শহিদ ছেলের শোকে বাবার মৃত্যু, ক্যানসার আক্রান্ত ছেলেকে নিয়ে মায়ের নিঃসঙ্গ লড়াই
ঢাকায় বসবাসকারী কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার পুমদী ইউনিয়নের বর্শিকুড়া গ্রামের জাহিদুল ইসলাম সোহরাব ও ফাতেমা-তুজ-জোহরা দম্পতির পরিবারে নেমে এসেছে একের পর এক দুর্ভাগ্যের ছায়া। ছাত্র আন্দোলনে বড় ছেলের মৃত্যু, সেই শোকে বাবার মৃত্যু এবং ছোট ছেলে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে তারা আজ এক করুণ বাস্তবতার মুখোমুখি।
গত বছরের ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলে সবার সঙ্গে বিজয় মিছিলে অংশগ্রহণ করেছিলেন জাহিদুল ইসলামের বড় ছেলে আব্দুল্লাহ বিন জাহিদ। মাকে না বলেই সেদিন বাড়ি থেকে বিজয় মিশিলে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ একটি মৃত্যু সংবাদই যেন সুখী পরিবারটিকে স্তব্দ করে দেয়।
জানা যায়, ঢাকার উত্তরায় বিজয় মিছিলে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন আব্দুল্লাহ বিন জাহিদ। পরে স্থানীয়রা নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হঠাৎ বড় ছেলের মৃত্যুর সংবাদে তাদের পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। গত বছরের ৬ আগষ্ট সন্ধ্যায় গ্রামের বাড়ি হোসেনপুর উপজেলার বর্শিকুড়ায় বড় ছেলের মরদেহ দাফন করা হয়। এভাবে সময় যেতে না যেতেই শোকে আচ্ছন্ন ওই পরিবারে নেমে আসে আরেক কালো ছায়া। সম্প্রতি খবর আসে তাদের ছোট ছেলে ক্যানসারে আক্রান্ত। ছোট ছেলে মাহমুদুল্লাহ বিন জাহিদ সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে তার চিকিৎসা চলছে ঢাকার একটি হাসপাতালে।
আরও পড়ুন:
ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু
একদিকে বড় ছেলের অকাল মৃত্যু, অপরদিকে ছোট ছেলের ক্যানসার। এসব হয়তো মেনে নিতে পারেননি বাবা জাহিদুল ইসলাম সোহরাব।ছেলের শোকে গত ১৮ মার্চ স্ট্রোক করে মারা যান তিনি। এরপর ছোট ছেলকে নিয়ে শুরু হয় মা ফাতেমা-তুজ- জোহরার সংগ্রামী জীবন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে কথা হয় শহিদ আব্দুল্লাহ বিন জাহিদের মা ফাতেমা-তুজ -জোহরার সঙ্গে। তিন কেঁদে কেঁদে বলেন, আমার ছেলে এবার ইন্টার ফাইনাল পরীক্ষা দিত। আমাকে না জানিয়েই সে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করত। আমার ছেলের জন্য ও আমাদের জন্য সবাই দোয়া করবেন।’