গুম-খুন করে ফ্যাসিস্ট সরকার গদি টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিল: জোনায়েদ সাকি
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘বিগত ১৫ বছরে ধরে দিনের পর দিন সত্য কথা বলার জন্য নিজের পছন্দের রাজনৈতিক অধিকারের জন্য, পছন্দের দল করার জন্য, কিভাবে একটি সরকার পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রীয় বাহিনী দিয়ে গুম, খুন, ত্রাস, ভয় সৃষ্টি করে, হত্যা করে গদি টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিল।’
আজ শনিবার বিকেল ৫টায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার গোলাম মোস্তফা (জিএম) পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে আগামী জাতীয় নির্বাচন হতে হবে সংবিধান সংস্কার পরিষদের নির্বাচন, গণসংলাপ ও পদযাত্রা অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, 'পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি এখনো বাংলাদেশে তাদের পেশি দেখায়। পুলিশ ভূমিকা পালন করতে পারে না। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জনগণের নিরাপত্তা দিতে পারছে না।'
সাকি আরও বলেন, 'আমরা সেদিন সবাই রাজ পথে ছিলাম কিন্তু সেদিন যে তরুণ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান আমাদের সবাইকে সাহসী করে তুলেছিল। গুলি কিংবা হত্যা কোনটাই ছাত্র-জনতাকে দমাতে পারেনি। তাই ওই জগদ্দল পাথর যিনি প্রায় ৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতা নিশ্চিত করে বসেছিলেন এবং বলেছিলেন শেখ হাসিনা পালায়না। তাকে আপনারা ছাত্র-জনতা লড়াই করে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছেন। এই যে বিরাট অর্জন। সেই অর্জন, বা লড়াই কী আবার বেহাত হবে? আমাদের লড়াই কী বেহাত হবে? আমাদের লড়াই যদি আমরা না বেহত হতে না দিতে চাই তাহলে আমাদের এই তরুণদের ভূমিকার আবারও প্রয়োজন আছে, থাকবেই।'
গণসংহতি আন্দোলনের নেতা বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে শুরু থেকে বলে আসছিলাম যে, জনগণের শক্তির ওপর ভর করে আপনারা ক্ষমতায় এসেছেন, তাই জনগণকে আপনাদের ঐক্যবদ্ধ রাখতে হবে। কিন্তু এই রাষ্ট্রের মধ্যে নানা ধর্মের দোসররা এখনও টিকে আছে। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকেও ঢিলেঢালা অবস্থা তৈরি করে দিয়েছে।’
সাকি আরও বলেন, ‘দেশে মব সন্ত্রাস চলে, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জায়গা থাকছে না। মব সৃষ্টি করে ঘটানো ঘটনাবলিকে একে একে পুঁজি করতে করতে এখন খুনিরাও তাদের মাথা উঁচু করতে শুরু করেছে। তবে খুনিদের মাথা উঁচু করতে দেওয়া যাবে না।’
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রত্যেকটা খুনের বিচার হতে হবে। জুলাই আন্দোলনে শহীদদের পরিবার বারবার হত্যার বিচার চাইছে। কিন্তু কোনো বিচার হচ্ছে না। এর দায় কে নেবে।
সাকি আরও বলেন, ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে যদি জনগণ ঘরে ফিরে যায়, তবে আবু সাঈদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।'
গণসংহতি আন্দোলনের ফুলবাড়ীর আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান বাবুর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আব্দুল মোত্তালিব পাপ্পু’র সঞ্চলনায় বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন একসাথে চলতে হবে, বৈষম্যহীন ও অন্তর্ভুক্তিমুলক বাংলাদেশ, অধিকার ও মর্যাদার বাংলাদেশ, জনগণের বাংলাদেশ এই স্লোগানকে ধারণ করে আয়োজিত গণসংলাপ ও পদযাত্রা কর্মসূচিতে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, দিনাজপুর জেলা কমিটির সংগঠক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল, দিনাজপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সুলতান মাহমুদ শিশির, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের ফুলবাড়ী উপজেলা শাখার সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক সাকিরুল ইসলাম শাকি, যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ হৃদয় হাসান স্বাধীন প্রমুখ।
গণসংলাপ ও পদযাত্রায় কৃষক, শ্রমিক, ক্ষেতমজুর, আদিবাসী নারী-পুরুষসহ সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। গণসংলাপ ও পদযাত্রা শেষে সন্ধ্যায় স্থানীয় নিমতলা মোড়ে পথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন:
সাকিবকে নিয়ে যা বললেন ওবায়দুল কাদের