পূজার পাঁচ দিন সাজ পোশাক
পূজা মানেই এক বছর ধরে অধীর আগ্রহে তার অপেক্ষায় থাকা। এই কটা দিন ফ্যাশন থেকে খাওয়া-দাওয়া সবই তো চাই মনের মতো। পূজার কোন দিন কী পরবেন, কেমন সাজবেন কিছু ভাবলেন? ষষ্ঠী থেকে নবমীর সাজের কিছু টিপস রইল এই প্রতিবেদনে।
যেহেতু দুর্গাপূজা বেশ অনেকদিন ধরে থাকে তাই অনেক অপশনও হাতে থাকে বলে মনে করেন শোভন মেকওভার বিউটি ক্লিনিক অ্যান্ড মেকওভার স্যালুনের কস্মোটোলজিস্ট, স্বত্বাধিকারী শোভন সাহা। পূজার কয়েক দিনে ওয়েস্টার্ন বা ট্রেডিশনাল সব ধরনেরই লুক নেওয়ার সুযোগ থাকে। এখন আবহাওয়াটা বেশ গরম, তাই সকাল এবং দুপুরে সুতিকে প্রাধান্য দিয়ে রাতে কাতান, বেনাসরি বা জাঁকজমকপূর্ণ কাপড় পরা যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি। তবে সাজের ক্ষেত্রে খুব ন্যাচারাল লুক দিনে দিতে বললেন তিনি। সে ক্ষেত্রে চুলও বেণি বা নানান হেয়ারস্টাইল করা যেতে পারে। রাতের বেলা সাজটা হবে গর্জিয়াস। আই মেকআপ, নেইল সবকিছুই রাতে করা যায় তবে অবশ্যই পোশাকের অনুষঙ্গের সঙ্গে মিল রেখেই সাজের পরমর্শ দিলেন শোভন সাহা।
ষষ্ঠীতে স্নিগ্ধতা
ষষ্ঠীর দিনের সাজ হবে শরতের মতো স্নিগ্ধ। হালকা রঙের শাড়ি কিংবা সাদা শাড়িতে ডার্ক কালারের পাড় বসানো এমন পোশাক থাকতে পারে পছন্দের তালিকায়। চাইলে সুতির শাড়ি, মণিপুরী বা তাঁতের শাড়ি পরতে পারেন। যারা গরমে শাড়ি পরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না তারাও একই কালার প্যালেটের সালোয়ার-কামিজ বা কুর্তি গায়ে জড়াতে পারেন অথবা ওয়েস্টার্ন কোনো পোশাক।
সপ্তমীর শুভ্রতায়
সপ্তমীর দিন উৎসবের আমেজ ফুটিয়ে তুলতে পরতে পারেন জামদানি শাড়ি। এখন লাল-সাদার পাশাপাশি হলুদ, কমলা, সবুজ, মেরুন রঙের শাড়িও বেশ চলছে। শাড়ি পরতে না চাইলে জর্জেট বা সিল্কের কুর্তি, থ্রিপিস বা গাউন পরতে পারেন। সঙ্গে নিতে পারেন চুনড়ি বা শিফনের ওড়না।
অষ্টমীর ঘোরাঘুরি
আরও পড়ুন:
শীতে গর্ভবতী মায়েদের যত্ন
অষ্টমীর দিন রাজশাহী সিল্ক, হাফসিল্ক, কাতান, জামদানি, মসলিন, জর্জেট যে কোনো ধরনের শাড়ি গায়ে জড়াতে পারেন। আগের দিন যদি গাঢ় রঙের পোশাক বাছাই করে থাকেন, অষ্টমীর জন্য হালকা রঙের পোশাক বাছাই করুন। এতে সাজে বৈচিত্র্য থাকে। এ ছাড়া এমব্রয়ডারি, কারচুপি কারুকাজের লেহেঙ্গা বা স্কার্ট পরতে পছন্দ করেন অনেকে।
নবমীর ব্যস্ততায়
নবমীর দিন উজ্জ্বল রঙের পোশাকে নিজেকে সাজিয়ে প্রজাপতির মতো উড়ে বেড়ান ম-পে ম-পে। নীল, সবুজ, লাল, বেগুনি আপনার পছন্দের যে কোনো রঙের শাড়িতে ঠাকুর দেখতে চলে যান। নবমীর দিন সুতির শাড়ি না পরে কাতান বা সিল্কজাতীয় শাড়ি বাছাই করতে পারেন।
আসছে বছর আবার হবে
আরও পড়ুন:
জরায়ুমুখ ক্যানসারের লক্ষণগুলো জেনে রাখুন
