৭ দাবিতে অনশনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ শিক্ষার্থী
প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ ৭ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ৯ শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে বসেছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলমান থাকবে বলে জানিয়েছে তারা।
‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে আজ বুধবার দুপুর ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন কলা ভবন প্রক্টর অফিসের সামনে তারা এ কর্মসূচি শুরু করেন।
অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছিলেন- বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ওমর সমুদ্র, সংগীত বিভাগের ২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির, স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাংগঠনিক সম্পাদক রাম্রা সাইন মারমা, ইংরেজি বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর রাজনৈতিক শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক আহমেদ মুগ্ধ, একই বিভাগের দপ্তর সম্পাদক নাইম শাহ জান, বাংলা বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ও গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ধ্রুব বড়ুয়া, মার্কেটিং বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও নারী অঙ্গনের সংগঠক সুমাইয়া শিকদার, সংগীত বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সংগঠক ঈশা দে এবং বাংলা বিভাগের ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুদর্শন চাকমা।
অনশনরত বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ওমর সমুদ্র বলেন, ‘চবির ইতিহাসে শিক্ষার্থীদের ওপর সবচেয়ে নিকৃষ্ট হামলার পরও প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যর্থ হয়েছে, আহত ও উদ্বাস্তু শিক্ষার্থীদের সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের সাত দফা দাবির বাস্তবায়ন চাই। বাধ্য হয়ে আমরা অনশনে বসেছি। প্রশাসন যদি আমাদের দাবিগুলো অকপটে মেনে না নেয়, সেক্ষেত্রে দায়ভার তাদের। আমাদের লক্ষ্য রাজনৈতিক স্বার্থ নয়, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও স্বস্তি নিশ্চিত করা।’
আরেক শিক্ষার্থী ধ্রুব বড়ুয়া বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার পিছনে প্রক্টরিয়াল বডির ব্যর্থতার দায় আছে। তাছাড়া গত এক বছরের মধ্যে ক্যাম্পাসে গুপ্ত হামলা হয়েছে এবং নারী শিক্ষার্থী বহিষ্কারকে কেন্দ্র করে তাদের বিতর্কিত ভূমিকা রয়েছে। তারা তাদের দাবি যথাযথভাবে পালন করেনি। আমরা এই প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ দাবি করছি।’
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
তাদের দাবিগুলো হলো- সংঘর্ষের ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের পূর্ণ তালিকা প্রকাশ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসা প্রদান। নিরাপত্তাহীন অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য অবিলম্বে মানসম্মত ভ্রাম্যমাণ আবাসনের ব্যবস্থা করা এবং আবাসনচ্যুত শিক্ষার্থীদের মালামাল উদ্ধারে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ কর। উদ্ভূত পরিস্থিতিকে ঘিরে বিশেষভাবে চিহ্নিত শিক্ষার্থীদের সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা এবং নিরাপরাধ এলাকাবাসীদের হয়রানি বন্ধ করা। বৈপরিত্যমূলক দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসনে উভয়পক্ষের অন্তর্ভুক্তিমূলক সমন্বয় কমিটি গঠন করা এবং ন্যূনতম তিন মাস পরপর মিটিং করা। সিন্ডিকেট কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের রোডম্যাপ প্রকাশ ও বাস্তবায়ন করা। শিক্ষার্থী আহতের ঘটনায় প্রশাসনের ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে নিয়ে প্রক্টরিয়াল বডিকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে পদকাশ ও বাস্তবায়ন কর।