লাখ টাকার অ্যাপ

প্রযুক্তি সময় ডেস্ক
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
লাখ টাকার অ্যাপ

আমরা জানি স্মার্টফোনে ব্যবহৃত প্রায় সব অ্যাপই ফ্রি। যদিও কিছু বিশেষ অ্যাপ দাম দিয়ে কিনে নিতে হয়। কিন্তু আপনি শুনলে অবাক হবেন, অ্যাপ কিংবা প্লে স্টোরে স্মার্টফোনের চেয়েও দামি কিছু অ্যাপ রয়েছে। এগুলো কিনতে গেলে খরচ করতে হয় লাখ টাকার মতো। চলুন জেনে আসি কোন সে অ্যাপ।

সাইবারটিউনার : এটি একটি পিয়ানো টিউন করার অ্যাপ। ‘সাইবারটিউনারের’ দাম শুনলে অনেকের চোখই কপালে উঠতে পারে। অ্যাপস্টোর থেকে অ্যাপটি কিনতে ব্যয় হয় ৯৯৯ ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ লাখ ২১ হাজার ৫০০ টাকা, যা অনেক নতুন ফ্ল্যাগশিপ ফোনের চেয়েও বেশি। স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২৫, আইফোন ১৬ কিংবা গুগল পিক্সেল ৯ সিরিজ বর্তমানে প্রায় ৭৯৯ ডলারে বাজারে মিলছে। শুধু তাই নয়, অ্যাপটির নিয়মিত আপডেট ও সাপোর্ট চাইলে বছরে আরও ৮৪ দশমিক ৯৯ ডলার খরচ করতে হবে। ফলে মোট খরচ সহজেই ১ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায়।

২৫ বছরের বেশি সময় ধরে বাজারে থাকা সাইবারটিউনার যুক্তরাষ্ট্রের পেটেন্টপ্রাপ্ত প্রযুক্তি ব্যবহার করে, যা পিয়ানো টিউনিং জগতে বড় পরিবর্তন এনেছে। আগে যেখানে পেশাদার টিউনারদের হাজার হাজার ডলারের বিশেষ যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হতো, এখন সে কাজ তারা পকেটে থাকা একটি অ্যাপ দিয়েই আরও ভালোভাবে করতে পারছেন।

শট ট্রেসার ইভেন্ট : গলফকে বরাবরই একটি আভিজাত্যপূর্ণ ও ব্যয়বহুল খেলা হিসেবে দেখা হয়। তাই শট ট্রেসার ইভেন্ট অ্যাপটির দাম ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোনের সমান হওয়ায় আশ্চর্যের কিছু নেই। এই অ্যাপেরও দাম ৯৯৯ ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ লাখ ২১ হাজার ৫০০ টাকা। অ্যাপটিতে ২০২৩ সালের পর থেকে নতুন কোনো আপডেট না এলেও তা এখনও অ্যাপ স্টোরে পাওয়া যাচ্ছে। অনেক গলফার এখনও এটি ব্যবহার করছেন এবং তাদের কাজে অ্যাপটি কার্যকর বলে মনে করছেন। মূলত টুর্নামেন্ট ও বড় ইভেন্টের জন্য তৈরি এ অ্যাপ দিয়ে খেলোয়াড়দের প্রতিটি শট স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিও আকারে ধারণ করা যায়। শুধু তাই নয়, বলের গতিপথ (ফ্লাইট), উচ্চতা ও দূরত্বও নির্ভুলভাবে মাপতে সক্ষম এটি।

ভেরিটিউনার : পিয়ানো টিউনিং জগতের আরেকটি শক্তিশালী অ্যাপ ভেরিটিউনার। যদিও এটি সাইবার টিউনারের তুলনায় কিছুটা সস্তা, তবু কিনতে দাম গুনতে হবে প্রায় ৬০০ ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭৩ হাজার টাকা। এটি মূলত বাড়ি ও স্কুলে কাজ করা পেশাদার পিয়ানো শিল্পীদের জন্য নির্মিত।

ভার্ট টিম সিস্টেম : ভার্ট টিম সিস্টেম হলো একটি আইপ্যাড-ভিত্তিক অ্যাপ, যা ওয়্যারেবল সেন্সরের মাধ্যমে খেলোয়াড়দের দৌড়ঝাঁপের সময় শরীরে পড়া চাপ বা ভার, শক্তি, সহনশীলতা ও চলাফেরার দক্ষতা পর্যবেক্ষণ করে। এটি সাধারণ ফিটনেস ট্র্যাকারের মতো স্টেপ বা ক্যালরি নয়, বরং সম্ভাব্য চোটের ঝুঁকিও দেখায়। কোচ প্র্যাকটিসের সময় দেখতে পারেন কখন খেলোয়াড়ের ‘জাম্প’ সংখ্যা ঝুঁকির সীমায় পৌঁছাচ্ছে। অ্যাপটির দামও ৯৯৯ ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ লাখ ২১ হাজার ৫০০ টাকা।

