ক্লাস-পরীক্ষা চালুর দাবি শিক্ষার্থীদের, যা জানালেন বাকৃবি উপাচার্য
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) কম্বাইন্ড (বিএসসি ইন ভেট ও এএইচ) ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার ঘটনায় পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম এবং হল বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬টি অনুষদের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। চলমান এই সমস্যা সমাধানের জন্য উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪টি অনুষদের প্রতিনিধি শিক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার উপাচার্যের কার্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম ও হল খোলার বিষয়ে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে জানান, করোনাজনিত বিরতি ও জুলাই আন্দোলনের কারণে শিক্ষাবর্ষের দিক থেকে তারা অনেক পিছিয়ে আছেন। আবার ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় তাদের একাডেমিক কার্যক্রম পুরোপুরি স্থবির হয়ে গেছে। ফলে শিক্ষাবর্ষ দীর্ঘ হচ্ছে এবং চাকরির বয়সও বাড়ছে। সেই অনুযায়ী চাকরির অভিজ্ঞতা বাড়ছে না। তারা দ্রুত ক্যাম্পাস খুলে একাডেমিক কার্যক্রম চালুর দাবি জানান।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘একাডেমিক কাউন্সিল করে যে কোনো বিষয় পাশ-ফেল করার দায়িত্ব এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের। কম্বাইন্ড ডিগ্রির বিষয়টি সার্বিক চিন্তা করে ২৫১ জন শিক্ষকের সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়েছে। শিক্ষার্থীরা তাদের চাহিদা বলেছে, সেটা তারা বলতেই পারে। কিন্তু একাডেমিক কাউন্সিল কিভাবে আইন ও ন্যায্যতাকে অনুসরণ করে কাজ করবে, সেটি শিক্ষকরাই ভালো বোঝেন। এটা শিক্ষকদেরই কাজ। ৬৪ বছরের পুরোনো একটি ডিগ্রি বাতিল করে আমরা সেই ৬৪ বছর আগেই ফিরে যাচ্ছি কিনা—সেটা দুই থেকে চার বছর পরেই বোঝা যাবে।’
উপাচার্য আরও বলেন, ‘আমরা চাইনি আমাদের ছেলে-মেয়েরা বাসায় যাবে, ১৫ দিন পর আবার আসবে। তাদের খরচ, কষ্ট, মা-বাবার বিরক্তি, অনেকের বিসিএস এজন্য আমরা বিষয়টি এখনো পর্যালোচনা করছি। আমি যতক্ষণ পারবো ততক্ষণই সহ্য করব। আমরা ছাত্র-ছাত্রীবান্ধব, বিরোধী না। এজন্য আমরা শিক্ষার্থীদের কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবি মেনে নিয়েছি। এখানে আর কোনো আন্দোলনের যুক্তি নেই, কোনো সুযোগ নেই। আমরা আজ আন্দোলনকারীদের কাছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানব। তারা যদি বোঝেন তাহলে ভালো। না বুঝলে এটা আমাদের প্রতি অন্যায় করা হবে এবং বেআইনি কাজ করা হবে। আমরা অনেক সহ্য করেছি, এখনও করে যাবো, কারণ তারা আমাদের ছেলে-মেয়ে। আমরা চাই না আমাদের ছেলে-মেয়েদের কারো কোনো ক্ষতি হোক।’
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকায় আংশিকভাবে কোনো অনুষদের ক্লাস শুরুর পরিকল্পনা নেই। চলমান সংকট সমাধানের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদের ক্লাস শুরু করা হবে। তবে চলমান আন্দোলনে সমাধানের আশ্বাস পাওয়ায় একাডেমিক কার্যক্রম চালুর বিষয়ে প্রশাসন ইতিবাচক।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া, ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক, সহকারী ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ, অনুষদীয় ডিন এবং কৃষি অনুষদ, কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ, মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ, কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদ এবং ইন্টারডিসিপ্লিনারি ইনস্টিটিউট ফর ফুড সিকিউরিটির শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা।