অল্প যত্নেই রান্নাঘর ঝকঝকে
আশ্বিন মাসে আর্দ্রতা বেশি থাকে। ফলে রান্নাঘরে দ্রুত দুর্গন্ধ, ফাঙ্গাস কিংবা পোকামাকড় জন্ম নিতে পারে। যেহেতু রান্নাঘর একটি ঘরের প্রাণকেন্দ্র, এখানেই প্রতিদিনের খাবার তৈরি হয়, তাই রান্নাঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাটা খুব জরুরি।
ঝকঝকে রান্নাঘর শুধু সুন্দর দেখায় না, আমাদের জীবনকে সহজ, স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ ও স্বাস্থ্যকর করে তোলে। পরিষ্কার রান্নাঘরে খাবার নিরাপদ থাকে এবং সুস্থ থাকা সহজ হয়। সব জিনিস ঠিক জায়গায় থাকলে রান্না দ্রুত ও আনন্দদায়ক হয়। পরিচ্ছন্ন রান্নাঘরে খাবারের ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু কম থাকে, ফলে খাদ্যজনিত অসুস্থতার ঝুঁকি কমে যায়। পরিচ্ছন্নতা মনকে শান্তি দেয় এবং কাজ করতে ভালো লাগে। নিয়মিত ঝকঝকে এবং যতেœ রাখলে চুলা, ফ্রিজ ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি দীর্ঘদিন ভালো থাকে। এ ছাড়া পরিবারের সবাই ও এমনকি অতিথিরাও পরিচ্ছন্ন পরিবেশে স্বাচ্ছন্দ্য এবং স্বস্তি অনুভব করে। রান্নাঘর অগোছালো থাকলে শুধু অস্বস্তিই নয়, নানা ধরনের পোকামাকড় যেমন তেলাপোকা, পিঁপড়ে, মাছি বা ইঁদুরও ভিড় জমাতে শুরু করে। এগুলো শুধু খাবার নষ্ট করে না, বরং স্বাস্থ্যের জন্যও মারাত্মক ক্ষতিকর। কিছু সচেতন অভ্যাস এবং ঘরোয়া টিপস মেনে চললে রান্নাঘর থাকবে পরিচ্ছন্ন ও পোকামাকড়মুক্ত।
সাফ-সুতরো রান্নাঘরের দৈনন্দিন যত্ন
হ চুলা, সিঙ্ক ও কাউন্টার টপ প্রতিদিন সাবান বা লবণ মেশানো পানি দিয়ে পরিষ্কার করুন।
হ মেঝে প্রতিদিন মুছে ঝকঝকে রাখুন, তেল বা খাবারের দাগ জমতে দেবেন না।
হ ভেজা বাসন সঙ্গে সঙ্গে ধুয়ে ফেলুন।
হ খাবার সব সময় এয়ারটাইট কনটেইনারে রাখুন।
হ আবর্জনা দ্রুত ফেলে দিন এবং ডাস্টবিন সব সময় ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখুন।
আরও পড়ুন:
শীতে গর্ভবতী মায়েদের যত্ন
হ বাজার থেকে আনা ফল ও সবজি ধুয়ে শুকিয়ে সংরক্ষণ করুন।
হ ড্রেন নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন।
হ সপ্তাহে একবার চুলা, ফ্রিজ, জানালা, মেঝে ও আলমারি ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।
হ ফ্রিজে পুরনো খাবার জমে রাখবেন না; বোতল ও শেলফ নিয়মিত ধুয়ে নিন।
হ রান্নাঘরে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল নিশ্চিত করুন।
হ লেবু, ভিনেগার বা বেকিং সোডা দিয়ে দাগ তুললে রাসায়নিক ছাড়াই ঝকঝকে থাকবে।
হ ঘরোয়া উপায়ে পোকামাকড় তাড়ান-
আরও পড়ুন:
জরায়ুমুখ ক্যানসারের লক্ষণগুলো জেনে রাখুন
হ নিমপাতা চাল, ডাল বা আলমারিতে রাখলে পিঁপড়ে ও তেলাপোকা দূরে থাকে।
হ তেজপাতা শস্য কৌটায় রাখলে পোকামাকড় ঢুকতে পারে না।
হ লেবু ও ভিনেগার মেঝে ও সিঙ্ক মুছে পোকা দূরে রাখুন।
হ বেকিং সোডা ও চিনি বেশি জায়গায় ছিটিয়ে দিন যাতে পিঁপড়ে না আসে।
হ লবঙ্গ মসলা শস্যে রাখলে পোকা জন্মায় না।
হ শসার খোসা রান্নাঘরের কোণে রাখলে তেলাপোকা চলে যায়।
হ কফির গুঁড়া কোণে ছিটিয়ে দিলে পিঁপড়ে ও ছোট পোকা দূরে থাকে।
আরও পড়ুন:
শীতে মুলা কেন খাবেন?
হ ল্যাভেন্ডার বা পুদিনাপাতা আলমারি বা ড্রয়ারে রাখলে পোকা পালায়।
হ লবণ মাছ-মাংস-সবজি পরিষ্কার, দুর্গন্ধ দূর ও পিঁপড়ে তাড়াতে সাহায্য করে।
সামান্য সচেতনতা ও নিয়মিত যত্নই রান্নাঘরকে ঝকঝকে ও পোকামাকড়মুক্ত রাখে। পরিচ্ছন্নতা ও সুশৃঙ্খলতা জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রেও নিয়ম ও সচেতনতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। রান্নাঘর ঝকঝকে রাখা আমাদের অভ্যাস ও মানসিকতাকেও প্রভাবিত করে। শুধু শারীরিক স্বাস্থ্য নয়, মানসিক শান্তি ও সাংসারিক সুখও বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাই ছোট ছোট যত্ন এবং সচেতনতা আমাদের রান্নাঘরকে সুস্থ, সুন্দর এবং আনন্দময় রাখার এক শক্তিশালী উপায়।