গুগল ফটোজের যত সুবিধা : গুগল ফটোজ যে শুধু গ্যালারির ছবি দেখা কিংবা ব্যাকআপ সেবায় ব্যবহৃত হয় বিষয়টি এমন নয়। সাধারণ স্টোরেজের বাইরে অ্যাপটিতে রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক স্মার্ট সার্চ, সহজে ব্যবহারযোগ্য এডিটিং টুল ও ঝামেলাহীন শেয়ারিং সুবিধা। নিচে এর কিছু ব্যতিক্রমী সুবিধা আলোচনা করা হলো :

কিউআর কোড দিয়ে দ্রুত অ্যালবাম শেয়ার : নির্দিষ্ট ই-মেইল বা ফোন নম্বর ব্যবহার করে শেয়ার করার বদলে এখন ব্যবহারকারীরা সহজেই কিউআর কোড তৈরি করতে পারেন। এতে বড় কোনো গ্রুপে ছবি ও ভিডিও ভাগাভাগি করে নেওয়া আরও সুবিধাজনক হয়ে উঠেছে। কেবল কোড স্ক্যান করলেই যে কেউ অ্যালবাম দেখতে পাবে। ছবি খুঁজতে স্থানের নাম কিংবা কিওয়ার্ড সার্চ ফোনের সাধারণ গ্যালারি অ্যাপের তুলনায় গুগল ফটোজে ছবি খুঁজে পাওয়া বেশ সহজ। নির্দিষ্ট তারিখ মনে না থাকলেও সার্চ ট্যাবে কেবল স্থান বা কিওয়ার্ড লিখলেই ছবিগুলো সহজে খুঁজে পাওয়া যায়। জায়গার নাম যেমনÑ শ্রীমঙ্গল কিংবা বান্দরবান, অথবা সাধারণ বর্ণনা যেমনÑ সমুদ্রসৈকত, পাহাড় কিংবা জঙ্গল লিখলেই মিলে যাবে ছবি।

মানচিত্রে খুঁজে নিন ভ্রমণের স্মৃতি : গুগল ফটোজে ছবি শুধু তারিখ বা ফোল্ডার অনুযায়ী নয়, মানচিত্রেও খুঁজে পাওয়া যায়। অ্যাপের কালেকশন> প্লেসেস অপশনে গিয়ে ব্যবহারকারীরা ভ্রমণ করা শহরগুলোর তালিকা এবং প্রতিটি শহরে কতগুলো ছবি বা ভিডিও সংরক্ষিত আছে তা দেখতে পারবেন। নির্দিষ্ট শহরে ট্যাপ করলে ভ্রমণের সব স্মৃতি একসঙ্গে দেখা যাবে।

গুগল লেন্স দিয়ে ছবির ভেতরের তথ্য উন্মোচন : ফটোজে থাকা ছবির ভেতর থেকে তথ্য জানার সহজ উপায় হলো গুগল লেন্স। অ্যাপটির সাহায্যে অচেনা স্থাপনার নাম খুঁজে বের করা, পণ্যের তথ্য জানা কিংবা ছবিতে থাকা ঠিকানা বা ই-মেইল কপি করা সম্ভব। ব্যবহারকারীরা কেবল ছবি খুলে নিচে থাকা লেন্স আইকনে ট্যাপ করলেই কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তথ্য পাওয়া যাবে।

ভিডিওতে গান বা ভয়েস যোগ করা : গুগল ফটোজের ভিডিও এডিটরে এখন শুধু ট্রিম বা ক্রপ নয়, কাস্টম মিউজিকও যোগ করা সম্ভব। ব্যবহারকারীরা অ্যাপের ওপরের প্লাস আইকনে ট্যাপ করে ‘হাইলাইট ভিডিও’ নির্বাচন করলে ভিডিওতে গান যুক্ত করার সুযোগ পাবেন। এ ক্ষেত্রে একক ভিডিও বা একাধিক ক্লিপও বেছে নেওয়া যায়। সব শেষে ‘ক্রিয়েট’ অপশন চাপলেই ভিডিও তৈরি হয়ে যাবে।

ফোনের জায়গা খালি করা : ফোনের স্টোরেজ দ্রুত পূর্ণ হয়ে গেলে গুগল ফটোজে মিলতে পারে সহজ সমাধান। অ্যাপের প্রোফাইল আইকনে ট্যাপ করে ‘ফ্রি আপ স্পেস অন দিস ডিভাইস’ নির্বাচন করলে লোকাল স্টোরেজ খালি করা যায়। এ ক্ষেত্রে গুগল ফটোজ দেখাবে কোন ছবি ও ভিডিও ক্লাউডে ব্যাকআপ আছে এবং ফোন থেকে মুছে ফেলা যাবে। প্রয়োজন হলে ব্যবহারকারীরা পরে আবার সেই ছবি ও ভিডিও ডাউনলোড করতে পারবেন।