জ্বিন তাড়াতে গিয়ে মা-মেয়েকে হত্যা করেন কবিরাজ
ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ছাত্রী সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিনা বেগমকে শ্বাসরোধে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছেন আসামি মোবারক হোসেন। তিনি পেশায় কবিরাজ ও স্থানীয় এক মাদ্রাসার খাদেম। আজ মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তার আসামি মোবারক হোসেন কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার কাবিরপুর গ্রামের বাসিন্দা। গতকাল সোমবার ঢাকা পালিয়ে যাওয়ার পথে দুর্গাপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, নিহত সুমাইয়া কথিতভাবে ‘জ্বিনে ধরা’ সমস্যায় ভুগছিলেন। এ জন্য তার মা তাহমিনা বেগম বাবুস সালাম জমিরিয়া মাদ্রাসার ইলিয়াস হুজুরের কাছে ঝাড়ফুঁক করাতে যেতেন। এ সময় আসামি মোবারক হোসেনের সঙ্গে তাহমিনা বেগমের পরিচয় হয় এবং তিনি মোবারককে তার বাসায় এসে মেয়ের ওপর ঝাড়ফুঁক করার অনুরোধ জানান। এরপর আসামি একাধিকবার নিহতের বাসায় গিয়ে সুমাইয়া আফরিনকে ঝাড়ফুঁক করেন। প্রায় এক মাস ধরে আসামি নিয়মিতভাবে ওই বাড়িতে যাতায়াত করছিলেন।
তিনি আরও জানান, ঘটনার দিন সকাল সাড়ে আটটার দিকে মোবারক একটি কমলা রঙের শপিং ব্যাগ ও একটি কালো ব্যাগ নিয়ে নিহতের বাসায় প্রবেশ করেন। তিনি সেদিনও সুমাইয়াকে ঝাড়ফুঁক করেন এবং বাসায় পানি ছিটিয়ে দেন। তারপর সকাল ১১টা ২৩ মিনিটে বাসা থেকে বের হয়ে ১১টা ৩৪ মিনিটে তিনি আবার বাসায় ফিরে আসেন। ফিরে এসে দেখেন, তাহমিনা বেগম নিজের কক্ষে বিশ্রাম নিচ্ছেন। এরপর আসামি মোবারক সরাসরি সুমাইয়া আফরিনের কক্ষে গিয়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন।
এ সময় তাহমিনা বেগম ঘটনাটি দেখে ফেলেন এবং বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে মোবারক তাহমিনা বেগমকে তার কক্ষে নিয়ে গিয়ে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে তিনি আবার সুমাইয়ার কক্ষে প্রবেশ করে পুনরায় ধর্ষণের চেষ্টা করেন। কিন্তু সুমাইয়া প্রতিরোধ করলে আসামি তাকে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।
এ ছাড়া আসামির কাছে থেকে চুরি করা চারটি মোবাইল ও একটি ল্যাপটপ, মোবাইল ও ল্যাপটপের চার্জার উদ্ধার করা হয়েছে। আসামি নিহতের বাসায় কমলা রঙয়ের যে ব্যাগটি নিয়ে প্রবেশ করেছিলেন তা আসামির বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান বলেন, ‘প্রেস রিলিজে যা বলা হয়েছে তাই,তদন্তের স্বার্থে আর কিছু বলা যাবে না।’
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!