চেম্বার ফি কমানোর দাবিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আইবিডব্লিউএফ’র স্মারকলিপি
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেশের সকল চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ভর্তি ফি ও নবায়ন ফি অস্বাভাবিক বৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং তা কমানোর দাবীতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দেশের অন্যতম বৃহত্তম ব্যবসায়ী সংগঠন ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্টস এন্ড বিজনেসমেন ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন (আইবিডব্লিউএফ)-এর উদ্যোগে উক্ত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত অন্যান্য সদস্যগণ হলেন- সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সাবেক পরিচালক জনাব আলীমুল এহছান চৌধুরী, ডিসিসিআইয়ের সাবেক সহ-সভাপতি জনাব এম আবু হুরায়রাহ্, ওইডঋ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ এর সভাপতি জনাব মোঃ আমিনুর রহমান, এমসি সদস্য জনাব একেএম রফিকুন্নবী, চট্টগ্রাম মহানগরী ওইডঋ এর সহসভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জনাব হুমায়ুন কবীর পাটোয়ারী ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারী জনাব সাব্বির আহমেদ।
স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন, ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্টস এন্ড বিজনেসমেন ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন (ওইডঋ) গভীর উদ্বেগ সাথে লক্ষ্য করছে যে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাণিজ্যক সংগঠন আইন ২০২২ এর আলোকে প্রণীত বাণিজ্য সংগঠন বিধি ২০২৫ এর ধারা ১৪ উপধারা ৩ এ বর্ণিত বাণিজ্য সংগঠনের সদস্যদের ভর্তি ফি ১৫,০০০/- (পনের হাজার) টাকা এবং বার্ষিক চাঁদার হার ৫০০০/- (পাঁচ হাজার) টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের যথার্থতা আমাদের বোধগম্য নয়।
নিম্নোক্ত কারণে এই বিধিটি প্রযোজ্য নয় বলে প্রতিয়মান হয়:
১. বাণিজ্য সংগঠন আইন অনুযায়ী নিবন্ধিত অ্যাসোসিয়েশন গুলি তাদের নিজস্ব ফোরামে সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ভর্তি ফি এবং বার্ষিক চাঁদা নির্ধারণ করে থাকে।
২. জেলা চেম্বার গুলির সদস্য হয় সাধারণত নতুন উদ্যোক্তা এবং এসএমই উদ্যোক্তা, যাদের ম‚লধনের পরিমাণ থাকে খুবই কম। ব্যবসার প্রয়োজনে চেম্বারের সদস্য ছাড়া তাদের সমগোত্রীয় এসোসিয়েশন গুলির সদস্য হওয়ার সক্ষমতা তাদের থাকে না। নতুন উদ্যোক্তা এবং এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য সদস্য ভর্তি ফি ১৫,০০০/- (পনের হাজার) টাকা এবং বার্ষিক চাঁদা ৫০০০/- (পাঁচ হাজার) টাকা পরিমাণ হিসেবে অনেক বেশি। এত বেশি ভর্তি ফি এবং বার্ষিক চাঁদা দিয়ে নতুন উদ্যোক্তা এবং এসএমএস উদ্যোক্তাদের জন্য চেম্বারের সদস্য হওয়ার পথ রুদ্ধ হলে তাদের ব্যবসার পথটিও কঠিন হয়ে যাবে। জেলা চেম্বার এর জন্য উক্ত বিধিটি পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন।
৩. বাণিজ্য মন্ত্রণালয় হতে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে সকল নতুন অর্ডিনারি সদস্যের ভর্তি ফি ১৬০০/- (এক হাজার ছয় শত) টাকার তদস্থলে বর্তমানে করা হয়েছে ১৫০০০/- (পনের হাজার) টাকা এবং সকল সদস্যের নবায়ন ফি ৮০০/- (আট শত) টাকা তদস্থলে বর্তমানে করা হয়েছে ৫০০০/- (পাঁচ হাজার) টাকা। এই ধরনের ফি বৃদ্ধির ঘটনা নজীরবিহীন। এই বৃদ্ধি শতভাগ বা দুইশত ভাগ নয় বরং হাজার ভাগেরও বেশী।
এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজসহ বাংলাদেশের প্রায় সকল ট্রেড বডি গুলো দীর্ঘদিন থেকে সাধারণ ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষার পরিবর্তে কয়েকজন ব্যক্তি ও কয়েকটি পরিবারের স্বার্থে চেম্বারগুলোকে কুক্ষিগত করে দূর্ণীতিবাজ ও দেশের স্বার্থ-বিরোধী ব্যক্তিদের ক্লাবে পরিণত হয়েছিল।
নেতৃবৃন্দ ফি বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনা করে বাণিজ্য সংগঠন আইন ২০২২ এর আলোকে প্রণীত বিধি ২০২৫ এর ধারা ১৪ উপর ধারা ৩ এর বর্ণিত সদস্যদের ভর্তি ফি এবং বার্ষিক চাঁদা সর্বোচ্চ ২০% বৃদ্ধি করা যেতে পারে বলে মতামত প্রদান করেন।