ত্বকের অবহেলিত অংশের যত্ন
সুন্দর মানে শুধু সুন্দর মুখ নয়। সর্বাঙ্গীন সুন্দর মানে মাথা থেকে পা পর্যন্ত সুন্দর। আর সুন্দর থাকার জন্য ত্বকের পরিচর্যা অত্যন্ত জরুরি। বেশিরভাগ মানুষ ত্বকের যত্ন বলতে শুধু মুখের ত্বককেই গুরুত্ব দেন। আবার অনেকে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও ক্লান্তি এবং সময়ের অভাবে ত্বকের সব অংশের পরিচর্যা করতে পারেন না। কিন্তু সুন্দর এবং ফ্রেশ থাকতে শুধু হাত, মুখ আর চুলের পরিচর্যা করলেই চলবে না। যত্ন নিতে হবে ত্বকের অবহেলিত অংশেরও।
কীভাবে? পরামর্শ দিয়েছেন রূপ বিশেষজ্ঞ শারমিন কচি। চলুন জেনে নিই-
যত্ন নিন হাতের কনুইয়ের
হাতের কনুইয়ের ত্বক হাতের অন্যান্য অংশের ত্বকের তুলনায় মোটা ও কুচকানো হয়। এই অংশে সাধারণত ‘অয়েল গস্ন্যান্ড’-এর সংখ্যা কম হওয়ায় কনুইয়ের ত্বক তাড়াতাড়ি রুক্ষ হয়ে পড়ে। তাই কনুইয়ের ত্বক সুন্দর এবং সুস্থ রাখতে প্রতিদিন নিয়ম করে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। মধুর সঙ্গে মোটা দানার চিনি ও কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে হাতে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করলে কনুইয়ের মৃত চামড়া উঠে আসবে।
সপ্তাহে অন্তত এক দিন প্যাকটি ব্যবহার করুন। কনুইয়ের কালো দাগ দূর করতে লেবু বেশ উপকারী। এক টুকরো লেবুর ওপর আধা চামচ লবণ ও চিনি লাগিয়ে কনুইয়ে ভালোমতো ঘষুন। এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে কনুইয়ের কালো দাগ দূর হওয়ার পাশাপাশি কনুইয়ের ত্বক উজ্জ্বল হবে। হাত ধোয়ার পর নিয়মিত অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করুন।
আরও পড়ুন:
শীতে গর্ভবতী মায়েদের যত্ন
আন্ডারআর্মের যত্ন
আন্ডারআর্ম অপরিষ্কার থাকলে সেটা শুধু অসুন্দরই নয়, অস্বস্তির কারণও। আন্ডারআর্মের ত্বক অনেক বেশি পাতলা। তাই ব্লিচ না করানোই ভালো। ব্লিচ করলে কিছুদিন পর আবার কালো হয়ে যেতে পারে। আবার শেভিংয়ের চেয়ে ওয়াক্সিং ভালো। অনেক সময় ডিওড্রেন্ট থেকে আন্ডারআর্ম কালো হয়ে যায়। তাই পারফিউম বা স্প্রে ব্যবহার করুন। আন্ডারআর্মের কালো দাগ দূর করতে মোটা দানার চিনির সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে আন্ডারআর্মে ঘষে নিন।
যত্ন নিন ঘাড় ও পিঠের
আরও পড়ুন:
জরায়ুমুখ ক্যানসারের লক্ষণগুলো জেনে রাখুন
ঘাড়ের ত্বকও নরম। তাই শরীরের অন্য অংশের থেকে ঘাড়ে একটু বেশি যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। সপ্তাহে এক দিন ঘাড়ে ও পিঠে হারবাল স্ক্রাবার ব্যবহার করুন। এতে ত্বক মসৃণ হবে। ঘাড়ের অংশের ত্বকে বয়সের ছাপ এবং কালো দাগ পড়ে সহজেই। নিয়মিত ভুট্টা, সূর্যমুখীর তেল, বাদাম তেল, বাদাম খেতে চেষ্টা করুন।
পিঠে অনেকেরই অ্যাকনে হয়। পিঠ দেখা যায় বলে আমরা সেভাবে যত্ন নিই না। পিঠে অ্যাকনে হলে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল সোপ দিয়ে গোসল করুন। ব্রণের সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি মিলবে। গোসলের পর ময়েশ্চারাইজার লাগান। পিঠে নিয়মিত লোশন ব্যবহার করুন, এতে ত্বকের শুষ্ক ভাব কম থাকবে। কড়া রোদে পিঠঢাকা জামা পরার চেষ্টা করুন। পিঠে কালো দাগ হবে না।
হাঁটুরও যত্ন চাই
আরও পড়ুন:
শীতে মুলা কেন খাবেন?
শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় হাঁটু অনেক বেশি শুষ্ক, খসখসে ও কালো হয়ে যায়। হাঁটুর কালো দাগ দূর করে হাঁটুকে উজ্জ্বল ও মসৃণ করতে নিয়মিত স্ক্রাব করুন। এক টুকরো লেবুর ওপর আধা চামচ লবণ ও চিনি লাগিয়ে হাঁটুতে ঘষলে কালো দাগ দূর হবে। নিয়মিত হাঁটুতে অলিভ অয়েল ও আমন্ড অয়েল ম্যাসাজ করুন। সেই সঙ্গে ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ খাবার খেতে চেষ্টা করুন।
পায়ের গোড়ালির যত্ন
যত সুন্দর পোশাক ও জুতাই পরুন না কেন, পায়ের গোড়ালি ফাটা অপরিষ্কার হলে সব সৌন্দর্যই মাটি হয়ে যাবে। ধুলো-বালি ও কাদা মাটি লেগে পায়ের গোড়ালি নোংরা হয় বেশি। আর যত্ন না নিলে ফেটে যায় এবং অন্যান্য সমস্যাও হয়। প্রতিদিন বাইরে থেকে ফিরে হালকা গরম পানিতে সামান্য লবণ ও শ্যাম্পু মিশিয়ে পা ডুবিয়ে রাখুন। ১৫-২০ মিনিট পর পা তুলে গোড়ালিতে স্ক্রাব লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন। এরপর ঝামা দিয়ে আরেকটু ঘষে নিন। এবার পা ধুয়ে আলতো করে মুছে গোলাপজল মেশানো গ্লিসারিন লাগিয়ে নিন। রাতে শোয়ার আগে দুই পায়ের গোড়ালিতে গ্লিসারিন লাগাতে ভুলবেন না।