সময় এসেছে সব প্রশ্ন তোলার: ফারুকী
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ও স্বাধীন বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর প্রথম সেনাপ্রধান জেনারেল এম এ জি ওসমানীর জন্মবার্ষিকী আজ। বিশেষ এদিনে তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করলেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। কথায় কথায় স্বাধীনতার ঘোষক ও রণাঙ্গনের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নামটিও উঠে এসেছে তার লেখায়।
সংস্কৃতি উপদেষ্টার মতে, রণাঙ্গনে যারা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন, যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন- তাদেরকে ইতিহাসের পাতা থেকে দূরে রাখা হয়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে সামাজিকমাধ্যমের এক পোস্টে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘আজকে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম এ জি ওসমানীর জন্মদিন। ওসমানী বা জিয়াউর রহমানকে আমাদের ইন্টেলিজেন্সিয়া (বুদ্ধিবৃত্তিক শ্রেণি) সেলিব্রেট (উদযাপন) করে না। একই ইন্টেলিজেন্সিয়া যারা অ্যাপারেন্টলি (দৃশ্যত) মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে, কিন্তু মাঠে যুদ্ধ করলেন যারা, যুদ্ধের ঘোষণা দিলেন যারা- তাদেরকে আমাদের ইতিহাসের পাতা থেকে যতটা সম্ভব দূরে অথবা কম আলোকিত করে রাখা হয়েছে। আমাদের ইতিহাসের ওই ক্রিটিক্যাল (সমালোচনামূলক) প্রশ্নগুলো তুলে ধরা হয়নি যে, যুদ্ধ চলাকালীন ওসমানীর বক্তব্য কী ছিল, উনার কি কোনো বিষয়ে ভিন্নমত ছিল, ১৬ ডিসেম্বর উনি কেন হাজির ছিলেন না, মুক্তিবাহিনী অথবা মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ না করে কেন ভারতীয় বাহিনীর কাছে (পাকিস্তানিদের) আত্মসমর্পণ করানো হলো? সময় এসেছে এ রকম সব প্রশ্ন তোলার।’
যোগ করে ফারুকী আরও বলেন, ‘শুধু প্রশ্নই না, এই বিষয়ে ইতিহাসের সত্যগুলোও নির্মোহভাবে তুলে ধরার। সময় এসেছে পাকিস্তানিদের অত্যাচারের পাশাপাশি ৪৭ পূর্ববর্তী সময়ে ইতিহাসের বিভিন্ন বাঁকে বাংলাদেশের মানুষ যেসব অন্যায়-অত্যাচারের মধ্যদিয়ে গেছেন- সেসব নির্মোহভাবে তুলে ধরার।’
আগামী নির্বাচনে যারা সরকার গঠন করবে, তাদের প্রতি বিশ্বাস রেখে ফারুকী বলেন, ‘আমরা এই কাজটা শুরু করে যাব। আমার বিশ্বাস পরবর্তী সরকার এসে কাজটা এগিয়ে নিয়ে যাবে। কারণ একটা জাতিকে শোষণ করার প্রথম ধাপ তার ইতিহাস-সংস্কৃতি নাই করে দেওয়া। অথবা শোষকের সুবিধামাফিক ইতিহাস তৈরি করে দেওয়া।’
সবশেষে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন উনার (জেনারেল ওসমানী) কিছু ফুটেজ আমার চোখে লেগে আছে। তবে একটা শট আমার চোখে আজীবন লেগে থাকবে। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর উনার কবরে দাঁড়িয়ে তার স্যালুট। আ রেয়ার মোমেন্ট অব লাভ অ্যান্ড রেসপেক্ট ফ্রম দ্য জেনারেল টু দ্য কমান্ডার (কমান্ডারের প্রতি জেনারেলের ভালোবাসা-শ্রদ্ধার বিরল এক মুহূর্ত)।’
উল্লেখ্য, ১৯১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর সিলেটের সুনামগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন জেনারেল এম এ জি ওসমানী। ১৯৩৯ সালে ব্রিটিশদের রয়্যাল আর্মড ফোর্সে ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেন তিনি। ভারত বিভাজনের পর ১৯৬৭ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তাকে মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৮৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
আরও পড়ুন:
সাকিবকে নিয়ে যা বললেন ওবায়দুল কাদের