রোদ-বৃষ্টিতে চুলের যত্ন
রোদে বের হলে গরম-ঘাম অথবা বৃষ্টিতে চুলের অবস্থা বেশ খারাপ? মাথার ত্বকে ঘাম, ধুলো ময়লা জমে হতে পারে ইনফেকশন। এ ছাড়া বর্ষার এ সময়ে মাথায় খুশকির সমস্যা হয় সবচেয়ে বেশি। আর এসব সমস্যা হলে বেড়ে যায় চুল পড়া। এসব সমস্যা থেকে রেহাই পেতে ঘরে নিজেই করতে পারেন চুলের পরিচর্যা। পরামর্শ দিয়েছেন রূপ বিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন।
এই বিশেষজ্ঞ বলেন, প্রথমেই মনে রাখতে হবে, ভেজা চুল কোনো অবস্থাতেই বেঁধে রাখা যাবে না। গোসল করে ভেজা চুল নিয়ে বাসা থেকে বের হবেন না। একটু সময় করে নিয়ে ফ্যানের বাতাসে অথবা হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকিয়ে বের হবেন। বৃষ্টিতে অথবা ঘামেও চুলের গোড়া ভিজে থাকে। তেমন হলে চুল খুলে ফ্যানের বাতাসে শুকিয়ে নিতে হবে।
আফরোজা পারভীন বলেন, এ সময়ে প্রতিদিন চুল শ্যাম্পু করতে হবে। কারণ এই স্যাঁতসেতে দিনে চুলের গোড়ায় সহজেই ময়লা জমে থাকে। সেই ময়লা থেকেই শুরু হয় নানা রকম সমস্যা। তাই প্রতিদিনই চুল পরিস্কার করা দরকার। সেক্ষেত্রে মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। এতে চুলের অতিরিক্ত তৈলাক্তভাব কমলেও চুল শুষ্ক হয়ে পড়বে না। চুল এবং স্খ্যাল্প পরিস্কারও থাকবে।
তবে সেই সঙ্গে সপ্তাহে অন্তত দুদিন কিছু ময়েশ্চারাইজিং হেয়ার প্যাক ব্যবহার করতে হবে। এগুলো নিয়মিত ব্যবহার করলে চুল ঝরঝরে, সুন্দর ও সমস্যাহীন হবে বলে জানান তিনি।
চলুন জেনে নেই সব ধরনের চুলের জন্য উপকারী কিছু প্যাক সম্পর্কে-
আরও পড়ুন:
শীতে গর্ভবতী মায়েদের যত্ন
* প্রথমে একটা ডিম ভেঙে নিন। এবার এর সঙ্গে এক টুকরো লেবুর রস, এক টেবিল চামচ ক্যাস্টর অয়েল, এক চা চামচ অ্যালোভেরা জেল ভালো করে মিশিয়ে পুরো চুলে লাগান। ঘণ্টাখানেক পর শ্যাম্পু করে নিন। এতে খুশকি কমবে, চুল পড়া রোধ হবে এবং চুল হবে ঝরঝরে।
* চুলে যারা হেনা পাউডার বা মেহেদি ব্যবহার করেন তারা মেহেদি গোলাবেন চায়ের লিকার ঠান্ড্ করে। অথবা একটা ডিমও ভেঙে দিতে পারেন। কারণ মেহেদি চুল রুক্ষ করে। কিন্তু মেহেদির সঙ্গে চায়ের লিকার ও ডিম মেশালে চুল রুক্ষ হবে না। সঙ্গে পেঁয়াজের রসও মেশাতে পারেন। তাহলে খুশকি কমবে। চুল পড়াও কমবে।
* মেথি চুলের জন্য খুব উপকারী। দুই টেবিল চামচ মেথি সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে বেøন্ড করে বা বেটে তার সঙ্গে অলিভ অয়েল, মধু মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে রাখুন ঘন্টাখানেক। তারপর শ্যাম্পু করুন। এত চুলের রুক্ষতা কমে যাবে। চুল হবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।
* অ্যালোভেরা চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। অ্যালোভেরা জেল না থাকলে অ্যালোভেরার ডাল কিনতে পাওয়া যায়। সেটা কিনে এনে কেটে টুকরো করে ভেতরের জেল বের করে পুরো চুলে রাগিয়ে রাখুন। এক ঘন্টা পর ধুয়ে ফেলুন।
* পেঁয়াজের রস চুল পড়া কমায়। আধা কাপ পেঁয়াজের রসের সঙ্গে এক টুকরো লেবুর রস মিশিয়ে চুলের গোড়ায় তুলোর সাহায্যে লাগান। কিছুক্ষণ রেখে শ্যাম্পু করে নিন। এটা সপ্তাহে দুইদিন করতে হবে। মাস দুয়েক নিয়মিত করলে দেখবেন চুলে খুশকি নাই। চুল পড়াও থেমে গেছে।
আরও পড়ুন:
জরায়ুমুখ ক্যানসারের লক্ষণগুলো জেনে রাখুন
আরও কিছু টিপস-
* চেষ্টা করবেন সপ্তাহে একদিন অন্তত চুলে তেল দিতে।
* শ্যাম্পু ব্যবহারে সতর্ক হোন। হালকা শ্যাম্পু ব্যবহার করা ভালো। যে শ্যাম্পু ব্যবহার করলে চুল পড়ে সেটা বদলে ফেলুন।
* কন্ডিশনার ব্যবহার করার সময় খেয়াল রাখুন যেন মাথার স্বকে না লাগে। চুলে লাগিয়ে দশ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
আরও পড়ুন:
শীতে মুলা কেন খাবেন?
* রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মোটা দাঁতের চিরুণি দিয়ে চুল কিছুক্ষণ আঁচড়ান। এতে মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে।
* আলাদা গামছা বা তোয়ালে ব্যবহার করুন।
* সপ্তাহে একদিন নিজের চিরুণি, ব্রাশ, তোয়ালে পরিষ্কার করুন।