হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে আজও ট্রাইব্যুনালে নাহিদ
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ঘিরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
আজ বুধবার দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের দিকে রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষী দিতে আসেন তিনি। এর আগে মঙ্গলবারও সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে এসেছিলেন নাহিদ।
তবে এর আগে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের জেরা শেষ না হওয়ায় মঙ্গলবার তার সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। বুধবার মাহমুদুর রহমানের জেরা শেষ হয়েছে। তাই এদিন দুপুরে নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্য নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম জানান, আজই নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্য নেওয়া হবে।
জানা যায়, জুলাই-আগস্টের হত্যাযজ্ঞ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিচার শেষ পর্যায়ে রয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ অধ্যায়।
এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর ১৪তম দিনের মতো এ মামলায় ছয়জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত মোট ৪৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ রেকর্ড করেছেন ট্রাইব্যুনাল। ৮ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্য দেন তিনজন।
গত ২ সেপ্টেম্বর ৩৬ নম্বর সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন এ মামলার আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তার জেরা শেষ হয় ৪ সেপ্টেম্বর। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে জুলাই-আগস্টে গণহত্যা চালানো হয়েছে জানিয়ে তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। একই সঙ্গে অজানা অনেক তথ্য ট্রাইব্যুনালের সামনে এনেছেন।
আরও পড়ুন:
গণভবনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা
১ সেপ্টেম্বর দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। এদিন জবানবন্দি দিয়েছেন ছয়জন। এর মধ্যে চিকিৎসক-সাংবাদিক ও প্রত্যক্ষদর্শী রয়েছেন। সাক্ষীদের জবানবন্দিতে গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে দেশজুড়ে হত্যাযজ্ঞ চালানোর বীভৎস বর্ণনা উঠে এসেছে। আর এসবের জন্য দায়ী করে শেখ হাসিনা, কামালসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন শহীদ পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা।
উল্লেখ্য, গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার রয়েছে। সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন ৮১ জন। গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
আরও পড়ুন:
ভারত সফরে গেলেন প্রধান বিচারপতি