শেষ হলো ১৮তম ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম সেমিনার

অনলাইন ডেস্ক
২৫ নভেম্বর ২০২৩, ২৩:৩৩
শেয়ার :
শেষ হলো ১৮তম ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম সেমিনার

তিন দিনে ৮টি অধিবেশনে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার থেকে প্রায় ২০০ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিতিতে আজ শনিবার সন্ধ্যায় শেষ হলো ১৮তম ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের তৃতীয় বাংলাদেশ বার্ষিক অধিবেশন। 

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) ও বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের যৌথ উদ্যোগে এতে সহযোগিতা করে ইউএনআইজিএফ, দি এশিয়া ফাউন্ডেশন, ইন্টারনেট সোসাইটি ফাউন্ডেশন ও গুগল।

এরআগে গত ২৩ নভেম্বর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে বিটিআরসি এবং বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরামের যৌথ উদ্যোগে শুরু হওয়া ‘ইন্টারনেট স্মার্ট বাংলাদেশে মানবাধিকারে পরিণত হচ্ছে’ শীর্ষক সেমিনারের উদ্বোধন করা হয়।

বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের সিনিয়র সচিব কে.এম আবদুস সালাম, দৈনিক আমদের সময়ের নির্বাহী সম্পাদক মাঈনুল আলম।

বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের (বিআইজিএফ) মহাসচিব মোহাম্মদ আব্দুল হক অনু স্বাগত বক্তব্য দেন এবং ভিউজ বাংলাদেশের সম্পাদক রাশেদ মেহেদী, অতিথি বক্তা ছিলেন ড. কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ, কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ, এশিয়া ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জুলফিকার (অব.), সেক্রেটারি জেনারেল, অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ (এমটব)।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, ‘বাংলাদেশ পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের গ্রামীণ মানুষ মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করে এমনকি তাদের মধ্যে অনেকেই পিছিয়ে। ২০৪১ সালে বাংলাদেশের নেতৃত্বে শিশুরা হবে যাদের বয়স এখন ১০, আমাদের উচিত তাদের ইন্টারনেট এবং সমস্ত ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া কারণ উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সবকিছুই হবে ইন্টারনেট ভিত্তিক। তারাই নেতৃত্ব দেবে স্মার্ট বাংলাদেশকে।’

স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য শুধু প্রতিষ্ঠান, মিডিয়া বা করপোরেট বিশ্ব নয়, সব মানুষকে ইন্টারনেটের আওতায় আনা উচিত উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রগতির কৃতিত্ব বিটিআরসিকে দিতে হবে। গোটা দেশ এবং আরও কিছু সীমাবদ্ধতা কাভার করার মতো পর্যাপ্ত জনবল তাদের নেই।’

দৈনিক আমদের সময়ের নির্বাহী সম্পাদক মাঈনুল আলম বলেন, ‘ইন্টারনেট ছাড়া আমরা তথ্য তৈরি করার মতো অবস্থায় নেই। সমস্ত সংবাদ মাধ্যম, প্রিন্ট বা ইলেকট্রনিক ইন্টারনেটের উপর নির্ভরশীল। কখনও কখনও ভুল তথ্য এবং ভুল তথ্য আমাদের বিভ্রান্ত করে। তাই সাইবার নিরাপত্তা ও নিয়ন্ত্রণ থাকা জরুরি। ভুল তথ্য থেকে সুরক্ষা ও প্রতিরোধে মিডিয়ার ভূমিকা রয়েছে। বিধি-বিধান প্রণয়নের দায়িত্ব সরকারের। তবে সেগুলো বাস্তবায়নের দায়িত্ব সকল স্টেকহোল্ডারের।’

জাতীয় সংসদের সিনিয়র সচিব কে.এম আবদুস সালাম বলেন, ‘২০০৯ সালে বর্তমান সরকার কর্তৃক গৃহীত ডিজিটাল বাংলাদেশের যে যাত্রা শুরু হয়, তার সুফল দেশের সকল মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে। গত ১০ বছরে ডিজিটাল খাতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। বর্তমান ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের যে রুপকল্প গ্রহণ করা হয়েছে তা যথাসময়ে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।’

বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম ২০০৬ থেকে স্বাধীন ফোরাম হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং প্রথম জাতীয় আইজিএফ উদ্যোগ হিসেবে আবির্ভূত হয় যা জাতিসংঘের ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের সঙ্গে কাজ করছে। জাতিসংঘের ইন্টারনেট গভর্নেন্স বিষয়ক কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরাম প্রতিষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম একটি মাল্টি-স্টেকহোল্ডার প্ল্যাটফর্ম যা ইন্টারনেটের উন্নয়নে জন্য সরকারের সঙ্গে অধিপরামর্শ ছাড়াও বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে। বার্ষিক সভাগুলোতে কিভাবে বিভিন্ন তথ্য বিনিময় করা যায় এবং ভালো অনুশীলনগুলো নিয়ে কিভাবে সবাইকে জানানো যায় সে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়।