রাবিতে ফিরল পোষ্য কোটা, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ছেলে-মেয়েদের শর্তসাপেক্ষে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় (পোষ্য কোটা) ভর্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হয় বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে জানানো হয়।
পোষ্য কোটা পুনরায় চালুর খবর প্রকাশ পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের শীর্ষ নেতারাও অংশ নেন।
উপাচার্যের দায়িত্বে নিযুক্ত উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন। প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় ভর্তির শর্তসমূহ হচ্ছে ১. কেবলমাত্র রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঔরসজাত/গর্ভজাত সন্তান এই ভর্তির সুযোগ পাবে; ২. ভর্তির প্রাথমিক আবেদনের জন্য বিজ্ঞাপিত যোগ্যতা এবং শর্ত এক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে; ৩. মেধার ভিত্তিতে ভর্তির জন্য নির্ধারিত আসনসংখ্যার অতিরিক্ত হিসেবে এ প্রক্রিয়ায় ভর্তির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে; ৪. ভর্তির ক্ষেত্রে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনা করে মেধা অনুসরণ করা হবে; ৫. ভর্তির আবেদন বিবেচনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্ধারিত শর্তাবলীসহ অবশ্যই ন্যূনতম পাস নম্বর থাকতে হবে; ৬. কোনো বিভাগে ২ জনের অধিক ভর্তির সুযোগ থাকবে না; ৭. কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানকে তার কর্মরত বিভাগে ভর্তি করানো যাবে না; ৮. এ সুবিধার আওতায় নিজেদের মধ্যে ‘অটো মাইগ্রেশন’ ছাড়া শিক্ষার্থীর বিভাগ পরিবর্তনের অন্য কোনো সুযোগ থাকবে না; ৯. ভর্তির ক্ষেত্রে এবং পরবর্তীতে কোনো অভিভাবকের অনিয়মের আশ্রয় নেয়ার বিষয় প্রমাণিত হলে ছাত্রত্ব বাতিলসহ সংশ্লিষ্ট অভিভাবকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে মর্মে অঙ্গিকারনামায় উল্লেখ করতে হবে; ১০. এ সুবিধার আওতায় ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী কোনোভাবেই আবাসিক হলে সিটের জন্য আবেদন করার সুযোগ পাবে না।
পোষ্য কোটা চালুর খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের ডাক দেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। পরে সেই বিক্ষোভে যোগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলসহ ক্যাম্পাসের একাধিক রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের কর্মীরা এবং বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা ‘ভিক্ষা লাগলে ভিক্ষা নে, পোষ্য কোটার কবর দে’, ‘কোটা না মেধা মেধা, মেধা মেধা’, ‘২৪-এর হাতিয়ার গর্জে ওঠো আরেকবার’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে পোষ্য কোটা বাতিল করা হয়েছিল। সেই পোষ্য কোটা আর কোনোভাবেই ফিরতে দেওয়া হবে না। প্রশাসন রাকসু বানচাল করার জন্য এমন উদ্যোগ নিয়েছে।
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
প্রশাসনের উদ্দেশে রাকসুতে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবীর বলেন, ‘মীমাংসিত পোষ্য কোটাকে সামনে এনে রাকসু বানচালের পায়তারা করলে আপনাদের অবস্থা কিন্তু হাসিনার চেয়ে খারাপ হবে।’
উল্লেখ্য, আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর শুরু হবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন।