তিন দফা দাবিতে ৩০ ঘণ্টা ধরে অনশনে জবির ৫ শিক্ষার্থী
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণাসহ তিন দফা দাবিতে টানা ২৯ ঘণ্টা ধরে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষার্থী। তবে এখনও কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত আসেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে।
আজ বুধবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রায় ৩০ ঘণ্টা ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহিদ রফিক ভবনের সামনে অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার দুপুর থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের নিচে তিন দফা দাবিতে এ কর্মসূচি শুরু করেন শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদ এবং বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পাঁচ নেতা।
অনশন কর্মসূচিতে রয়েছেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের মো. ফয়সাল মুরাদ, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ফেরদৌস শেখ, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের বোটানি বিভাগের এ কে এম রাকিব, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ইতিহাসের শাহিন মিয়া এবং ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অপু মুন্সি।
অনশনরত এ কে এম রাকিব বলেন, ‘আমরা তিন দফা দাবিতে অনশন করছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখন পর্যন্ত আমাদের দাবিগুলো পূরণের ব্যাপারে কোনো আশ্বাস দেয় নি। আমাদের দাবিগুলো পূরণে কোনো প্রকার যদি বা কিন্তু থাকবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি পূরণ না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা অনশন চালিয়ে যাবো।’
ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘জকসুর ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো রোডম্যাপ দেয়নি। জকসুর ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনো রোডম্যাপ না দেওয়া পর্যন্ত আমরা অনশন চালিয়ে যাবো।’
এদিকে আজ বুধবার অনশনে অংশ নেওয়া পাঁচজনের মধ্যে তিনজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় তাদের স্যালাইন দেওয়া হয়। এ সময় শাখা ছাত্রদল, শিবির, আপ বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের সংহতি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো- শিক্ষার্থীদের সম্পূরক বৃত্তি কবে থেকে কার্যকর হবে, তা নির্দিষ্ট করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে; ক্যাফেটেরিয়ার ভর্তুকি প্রদান করে স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রন নিশ্চিত করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের এই দাবি আমাদেরও। শিক্ষার্থীদের জন্য যেটা ভালো ও মঙ্গলজনক হবে সেটাই হবে।’
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জকসু নীতিমালা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফয়েজের সঙ্গে দেখা করেছে জবি শাখা ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দ। এ সময় ইউজিসি চেয়ারম্যান জবি শিক্ষার্থীদের জন্য সম্পূরক বৃত্তির অর্থ নভেম্বরে প্রদান ও অতি শ্রীঘই মন্ত্রনালয় থেকে জকসু নীতিমালা বিধি আকারে প্রণয়ন করতে তিনি চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন।