমি আশা রাখি।’

বিতর্কে বিরোধী দল হিসেবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইতিহাস বিভাগ এবং সরকারি দল হিসেবে রানার্স আপ হয়েছে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ। ফাইনাল বিতর্কে সেরা বিতার্কিক হয়েছেন জয়ী দলের রুকসানা মিতু।

‘জকসু নির্বাচনে এই সংসদ অরাজনৈতিক প্রার্থীদের সমর্থন দিবে’ মোশনের ওপর বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রতিযোগিতায় মোট ২৪টিম অংশগ্রহণ করে। প্রত্যেক টিমে তিনজন করে বিতার্কিক অংশগ্রহণ করে। বিতর্কটি ট্যাব ফরমেটে হয়। ট্যাব পর্বে প্রত্যেক টিম তিন রাউন্ড বিতর্ক করার সুযোগ পায়।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম, আর সঞ্চালনায় ছিলেন শাখা সেক্রেটারি আব্দুল আলিম আরিফ। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শহীদ ইকরামুল হক সাজিদের বড় বোন ফারজানা হক।

অনুষ্ঠানে দর্শক-শ্রোতা হিসেবে বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।