ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী হলে নেই নারী প্রভোস্ট

ইবি সংবাদদাতা
০১ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:২৪
শেয়ার :
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী হলে নেই নারী প্রভোস্ট

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) তিনটি ছাত্রী হলের কোনোটিতেই নেই নারী প্রভোস্ট। সবগুলো হলে পুরুষ শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বাচ্ছন্দ্য, নিরাপত্তা ও নারীবান্ধব পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বর্তমানে জুলাই-৩৬ হলে দায়িত্বে আছেন অধ্যাপক ড. একেএম শামসুল হক, উম্মুল মু’মিনীন আয়েশা সিদ্দিকা হলে অধ্যাপক ড. একেএম রাশেদুজ্জামান এবং খালেদা জিয়া হলে অধ্যাপক ড. জালাল উদ্দিন।

তিনটি হলে ‘হল টিউটর’ পদে কয়েকজন নারী শিক্ষক রয়েছেন, তবুও সর্বোচ্চ প্রশাসনিক দায়িত্বে (প্রভোস্ট) একজনও নারী নেই। জুলাই-৩৬ হলে দুইজন টিউটরের একজন, খালেদা জিয়া হলে চারজনের মধ্যে দুইজন এবং আয়েশা সিদ্দিকা হলে তিনজনের একজন নারী শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ছাত্রীদের অভিযোগ, নারী প্রভোস্ট না থাকায় অনেক সময় তাদের সমস্যাগুলো যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয় না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সারাবান তহুরা বলেন, ‘ছাত্রী হলে নারী প্রভোস্ট থাকা শুধু প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নয়, এটি নিরাপত্তা ও দায়িত্ববোধের অংশ। একজন নারী প্রভোস্ট থাকলে স্বাস্থ্য, অসুস্থতা কিংবা আবাসন সমস্যাগুলো সহজে বোঝা ও সমাধান করা সম্ভব হতো।’

জুলাই-৩৬ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নওরিন আক্তার তুষি বলেন, ‘হলে পুরুষ প্রভোস্ট থাকায় মাঝে মাঝে আমরা বিব্রত হই। মুসলিম ছাত্রীদের জন্য পর্দার বিষয়টি রয়েছে। স্যার ফ্লোরে এলে আয়া অ্যালার্ম দিলেও বিষয়টি অস্বস্তিকর লাগে। এছাড়া বিদ্যুৎ বা বাথরুম সংক্রান্ত কাজেও পুরুষ কর্মচারীদের বেশি আসা-যাওয়া হয়, যা নারী কর্মীদের মাধ্যমে করানো যেত।’

কেন ছাত্রী হলে নারী প্রভোস্ট নেই—এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘আমরা চাই মেয়েদের হলে নারী প্রভোস্ট দিতে। তবে নারী অধ্যাপকের সংখ্যা তুলনামূলক কম। এর সঙ্গে রাজনৈতিক বিবেচনাও জড়িত থাকে। আগে যারা ছাত্রী হলে দায়িত্বে ছিলেন তারা আওয়ামীপন্থি বা জুলাই গণঅভ্যুত্থানবিরোধী শিক্ষক ছিলেন। তাই সংকট তৈরি হয়েছে।’

এরই মধ্যে, গত ২৭ সেপ্টেম্বর তিন ছাত্রী হলের বর্তমান প্রভোস্টদের মেয়াদ শেষ হলেও তাদেরকে পুনরায় আরো এক বছরের জন্য নিয়োগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফলে আগামী এক বছরও ছাত্রী হলগুলোতে নারী প্রভোস্ট থাকছে না।