পূজার শেষ দিনটি অর্থাৎ দশমীর দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে বিশেষভাবে নিজেকে সাজিয়ে তুলুন। যতই নানা রঙের শাড়ির চল থাকুক না কেন, লাল পেড়ে সাদা শাড়ির আবেদন নারীর কাছে অন্যরকম। তাই দশমীর দিন লাল-সাদা শাড়ি জড়িয়ে মায়ের সামনে দাঁড়ান। অন্যান্য রঙ যেমন বাদামি, খয়েরি, মেরুন, বাসন্তি শাড়িও পরতে পারেন।
পোশাক মিলিয়ে সাজ
পুজোয় স্নিগ্ধ সকাল শুরু করতে পারেন হালকা সাজের মধ্য দিয়ে। পুজোর সময় দিনের বেলার সাজ বেশ উজ্জ্বল তবে হালকা বেজ মেকআপে রাখা ভালো হবে। কারণ দিনের বেলা মন্দিরে অঞ্জলি দেওয়ার সময় যেন চেহারায় স্নিগ্ধভাব বজায় থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বিবি ক্রিম লাগানোর আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না। এর পর ফেসপাউডার দিয়ে সেট করে নিতে পারেন। হালকা পিচ, গোলাপি, বাদামি রঙের ব্লাশন দিতে পারেন। আইশ্যাডো না দিয়ে মাশকারা, আইলাইনার বা কাজল পরতে পারেন। পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে ঠোঁটে লাগাতে পারেন লিপস্টিক বা কোরাল অথবা যে কোনো ন্যুড রঙের লিপস্টিক।
পূজায় রাতের সাজ
সন্ধ্যার পর প্যান্ডেলে ঘুরতে যান অনেকে। তখন একটু গাঢ় করে নিজেকে সাজিয়ে নিতে পারেন। মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিন। এর পর ময়েশ্চারাইজ লাগিয়ে নিন। চোখের আশপাশে দাগ থাকলে সেটা ঢাকার জন্য স্কিন টোনের সঙ্গে মিলিয়ে লাগিয়ে নিতে পারেন কন্সিলর। এর পর স্কিন শেড মিলিয়ে ফাউন্ডেশন লাগিয়ে নিন। বিউটি ব্ল্যান্ডার বা স্পঞ্জ দিয়ে বেইজ মেকআপ করে নিন। আইব্রো আঁকিয়ে গাঢ় আইশ্যাডো দিতে পারেন। চোখে লাগাতে পারেন ফলস আইল্যাশ। সঙ্গে দিয়ে নেবেন আইলাইনার ও মাশকারা। ব্লাশ, কন্টরিং এর পর হাইলাইট করতে পারেন। ঠোঁট এঁকে নিতে পারেন গাঢ় রঙের লিপস্টিকে।
এবার ছেলেদের পোশাকেও নতুনত্ব
আরও পড়ুন:
শীতে মুলা কেন খাবেন?
বর্তমানে ছেলেদের সনাতনী সাজ মানেই একঘেয়ে পাঞ্জাবি নয়। তাতেও বৈচিত্র্য থাকতে পারে। চাই ঠিক পোশাক নির্বাচন। শর্ট আফগানি স্টাইলের কুর্তার সঙ্গে ধুতি প্যান্টস পরতে পারেন। বন্ধগলার সঙ্গে চুড়িদারও ভালো দেখাবে। ছিমছাম পাঞ্জাবির ওপর খাদি জ্যাকেট চাপিয়ে নিলেই সাজ অন্য রকম হয়ে যাবে। একটু জমকালো সাজের জন্য পাঞ্জাবির ওপর লেয়ার করে পরতে পারেন লং জ্যাকেটও। পুজোর সাজে নতুনত্ব না থাকলে কী আর চলে? তাই একই প্যাস্টেল শেডের রং না বেছে, বরং বেগুনি, পেস্তা সবুজ, অ্যাকোয়া নীল রংও বেছে নিতে পারেন। ছেলেদের পোশাকেও এখন জামদানি কাজ লক্ষ করা যাচ্ছে। একটু খুঁজলেই ডিজাইনার পোশাক পেয়ে যাবেন। এখন তো ডিজিটাল প্রিন্টের টি-শার্টও পাওয়া যাচ্ছে। সাধারণ সাজকেও অন্যরকম করতে টি-শার্টের ওপর লেয়ার করে পরতে পারেন ক্যাজুয়াল ব্লেজার।