ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলার আবেদন খারিজ
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশরাফুজ্জামান আশাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সহকর্মীর স্ত্রীকে ধর্ষণের মামলার আবেদন খারিজ করেছেন আদালত। গত সোমবার ঢাকার সাত নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ মামলার আবেদন করেন ভুক্তভোগী।
বিচারক সাবেরা সুলতানা খানম বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করে আদেশ অপেক্ষমাণ রাখেন। পরে মামলাটি খারিজের আদেশ দিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানা গেছে।
খারিজের আদেশে বিচারক উল্লেখ করেন, বাদী ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় একটি নিরাপদ জায়গায় বসবাস করেন, যেখানে জোরপূর্বক ধর্ষণের বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য নয়। আরজিতে জোরপূর্বক ধর্ষণের কথা বলা হলেও তিনি কোনো চিৎকার করেননি বা আত্মীয়-স্বজন বা আশেপাশের কাউকে কিছু জানাননি। মামলার বাদী জবানবন্দিতে বলেছেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি তাকে বিয়ে করেছেন এবং তারপর তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক হয়। প্রথম স্বামীকে তালাক দেওয়ার একদিন পর বিয়ে করার বিষয়টি আইনি বৈধতা না থাকলেও স্বামী-স্ত্রী হিসেবে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়, যা ধর্ষণের পর্যায়ে পড়ে না।
বিচারক বলেছেন, শারীরিক সম্পর্কের কারণে বাদী গর্ভবতী হয়েছেন এবং উভয়ের সম্মতিতে শারীরিক সম্পর্ক হওয়ার বিষয়টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারার (ধর্ষণ) অপরাধ নয়। ধর্ষণ প্রমাণে বাদী কোনো চিকিৎসা সনদপত্র দাখিল করেননি। ধর্ষণ ছাড়া বাদী গর্ভবতী হওয়া বা তাকে মারধর করার ঘটনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচার্য বিষয় নয়। এসব কারণে সরাসরি মামলাটি খারিজ করা হলো।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
মামলার আবেদনে অপর দুই আসামি ছিলেন আশরাফুজ্জামান আশার স্ত্রী ফারহানা আশরাফ সুমি ও সুমির বোন নাসিমা পারভীন পলি।
মমালার অভিযোগে বলা হয়, ভুক্তভোগীর স্বামী কোর্ট মার্শালের মাধ্যমে জেলে যাওয়ার পর তিনি ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় বসবাস করতে থাকেন। এ সময় বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আশরাফুজ্জামান আশা দায়িত্বে থাকাকালীন তিনি ভুক্তভোগীকে আশ্বস্ত করেন যে, তিনি (ভুক্তভোগী) নিরাপদে থাকতে পারবেন। তবে গত ৭ জুন রাত আনুমানিক ৮টায় আশরাফুজ্জামান ওই নারীর বাসায় গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনা ভুক্তভোগীর মেয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন।
এরপর গত ১০ জুন ভুক্তভোগীকে কাজী অফিসে নিয়ে গিয়ে স্বামীকে ডিভোর্স দিতে বাধ্য করেন এবং পরদিন গত ১১ জুন ভয়ভীতি দেখিয়ে ১০ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে তাকে বিয়ে করেন। এর কিছুদিন পর ভুক্তভোগী প্রেগন্যান্সি কিট ব্যবহার করে জানতে পারেন তিনি গর্ভবতী এবং বিষয়টি আসামি আশাকে জানান। এরপরে গত ৬ জুলাই আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তাকে গর্ভপাত ঘটানোর চেষ্টা করে এবং শারীরিক নির্যাতন চালায়। এরপর গত ২৪ জুলাই সিএমএইচ-এ ডাক্তার ভুক্তভোগীর ৬ সপ্তাহের গর্ভাবস্থা নিশ্চিত করেন। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কারণে পরদিন গত ২৫ জুলাই তার গর্ভপাত ঘটে।
আরও পড়ুন:
মৌচাকের গোল্ডেন প্লাজায় অগ্নিকাণ্ড
এরপর গত ১০ আগস্ট আসামি আশরাফ ভুক্তভোগীর বাসায় গিয়ে তাকে ও তার মেয়েকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন এবং বাসা ছাড়তে হুমকি দেন।